মারা গেলেন শিলিগুড়ির খেলাধুলার জগতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব মঙ্গল ধাড়া ওরফে অভিমন্যু ধাড়া (৮৫)। রবিবার ভোর সাড়ে ৭ টা নাগাদ প্রধাননগরের এক নার্সিংহোমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ষাটের দশকে শিলিগুড়ির ফুটবল এবং ক্রিকেট জগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। শিলিগুড়ি স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন ও পরবর্তীতে তিনি শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সদস্য ছিলেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
তাঁর মৃত্যুতে এ দিন শোক প্রকাশ করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, শিলিগুড়ির মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, জেলা স্কুল ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মদন ভট্টাচার্য-সহ অনেকে। শিলিগুড়ি ক্রীড়া পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুরের বাসিন্দা হলেও ১৯৪৭ সালে তিনি ব্যবসার কারণে শিলিগুড়ি আসেন। সে সময় শিলিগুড়ির বাসিন্দা সুবোধ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। |
অন্তিমযাত্রায় মঙ্গল ধাড়া। —নিজস্ব চিত্র। |
সুবোধবাবু তাঁর দিদি শোভারানি দেবীর বাড়িতে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করেন। সেই থেকে ওই পরিবারের সদস্য হিসাবে থাকতে শুরু করেন অকৃতদার মঙ্গলবাবু। বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা শোভাদেবীর ছেলে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরবর্তীতে তাঁর ছেলেদের পরিবারে থাকতেন। নিজে ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলতেন। পরে ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে জনপ্রিয় হন। উঠতিদের ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিতেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম তখন তিলক ময়দান। ফুটবল ম্যাচের আয়োজনে মাঠের সীমানার ধারে লাঠি হাতে ভিড় সামলাতে তাঁকে বিশেষ ভূমিকায় দেখা যেত। বয়সের সঙ্গে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাঁর শরীরে পেসমেকার বসাতে হয়েছিল। সম্প্রতি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত ৪ ফেব্রুয়ারি জন্মদিন ছিল। সেই দিন থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন নার্সিংহোমের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁকে প্রধাননগরের এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তবে শেষ রক্ষা করা যায়নি। সেবক মোড়ে তাঁর একটি দোকান রয়েছে। তিনি যে পরিবারে থাকতেন বর্তমানে তাঁরাই দোকানটি দেখভাল করেন। এ দিন নার্সিংহোম থেকে তাঁর দেহ সেবক মোড়ের দোকানে এবং পরে মিত্র সম্মিলনীতে নিয়ে যাওয়া হয়। মিত্র সম্মিলনীতে পুর চেয়ারম্যান নান্টু পাল এবং অন্যরা শেষ শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদে। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপ রতন ঘোষ, পীযূষ বসু, কুন্তল গোস্বামী ও ক্রীড়া সংগঠকরা শ্রদ্ধা জানান। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের পতাকা তাঁর সম্মানে অর্ধনমিত রাখা হয়। সেখান থেকে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিদ্যাসাগরপল্লির বাড়িতে। কিরণচন্দ্র শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। |