|
|
|
|
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ থেকে কাপ তোলার হুঙ্কার |
‘বিশ্বকাপে ফর্মের চুড়োয় থাকা মেসিকেই দেখবেন’
নিজস্ব প্রতিবেদন |
লিও মেসি জানিয়ে দিলেন, ব্রাজিল বিশ্বকাপের জন্য তিনি ঠিক যথাসময়ে ‘পিক আপ’ করবেন। বর্তমান প্রজন্মের বিশ্বসেরা ফুটবলার মনে করছেন, তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মরসুম এটাই। এবং সেখানে তিনি সব কিছু জিততে চান। বার্সেলোনার হয়ে যেমন স্প্যানিশ লিগ এবং ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, তেমনই আর্জেন্তিনার হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপ।
“এবং তার জন্য ধীরে কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই আমি নিজের পিক ফর্মে পৌঁছচ্ছি। আশা করি যথাসময়ে সেই শৃঙ্গে পৌঁছে যাব। আরও আশা করছি, এই বছরটা শুধু আমার জন্যই গ্রেট যাবে তাই নয়, একইসঙ্গে বার্সেলোনা আর আর্জেন্তিনার জন্যও গ্রেট যাবে,” ব্রিটিশ মিডিয়ার বিশেষ ফুটবল অনুষ্ঠানে বলেছেন মেসি।
বছর ছাব্বিশের আর্জেন্তিনীয় মহাতারকা ফুটবলারের বিশ্বকাপে আট ম্যাচে মাত্র একটি গোল রয়েছে। বার্সেলোনার হয়ে এলএম টেনের গোল করার যে ‘রেট’, সে রকমই জাতীয় দলের জার্সিতে থাকলে আর্জেন্তিনার হয়ে বিশ্বকাপে আট ম্যাচে মেসির নামের পাশে সাত গোল লেখা থাকত। বিশ্ব ফুটবলের রাজকুমার স্বয়ং যা জানেন। এ-ও জানেন, এ বারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পরেই দ্বিতীয় ফেভারিটের তকমা আর্জেন্তিনাকে যথাযথ প্রমাণ করতে হলে তাঁর ওই একটা গোলে চলবে না। হয়তো সে জন্য ব্রাজিল বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক ১২২ দিন আগে, আর্জেন্তিনার প্রথম ম্যাচের ঠিক ১২৫ দিন পূর্বে মেসি বলেছেন, “অন্য সব বিশ্বকাপের তুলনায় এ বারের কাপটা আমার কাছে ‘একস্ট্রা স্পেশ্যাল’। একে তো সেটা হচ্ছে ব্রাজিলে। ফুটবলে ব্রাজিল মানে কী, সেটা সবাই জানে। তা ছাড়া আমি বিশ্বাস করি, এ বার আর্জেন্তিনা বিশ্বকাপ জিততে পারে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মাঠ থেকে কাপ নিয়ে ফিরতে পারে।” |
দেশের জার্সিতে দৌড়নোর অপেক্ষায় মেসি। |
নব্বইয়ের পর আর্জেন্তিনা কোনও বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল ওঠেনি। তবে এ বার কোয়ালিফাইং পর্বে ১৬ ম্যাচের মাত্র দু’টি হেরে গ্রুপ শীর্ষে থাকা আর্জেন্তিনা দল সম্পর্কে মেসির মন্তব্য, “আমার মতে এ বার বিশ্বকাপ আর্জেন্তিনার জন্য ভাল সময় নিয়ে আসছে। মাঠ আর মাঠের বাইরে আমরা একটা দল হিসেবে পরিণত হয়ে উঠেছি। একটা গ্রেট ‘ব্যাচ’, যারা দেশের হয়ে খেলতে প্রচণ্ড ভালবাসে। বিশ্বকাপ ফুটবল কী, আমরা জানি। ব্রাজিলে কাপ জেতার সমস্ত সুযোগ রয়েছে আমাদের। খুব ভাল অবস্থাতেই আমরা ব্রাজিল পৌঁছব।”
নিজের দল নিয়ে তাঁর এত আশাবাদের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মেসি। “এ বার কোয়ালিফাইং পর্বটা আমাদের দারুণ গিয়েছে। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ জয়টা আমার মতে এ বার আমাদের টার্নিং পয়েন্ট। তা ছাড়া বিশ্বের কয়েকটা সেরা দেশের বিরুদ্ধে ফ্রেন্ডলি ম্যাচেও আমরা খুব ভাল খেলেছি।” ‘পরিণত’ মেসি জানেন, বিশ্বকাপের মূল পর্ব ‘অন্য জিনিস’, “কিন্তু সেখানেও একবার বল গড়াতে শুরু করে দিলে অনেক কিছুই ঘটতে পারে,” বলছেন তিনি। “সঙ্গে শুধু একটু চ্যাম্পিয়ন্স লাক দরকার। বিশ্বকাপ জিততে গেলে যেটা খুব দরকার। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয়।” মেসির কেবল প্রার্থনা, “আমাদের টিমের সব ফুটবলার ব্রাজিলে ওই এক মাস সময়ে যেন পুরো ফিট আর নিজেদের সেরা ফর্মে থাকে।”
কিন্তু লিও মেসিতাঁর ফর্মই তো গত কয়েক মরসুমের তুলনায় এ বার কিছুটা খারাপ! হ্যামস্ট্রিং-সমস্যা থেকে এখনও পুরো মুক্ত নন। ফুটবলমহলের বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে মেসি অবশ্য বলে দিচ্ছেন, “আমি দারুণ ভাল আছি। এনার্জিতে টগবগ করছি। নিজের বর্তমান ফর্ম নিয়েও আমি দারুণ খুশি। বার্সেলোনার হয়ে এ মরসুমেও চব্বিশ ম্যাচে উনিশ গোল করেছি। পরিসংখ্যানটা নিশ্চয়ই খুব খারাপ নয়।” সঙ্গে অবশ্য এ-ও যোগ করেছেন মেসি এখনও তিনি ফুটবলের একজন শিক্ষার্থী। প্রতি বছর চেষ্টায় থাকেন নিজের খেলায় নতুন কিছু যুক্ত করার। প্রতি মরসুমে লক্ষ্য থাকে, নিজের খেলার আরও উন্নতি ঘটানো। “যার জোরে আশা করি বিশ্বকাপের মতো ফুটবলের সর্বোচ্চ মঞ্চে নিজের সেরাটা খেলব। আর্জেন্তিনার হয়ে কাপ জেতাটাই আমার সবচেয়ে বড় মোটিভেশন। আমি সত্যিই এ বার বিশ্বকাপটা চাই।” |
|
|
|
|
|