সহবাসে বন্দির বিয়ে সংশোধনাগারে
ন্ত্রোচ্চারণে চার হাত এক হল ঠিকই। কিন্তু, বিয়ে পর্ব মিটতেই, মাথা থেকে টোপর খুলে, এক হাতে নতুন শাড়ি সামলে পাত্রী হাঁটা দিলেন তাঁর বাড়ির পথে। সে দিকে তাকিয়ে থেকে হাতও নাড়লেন পাত্র। তার পরে বন্ধ হল জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের লোহার দরজা।
শনিবার জলপাইগুড়ির কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে এই অভিনব বিয়ের অনুষ্ঠান হল। পাত্র জেলে বন্দি রাজগঞ্জ ব্লকের কুকুরজান এলাকার বাসিন্দা কৃষক প্রদীপ রায়। পাত্রী প্রদীপেরই পড়শি রাজগঞ্জ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। শনিবার দুপুর একটা নাগাদ আত্মীয় এবং আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে সংশোধনাগারে পৌঁছন সবুজ রঙের নতুন সিল্কের শাড়ি পরা যুবতী।
ছবি: সন্দীপ পাল।
তার আগেই অবশ্য পাজামা-পাঞ্জাবিতে প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষা করছিলেন পাত্র। নিয়ম মেনেই মালাবদল হল, পুরোহিত মন্ত্রও পড়লেন। বিয়ের পরে হল মিষ্টি মুখও। কিছুক্ষণ একান্তে বসে কথাও বললেন নব দম্পতি।
সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ জানুয়ারি থেকে এখানে বন্দি রয়েছেন প্রদীপ রায়। তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন প্রেমিকা তথা এ দিনের নববধূই। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর ধরে তাঁদের সম্পর্ক ছিল। তাঁদের সম্পর্কের কথা রাষ্ট্র হয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। গত ৬ জানুয়ারি রাজগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই যুবতী জানিয়েছিলেন, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বছর খানেক ধরে একাধিক বার সহবাস করেও, প্রদীপ রায় বিয়েতে রাজি হচ্ছে না। গত ১৭ জানুয়ারি পুলিশ প্রদীপকে গ্রেফতার করে। জেলা আদালতের নির্দেশে তার পর দিন থেকে শুরু হয় প্রদীপের হাজতবাস। এ দিন যুবতীর আইনজীবী ভবতোষ সরকার জানিয়েছেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে দু’জনের বিয়ের আবেদন করা হয়। তার পরে আদালত সংশোধনাগারেই ওই দু’জনের বিয়ের আয়োজন করার নির্দেশ দেয়। তিনি বলেন, “ওই নির্দেশ মেনে এই দিন সংশোধনাগারে দু’জনের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্রুত আদালতে আবেদন জানিয়ে প্রদীপের জামিনে মুক্তির ব্যবস্থা করে স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবন কাটাতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে।” শনিবারের বিয়েতে পাত্র আর পাত্রী পক্ষের অন্তত ১৫ জন হাজির ছিলেন। সংশোধনাগারে এসেছিলেন পাত্রীর বাবা ও পরিজনেরা। তবে তাঁরা কেউই সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে চাননি। শুধু ফিরে যাওয়ার সময়ে পাত্রী বলেন, “স্বপ্ন পূরণ হল। ওকে ভালবাসি। খুব তাড়াতাড়ি ওঁকে কাছে ফিরে পাব বলে আশা করছি।” এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ওয়েলফেয়ার অফিসার শক্তিমোহন জানা বলেন, “ওঁরা সুখি হলেই আমরা খুশি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.