শিল্পস্থাপনে সমস্যা মিটিয়ে উত্তরবঙ্গে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ কার্যকর করতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। শিলিগুড়ির দাগাপুরে ‘শিলিগুড়ি সিনারজি’-র আসর বসিয়ে সেই রাস্তাই মসৃণ করতে তৎপর তারা। আজ, সোমবার তার উদ্বোধন। জমির সমস্যা বা কোনও দফতরের অনুমোদ মেলেনি, এমন নানা সমস্যায় আটকে থাকা শিল্পকারখানা গড়ার কাজের দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ওই আয়োজন করা হয়েছে। শিল্পের সঙ্গে জড়িত সরকারের অন্তত ৩০ টি দফতর এই আসরে উপস্থিত থাকছে। কার কী সমস্যা রয়েছেন একে একে শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে কথা বলে সেগুলি মেটাতে ব্যবস্থা নেবে তারা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “উত্তরবঙ্গে শিল্পোদ্যোগীদের সাহায্য করতে রাজ্য সরকার সচেষ্ট। এতে শিল্পোদ্যোগীরা উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী।”
রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির এবং বস্ত্রশিল্প দফতরের এই উদ্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই), শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সিআইআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ৯৩ জন নতুন উদ্যোগী এই আসরে অংশ নেবেন। তাঁরা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় শিল্প স্থাপনে সে সব উদ্যোগ গ্রহণ করবেন তাতে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ হবে। ওই শিল্প্যোদ্যোগীরা দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, ইসলামপুরের মতো উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন। সিআইআই-এর জোনাল কমিটির সদস্য তথা সিনারজির দায়িত্বে থাকা অন্যতম ব্যক্তি সঞ্জিত সাহা জানান, শিল্পোদ্যোগীদের সমস্যাগুলি মেটানো সম্ভব হলে ওই পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ হবে।
তা ছাড়াও বিভিন্ন শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা নিয়ে যারা ভুগছেন তা মেটাতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এমন অন্তত ১৮০ জন ইতিমধ্যেই তাঁদের অংশ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। নতুন পুরনো সব মিলিয়ে ১ হাজার শিল্পোদ্যোগী এই ‘সিনারজি’-র আসরে অংশ নেবেন। যে কোনও শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে-ই তাঁদের সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা আলাদা ভাবে কথা বলবেন। সমস্যা মিটিয়ে যাতে দ্রুত সেই কাজ শুরু করা সম্ভব হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে একাধিক দফতরের সাহায্য নিয়ে সেখানেই সমস্যা মেটানোর বন্দোবস্ত করা হবে। এই ব্যবস্থায় শিল্পোদ্যোগীরা খুশি। তাঁদের অনেকেরই মত দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যায় যে সমস্ত শিল্পোদ্যোগ থমকে রয়েছে এ বার সেগুলি শুরু করা সম্ভব হবে। উদ্যোক্তারা জানান, সোমবার উদ্বোধন অনুষ্ঠান রয়েছে। তবে মঙ্গলবার এবং বুধবার শিল্পস্থাপনে উদ্যোগীদের সমস্যা এবং সমাধানের বিষয়গুলি দেখা হবে। রাজ্য সরকারের যে সমস্ত দফতর অংশ নেবে জেলাগুলিতে সেই সমস্ত দফতরের বিভাগীয় আধিকারিকরো থাকবেন। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে শিল্পোদ্যোগীরা যে ছাড় পান তা প্রাথমিকভাবে তাঁদের মিটিয়ে দিতে হয়। ৪-৫ বছর ধরে জমে থাকা সেই ছাড়ের অর্থ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিল্পোদ্যোগীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার থেকে ১৯ জন এমন শিল্পোদ্যোগী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ওই খাতের প্রায় আড়াই কোটি টাকা বিলি করা হবে। শিল্প স্থাপন নিয়ে যে সব ক্ষেত্রে জমির সমস্যা রয়েছে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই মিটিয়ে দেওয়ার নীতি নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সে বিষয়েও ঘোষণা হবে এই আসরেই |