বিদ্যুৎকেন্দ্রের শুকনো ছাই জমা করতে ব্যবস্থা
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই ফেলে দেওয়া হয় ছাই-পুকুরে। সেখানে তা জল দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয়, যাতে বাতাসে উড়ে আশপাশের বাসিন্দাদের বিড়ম্বনায় না ফেলে। ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ইট বা ব্লক নির্মাতারা সেই ছাই সংগ্রহ করে শুকিয়ে তার পরে তা ব্যবহার করতে পারেন। এ ভাবে ছাই সংগ্রহের অসুবিধা দূর করতে এনটিপিসি-সেল পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (এনএসপিসিএল) দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টে তাদের ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্টে সরাসরি ইলেকট্রো স্ট্যাটিক প্রসিপিটেটর (ইএসপি) থেকে শুকনো ছাই জমা করার ব্যবস্থা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে। এ জন্য সংস্থা ৬ থেকে ৮ কোটি টাকা লগ্নির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান জেনারেল ম্যানেজার তথা বিজনেস ইউনিটের প্রধান কেআরসি মূর্তি। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে ‘ফ্লাই অ্যাশ’ ইট ও ব্লক নির্মাতাদের সংস্থা।
দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট। —ফাইল চিত্র।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একশো কিলোমিটার পরিধির মধ্যে যে কোনও নির্মাণকাজ সারতে হবে ‘ফ্লাই অ্যাশ ব্রিক’ বা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই থেকে তৈরি ইট দিয়ে। প্রচলিত পদ্ধতিতে ইট তৈরির প্রধান কাঁচামাল হল মাটি। উপরিভাগ থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় উর্বর অংশই চলে যায় ইট তৈরিতে। ফলে বাকি মাটি চাষের অনুপযুক্ত হয়ে যায়। এক দিকে মাটির উর্বরতা বাঁচানো ও অন্য দিকে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইয়ের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা, দু’দিক বজার রাখতেই বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের এমন নির্দেশ। সে কথা মাথায় রেখেই রাজ্যে অন্তত ১৬০টি কারখানা গড়ে উঠেছে। বর্ধমান জেলায় এমন কারখানার সংখ্যা প্রায় ৪০টি। কয়লা বা লিগনাইট ব্যবহার করে এমন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, এর মধ্যে থাকা পোজোলানা নামে এক বিশেষ পদার্থ সাধারণ তাপমাত্রাতেই ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইডের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে জমাট যৌগ তৈরি করে। পোজোলানার এই চরিত্রই ব্যবহার করা হয় ছাইয়ের ইট তৈরিতে। তবে সরকারি নির্দেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় ইট তৈরি করেও যথাযথ বাজারের অভাবে ভুগছেন ব্যবসায়ীরা।
‘ফ্লাই অ্যাশ’ ইট ও ব্লক নির্মাতারা জানান, ছাই-পুকুর থেকে ছাই সংগ্রহ করে আনতে হয়। জল দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তা উড়ে না যেতে পারে। এর ফলে সেই ছাইয়ের চরিত্র যথাযথ থাকে না। তা সংগ্রহ করে শুকিয়ে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলাও দীর্ঘ প্রক্রিয়া। সোমবার সিটি সেন্টারের সৃজনী প্রেক্ষাগৃহে ‘ফ্লাই অ্যাশ’-এর ব্যবহার শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে এনএসপিসিএল। পরে এক প্রশ্নের উত্তরে সংস্থার কর্তারা জানান, তাঁদের সংস্থায় এই সমস্যা দূর করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তাঁরা। সরাসরি ইএসপি থেকে এক জায়গায় শুকনো ছাই জমা হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেখান থেকে সরাসরি ছাই সংগ্রহ করে তা ব্যবহার করা যাবে। ডিএসপি-র ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে দিনে ছ’শো টন এমন ছাই পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে।
‘ফ্লাই অ্যাশ ব্রিকস অ্যান্ড ব্লকস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সন্তোষ তাঁতিয়া জানান, এমন উদ্যোগে তাঁদের সুবিধা হবে। তিনি বলেন, “বাজার না থাকার সমস্যায় ভুগছি আমরা। তবু এনএসপিসিএলের এমন উদ্যোগ অবশ্যই আমাদের জন্য আশার আলো।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.