সিপিএমের বর্ধিত সভায় আসছেন বিমান
কিছু দিন আগে মেদিনীপুরে সভা করে গিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই সভায় তাঁর নেতাই প্রসঙ্গে ভুল কবুল নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। এরই মধ্যে আগামী শনিবার মেদিনীপুরে আসছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। দলীয় সূত্রে খবর, জেলা সিপিএমের বর্ধিত সভায় উপস্থিত থাকবেন বিমানবাবু। সভা হবে শহরের স্পোটর্স কমপ্লেক্সে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএম এখন কোণঠাসা। গত পঞ্চায়েত পুরসভা নির্বাচনেও দল পযুর্দস্ত হয়েছে। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে সামনে আসছে লোকসভা নির্বাচন। পশ্চিম মেদিনীপুরের তিনটি লোকসভা কেন্দ্রেই গত বার বামেদের দখলে ছিল। কিন্তু ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর ঘাটাল লোকসভা আসন বার দখলে থাকবে কি না সংশয়। লোকসভা ভোটে দলের রণকৌশল কী হবে, কী ভাবে প্রচার এগোবে, তা নিয়েই বর্ধিত সভায় আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার শুধু বলেন, “এটা আমাদের সাংগঠনিক ব্যাপার।”
দলীয় সূত্রে খবর, শনিবার সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক হয়েছে। সেখানে বর্ধিত সভার প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। গত সপ্তাহে মেদিনীপুরের সমাবেশে বুদ্ধবাবুর স্বীকারোক্তি ছিল, ‘নেতাইয়ে আমাদের ছেলেরা ভুল করেছিল। ভীষণ ভুল ! ” দলের একাংশ মনে করেছিল, বুদ্ধবাবুর এই মন্তব্য নিয়ে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আলোচনা হবে। কিন্তু তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে শনিবারের বৈঠকে বুদ্ধবাবুর ওই মন্তব্য নিয়ে সে ভাবে আলোচনাই হয়নি। প্রসঙ্গটি উঠতে দীপকবাবু বুঝিয়ে দেন, এ নিয়ে মেদিনীপুরে আলোচনার অবকাশ নেই। নেতাই এখন ‘ডেড ইস্যু’! কেন সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে বুদ্ধবাবুর মন্তব্য নিয়ে কোনও আলোচনা হল না? দীপকবাবুর জবাব, “এ নিয়ে আলোচনার কোনও সুযোগও আর নেই ! ” এই প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পাশে দাঁড়ায়নি আলিমুদ্দিনও। শনিবার সন্ধেতেই বুদ্ধবাবুর উপস্থিতিতে আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিমানবাবু জানিয়ে দেন, নেতাই নিয়ে ওই মন্তব্য না করলেই ভাল হত ! এর ফলে দীপক -শিবিরের অবস্থানই জয়ী হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। জেলা সিপিএম শুরু থেকে দাবি করে আসছে, মাওবাদী -তৃণমূল চক্রান্তেই নেতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দীপকবাবুর এখনও দাবি, “ওই দিন সশস্ত্র মাওবাদীরা জমায়েত না হলে নেতাইয়ের ঘটনা ঘটত না।”
গত দু’-আড়াই বছর ধরেই সিপিএম প্রচার করে আসছে, নজিরবিহীন সন্ত্রাস প্রতিকূলতার মধ্যেও মানুষ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনেও এই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রমাণ মিলবে। ইদানীং জেলার বিভিন্ন এলাকায় সংগঠন পুনর্গঠনের কাজও শুরু করেছে সিপিএম। ক্ষেত্রে ছাত্র -যুব -মহিলা এবং কৃষকদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা নিষ্ক্রিয়, তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। দলীয় কর্মীদের বলা হয়েছে, লোকাল কমিটি ধরে ধরে সদস্যদের কাজের পর্যালোচনা করতে হবে।
গত লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, ঘাটাল -জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্রই বামেদের দখলে আসে। মেদিনীপুর থেকে জয়ী হন সিপিআইয়ের প্রবোধ পাণ্ডা, ঘাটাল থেকে সিপিআইয়ের গুরুদাস দাশগুপ্ত এবং ঝাড়গ্রাম থেকে সিপিএমের পুলিনবিহারী বাস্কে।
কিন্তু বার? সিপিএম নেতৃত্ব মানছেন, পরিস্থিতি এখনও প্রতিকূল। লোকসভা নির্বাচনে কঠিন লড়াই হতে চলেছে। আসলে, লোকসভা নির্বাচন দু’পক্ষের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালে হয়নি। তাই তৃণমূলের লক্ষ্য, ২০১৪ সালে জেলার তিনটি লোকসভার তিনটিই দখল করে পশ্চিম মেদিনীপুরে পরিবর্তন পরিপূর্ণ করা। পরিবর্তনের বৃত্তটা সম্পূর্ণ করা। আর সিপিএমের কাছে চ্যালেঞ্জ, হারানো জমি পুনরুদ্ধার করা। বিভিন্ন এলাকায় সংগঠনের ভিত ফের মজবুত করা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.