|
|
|
|
নিগ্রহ রোধে পুলিশের কর্তব্য বোঝাতে সভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
শুধু আইনের রক্ষক হলেই চলবে না, মহিলাদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ রুখতে গেলে জঙ্গলমহলের ‘বন্ধু’ পুলিশকে আরও বেশি মানবিক হতে হবে। শনি ও রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম এসপি অফিসের সভাঘরে নারী নিগ্রহ সংক্রান্ত এক আলোচনাসভা ও কর্মশালায় জঙ্গলমহলের পুলিশকর্মীদের এমনই বার্তা দেওয়া হল। ধর্ষণ ও নারী নিগ্রহের ঘটনা রুখতে এবং এই সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে থানার পুলিশকর্মীদের ইতিকর্তব্য কী হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিলেন শীর্ষ পুলিশ কর্তা, প্রবীণ আইনজীবী ও বরিষ্ঠ সমাজকর্মীরা।
ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সমস্ত থানার পুলিশ আধিকারিকেরা গত দু’দিনে পর্যায়ক্রমে সচেতনতামূলক ওই সেমিনারে হাজির ছিলেন। আলোচনা শেষে ছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি ও যৌন নিগ্রহের অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশকর্মীরা আইনগত পদক্ষেপের পাশাপাশি, কী ভাবে সমাজকে সচেতন করবেন সে বিষয়ে পুলিশকর্মীদের অবহিত করা হয়। কেমন হবে ধর্ষিতার প্রতি পুলিশের ব্যবহার? অভিযোগ পাওয়ার পর কী করবেন সংশ্লিষ্ট অফিসার? অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করলেই কী একজন পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব শেষ? এসব নিয়েও নানা ভাবে বিভিন্ন থানার আইসি, ওসি, এসআই এবং এএসআই পদমর্যাদার অফিসারদের সচেতন করা হয়। |
|
ঝাড়গ্রামে পুলিশের কর্মশালা।—নিজস্ব চিত্র। |
ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার ভারপ্রাপ্ত এসপি ভারতী ঘোষ বলেন, “নিগৃহীতা ও অত্যাচারিতা মেয়েটি যেন না ভাবে সে একা এবং নিঃসঙ্গ। পুলিশ যাতে মেয়েটির পরিবারের একজন হয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারে সে ব্যাপারেই পুলিশ কর্মীদের সদাসতর্ক থাকতে হবে। অবাঞ্ছিত ঘটনাগুলি রোখার জন্য পুলিশকে আরও বেশি করে সামাজিক সচেতনতার কাজ করতে হবে।”
দু’দিনই সেমিনারের বক্তা ছিলেন সমাজকর্মী স্বাতী দত্ত। মীনাক্ষী শেষাদ্রি অভিনীত নব্বইয়ের দশকের হিন্দি ছবি ‘দামিনী’র প্রসঙ্গ টেনে স্বাতীদেবী বলেন, “ধর্ষিতা কিশোরী পরিচারিকার পাশে দাঁড়াতে গিয়ে পুরুষতন্ত্রের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছিলেন অভিজাত পরিবারের বধূ দামিনী। তবে এক আইনজীবীর (সানি দেওল) সাহায্যে বিচার পেয়েছিলেন দামিনী। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্ষণকারী দেওর ও তাঁর সঙ্গীদের কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। দামিনীর মতো হতে আমাদের-আপনাদের (পুলিশের) বাধা কোথায়?”
জঙ্গলমহলের ‘বন্ধু’ পুলিশকে আরও বেশি মানবিক হওয়ার পরামর্শ দেন ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব। অধঃস্তন পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “নিগৃহীতা মহিলাকে কোনও মতেই থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না। অভিযোগ পেলে আপনারাই নিগৃহীতার সঙ্গে দেখা করে তাঁর অভিযোগ শুনুন। অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে সঠিক ভাবে আইনের ধারা প্রয়োগ করুন। যাতে অপরাধীরা প্রকৃত সাজা পায়। অপরাধীরা সাজা না পেলে এ ধরনের ঘটনা কমবে না।” অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে প্রয়োজনীয় ধারায় মামলা দায়ের করার পক্ষে সওয়াল করেন মেদিনীপুরের প্রবীণ আইনজীবী শান্তিকুমার দত্ত। |
|
|
|
|
|