|
|
|
|
১৭টি ভোটকেন্দ্র বদলের প্রস্তাব পূর্বে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের স্থান পরিবর্তন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে জেলা নির্বাচন দফতর। এগুলির মধ্যে অনেক ভোটকেন্দ্রের জরাজীর্ণ দশা। এ ছাড়াও ভোটারদের পর্যাপ্ত জায়গা-সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করতেই এই পদক্ষেপ। শনিবার জেলাশাসকের অফিসে এক সর্বদল বৈঠকে জেলার ওই ১৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র বদলের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত জানতে চাওয়া হয়। এই বিষয়ে আলোচনার করার পর সর্বসম্মতিক্রমে ওই ১৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র পরিবর্তনের প্রস্তাব গৃহীত হয় বলে জানিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। জেলাশাসক বলেন, “জেলার যে সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে পরিকাঠামোগত অসুবিধা রয়েছে, তার মধ্যে যেগুলির জন্য বিকল্প জায়গা রয়েছে, এমন কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করে এই প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে আগে ব্লক ও মহকুমাস্তরে সর্বদল বৈঠকে আলোচনা হয়। তারপর শনিবার জেলাস্তরে সর্বদলীয় বৈঠকে আলোচনা করে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।” তিনি জানান, জেলার এই ১৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের স্থান পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি পেলে প্রস্তাবিত নতুন জায়গায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হবে।”
জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জেলায় মোট ১৪৯৮টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হবে। তারমধ্যে ১৭টি কেন্দ্রের স্থান পরিবর্তনের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। কোনও সাহায্যকারী ভোটগ্রহণ কেন্দ্র হচ্ছে না। জেলায় এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩৪লক্ষের কিছু বেশি। জেলার সমস্ত ভোটারদের পরিচয়পত্র দেওয়ার কাজ হয়েছে। যেসব ভোটারদের পরিচয়পত্রে ত্রুটি রয়েছে তাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে ত্রুটি সংশোধনের কাজ চলছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার অধিকাংশ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলি সাধারণত প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল ও কলেজ ভবনে রয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অন্য জায়গাতেও বুথ করা হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রগুলির ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভোটারদের বাড়ি থেকে বেশকিছুটা দূরে গিয়ে ভোট দিতে হয়। এরফলে সবচেয়ে অসুবিধায় পড়েন বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভোটাররা। আবার কিছু ক্ষেত্রে বুথগুলিতে পর্যাপ্ত জায়গারও অভাব রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত ত্রুটি থাকার কারণে ভোটাররা অসুবিধায় পড়েন। তাই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার বর্তমান ভোটকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোগত অবস্থা খতিয়ে দেখে ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনের কাছ রিপোর্ট নেওয়া হয়। তাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে জেলার বেশ কিছু ভোটগ্রহণ কেন্দ্র পরিবর্তন করে বিকল্প জায়গায় কেন্দ্র করার সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ১৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের স্থান বদলের জন্য প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে তাঁর মধ্যে ময়না বিধানসভা এলাকার ৪টি, কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভার ৩টি, হলদিয়া, এগরা, খেজুরি, রামনগর বিধানসভার ২টি করে, মহিষাদল, কাঁথি উত্তর বিধানসভার একটি করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে। ময়না বিধানসভার বসন্তচক প্রাথমিক স্কুলের (সি-১) বুথের স্থান পরিবর্তন করা হচ্ছে। সেখান থেকে আধ কিলোমিটার দূরে বসন্তচক শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে বুথ সরানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একইভাবে ময়নার রামচক ই ইউ প্রাইমারি স্কুল থেকে তাঁর পার্শ্ববর্তী রামচক রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরে, মগরা নিরঞ্জন স্মৃতি নম্বর ১ প্রাইমারি স্কুল (সি-২) থেকে মগরা ২ নম্বর শীতলা প্রাইমারি স্কুলে ও শ্যামপুর প্রাইমারি স্কুল (সি-২) থেকে পার্শ্ববর্তী শ্যামপুর ১২৩ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ভোটকেন্দ্র করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভার উত্তর পিঠুলিয়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের ভবনের অবস্থা জরাজীর্ণ। তাই ওই কেন্দ্রটি ৪০০ মিটার দূরে উত্তর পিঠুলিয়া বসন্ত শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে স্থানান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই ভাবে ওই বিধানসভার গুয়াগাছিয়া প্রাইমারি স্কুলে (রুম-২) ভোটারদের জন্য পর্যাপ্ত স্থানাভাবের কারণে কেন্দ্রটি আধ কিলোমিটার দূরে দুরমুঠ প্রাইমারি স্কুলে এবং হুগলি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কেন্দ্রটি দেড় কিলোমিটার দূরে হুগলি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
হলদিয়া (তফসিলি জাতি সংরক্ষিত) বিধানসভার বারাতালা প্রাইমারি স্কুলের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রটিতে ভোটারদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গার অভাব রয়েছে। তাই ওই কেন্দ্রটি আধ কিলোমিটার দূরে বারাতলা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে স্থানান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই বিধানসভার রাজ্য বিদ্যুত্ পর্ষদ রিক্রিয়েশন ক্লাব হাউসিং কমপ্লেক্সের ভোটকেন্দ্রটি ২০০ মিটার দূরে রাজ্য বিদ্যুত্ সংবহন কোম্পানি লিমিটেডের পরিদর্শন বাংলোয় স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এগরা বিধানসভার দালালুয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটগ্রহণ কেন্দ্র প্রশাসনিক কারণে দালালুয়া গুচ্ছ সম্পদ কেন্দ্রে, কেউটগেড়িয়া প্রাইমারি স্কুলের (খাঁড়া পাড়া) ভোটকেন্দ্র প্রশাসনিক কারণে উরিজালকার শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে স্থানান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে। খেজুরি (তফসিলি জাতি সংরক্ষিত) বিধানসভার ইড়িঞ্চি ইশ্বরচন্দ্র জনচেতনা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রটি ৬০০ মিটার দূরে ইড়িঞ্চি ক্ষুদিরাম শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে, আলিপুর প্রাইমারি স্কুলের বুথ দেড় কিলোমিটার দূরে সুন্দরপুর প্রাইমারি স্কুলে স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রামনগর বিধানসভার দহদয়া প্রাইমারি স্কুলের ভোট কেন্দ্রটি ৩০০ মিটার দূরে দহদয়া আপার প্রাইমারি স্কুলে, বালিসাই পাটনা আপার প্রাইমারি স্কুলের ভোটকেন্দ্র ৯০০ মিটার দূরে জানাপাড়া তফসিলি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে স্থানান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে। মহিষাদল বিধানসভার চকলালপুর প্রাইমারি স্কুলের ভোটকেন্দ্রটি পার্শ্ববর্তী চকলালপুর আপার প্রাইমারি স্কুলে ও কাঁথি উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বাঁকিপুট প্রাইমারি স্কুলের ভোটকেন্দ্রটি ২০০ মিটার দূরে বাঁকিপুট হাইস্কুলে স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|