আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণ না করলে কংগ্রেস রাজ্য জুড়ে অনির্দিষ্ট কাল আন্দোলন শুরু করবে। শনিবার রাতে রায়গঞ্জ স্টেশনে রাধিকাপুর-দিল্লি আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরুর সূচনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ওই হুমকি দেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের দাবিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম সপ্তাহে কলকাতায় অনশনে বসেন দীপাদেবী। দুদিন অনশন চালানোর পর প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের অনুরোধে অবশ্য তিনি অনশন তুলে নেন। দীপাদেবী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে অনুরোধ করবেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান জানাতেই অনশন তুলে নিয়েছি। তবে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু না করলে কংগ্রেস রাজ্য জুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আন্দোলন শুরু করবে।” তিনি জানান, ওই আন্দোলনে পথ অবরোধ, সরকারি কাজকর্ম অচল, আইন অমান্য সব হবে। আন্দোলন চলাকালীন আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে তার দায় রাজ্য সরকারের।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারি জমি অধিগ্রহণের দাবিতে প্রদেশ কংগ্রেসের ডাকে রায়গঞ্জে ধিক্কার সভা করা হয়। ওই দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য, দীপাদেবী প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সামনেই লোকসভা নির্বাচনের আগে জমি অধিগ্রহণের দাবিতে আন্দোলনের কথা জানান। আন্দোলনের প্রথম দফায় দীপাদেবী অনশন শুরু করেন। দীপাদেবী জানান, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে চাষিরা স্বেচ্ছায় জমি দিতে ইচ্ছুক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্য সরকার রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে গত তিন বছর ধরে রায়গঞ্জে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আটকে রেখেছে। এতে কেন্দ্রীয় সরকার হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করতে পারছে না। কংগ্রেস উত্তরবঙ্গ জুড়ে আন্দোলন-সহ চাষিদের নিয়ে মহাকরণ অভিযান করলেও রাজ্য সরকারের টনক নড়েনি।” ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার ৮২৩ কোটি টাকা বরাদ্দে রায়গঞ্জে ১০০ একর জমিতে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করে। হাসপাতাল তৈরির জন্য সরকারকে জমি অধিগ্রহণ করে দিতে হবে বলে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়। ২০১০ সালের অক্টোবরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পানিশালায় প্রশাসনের চিহ্নিত করা ১১০ একর জমি পরিদর্শনও করে। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পর রাজনৈতিক স্বার্থে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া আটকে দেয় বলে অভিযোগ। এই প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্যের দাবি, “রাজ্য সরকার কৃষিজমি নষ্ট করে হাসপাতাল তৈরির বিরোধী বলেই জমি অধিগ্রহণ হয়নি। রায়গঞ্জ ও ইসলামপুরে দুটি মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে কংগ্রেস রাজনীতি করছে।” |