ঘাটতি হয়েছে উৎপাদনে। শীতের শেষ বেলাতেও তাই কোচবিহারের সব্জির বাজার বেশ চড়া। অন্য বছরের তুলনায় এ বারে অন্তত ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি দরে সব্জি বিকোচ্ছে বলে সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ। জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রের খবর, অন্য বার যেখানে জেলায় সাড়ে ৫ লক্ষ টন শীতের সব্জি উৎপাদন হয়, এ বারে সেখানে চার লক্ষ টন সব্জি উৎপাদন হয়েছে। দফতরের জেলা আধিকারিক খুরশিদ আলম বলেন, “এ বারে এক দিকে যেমন দেরি করে বর্ষা শেষ হয়েছে, তেমনই শীতের সময়ে নিয়মিত তাপমাত্রা ওঠানামা করেছে। এ কারণে ফলন কমেছে।”
শীত সব্জির মধ্যে বেগুন, বাঁধা কপি, ফুল কপি, কাঁচা লঙ্কা, টম্যেটো। জেলার ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতের সব্জি চাষ হয়। অন্য বছর এই সময়ে পাইকারি বাজারে ফুল কপি দেড় থেকে ২ টাকা, বেগুন ২ টাকা, টোম্যাটো ৩ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ৬ থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এ বার পাইকারি বাজারে বেগুন ১৪ টাকা কেজি, বাঁধা কপি ৫ টাকা, ফুল কপি ১৪ টাকা কেজি কাঁচা লঙ্কা ২২ টাকা কেজি, টম্যেটো ৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। খুচরো বাজারে ওই সব্জি কেজি প্রতি আরও চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।
মাতালহাটের বড়ভিটা এলাকার এক কৃষক পুলক সরকার জানান, এক বিঘাতে বেগুন, চার বিঘা জমিতে ফুল কপি ও বাঁধা কপি চাষ করেছেন। এ বার প্রতি বিঘাতে ১৫ থেকে ২০ মন করে আবাদ কম হয়েছে। তিনি বলেন, “পাইকারদের কাছে সব্জি বিক্রি করে কিছু দাম বেশি পাচ্ছি, এটা ঠিক। কিন্তু ফলনে মার খাওয়ায় মোটের উপরে আমাদের খুব একটা লাভের অঙ্ক হাতে থাকছে না।” উদ্যানপালন দফতর সূত্রের খবর, এই জেলায় উৎপাদিত লঙ্কা ও টোম্যাটোর বেশির ভাগ দক্ষিণবঙ্গে জেলাগুলিতে যায়। মুর্শিদাবাদ থেকে বেশ কিছু সব্জি কোচবিহারে আসে। এ বারে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও সব্জি চাষ ভাল না হওয়ায় সে জোগানেও টান পড়েছে। এই প্রসঙ্গে দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী এই দিন বলেছেন, “বেশি দিন সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা কোচবিহারে না থাকায় জেলা জুড়ে এই সমস্যা হচ্ছে। তাই সবাইকে বেশি দাম দিয়ে সব্জি কিনতে হচ্ছে।” |