|
|
|
|
বিল পাশ করাতে ইস্তফার হুমকি কেজরিওয়ালের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
৯ ফেব্রুয়ারি |
লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় এসে দিল্লির সরকার পড়ে যাক, কংগ্রেস তা চায় না। এই সমীকরণকে সামনে রেখেই জন-লোকপাল ও স্বরাজ বিল পাশ করানোর ব্যাপারে চাপ বাড়ালেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। হুমকি দিলেন, জন-লোকপাল ও স্বরাজ বিল পাশ করাতে না দিলে তিনি ইস্তফা দিয়ে দেবেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করার জন্য যদি একশো বার মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় তো আমি তার জন্য প্রস্তুত। আর দেশে স্বরাজ প্রতিষ্ঠার জন্য যদি হাজার বারও মুখ্যমন্ত্রীর পদ বলি দিতে হয় তাতেও ক্ষতি নেই। আমি মুখ্যমন্ত্রী হতে আসিনি।” কেজরিওয়াল এ দিন জানিয়েছেন, আগামী বৃহস্পতিবারই বিধানসভায় বিল দু’টি পেশ করবে আপ সরকার। দিল্লি মন্ত্রিসভা গত সপ্তাহেই জন-লোকপাল বিলটিকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।
বিল দু’টি পাশ করাতে মরিয়া কেজরিওয়াল আজ ফের অণ্ণা হজারের সঙ্গে দেখা করেছেন। অণ্ণা আগেই কংগ্রেসের লোকপাল বিলটিকে সমর্থন করেছেন। তিনি যাতে কেজরিওয়ালদের জন-লোকপাল বিলটিকেও নৈতিক সমর্থন জানান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজনৈতিক গুরুর কাছে সেই আর্জিই রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। অণ্ণার সঙ্গে কথা বলার পরে কেজরিওয়াল অবশ্য বলেছেন, “স্বরাজ ও জন-লোকপাল বিল নিয়ে কথা বলেছি। তাঁর তো সমর্থন রয়েছেই। কংগ্রেস ও বিজেপিওয়ালারা এ নিয়ে রাজনীতি করছে। সে ব্যাপারে আর অণ্ণার সঙ্গে কী কথা বলব! এসেছিলাম নীতিগত কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করতে।”
কংগ্রেসের সমর্থনে দিল্লির আপ সরকার টিকে রয়েছে ৭ সপ্তাহ ধরে। তাঁদের ৮ জন বিধায়ক পাশে থাকলে বিল পাশে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বাধা আসলে লালকৃষ্ণ আডবাণীর আমলে জারি করা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি নির্দেশ। ২০০২ সালের ওই নির্দেশ অনুযায়ী জন-লোকপাল বা অন্য কোনও বিল দিল্লি বিধানসভায় পেশ করার আগে উপরাজ্যপাল তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আগাম ছাড়পত্র নেওয়াটা বাধ্যতামূলক। আপ নেতৃত্ব আজ ঘোষণা করে দিয়েছেন, কেন্দ্রের ছাড়পত্র ছাড়াই দিল্লি সরকার ওই বিল দু’টি বিধানসভায় পেশ করবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখবে সরকার। তবে বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ও রয়েছে কিছু আইনি জটিলতাও। ১২ বছর আগে কেন ওই আদেশ জারি করা হয়েছিল তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে আইন মন্ত্রককে। সোমবার মহারাষ্ট্র থেকে ফিরে শিন্দে বিষয়টি দেখবেন।
আপ নেতৃত্বের আশঙ্কা, তাঁরা প্রতিশ্রুতি পালনে বদ্ধপরিকর দেখেই হয়তো কেন্দ্র নানা ভাবে সময় নষ্ট করার কৌশল নেবে। কেজরিওয়াল সেই কারণেই বিল দু’টির ব্যাপারে কেন্দ্রের ছাড়পত্র নেওয়ার পক্ষপাতী নন তাঁদের মতে, কোনও বিল পাশের জন্য নির্বাচিত একটা সরকারকে কেন্দ্রের ছাড়পত্র নিতে বাধ্য করার নিয়মটাই সংবিধানবিরুদ্ধ। অরবিন্দের কথায়, “দিল্লি সরকারের আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা কোনও ভাবেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক খর্ব করতে পারে না। আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নয়, সংবিধানের শপথ নিয়েছি। আমি তাই সংবিধান মেনেই চলব।” আপ-এর মুখপাত্র দিলীপ পাণ্ডে আজ এ বিষয়ে বলেন, “শীলা দীক্ষিতের আমলে ১৩টি বিল কেন্দ্রের সম্মতি ছাড়াই পাশ হয়েছিল।” দলের প্রশ্ন, তখন কেন্দ্র কেন চুপ করে ছিল? পাণ্ডের অভিযোগ, “আসলে আপ সরকার নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় তৎপর দেখেই এ নিয়ে অযথা জলঘোলা করা শুরু হয়েছে। কেজরিওয়াল সরকার যাতে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয় তার জন্য সক্রিয় রয়েছে একাধিক শিবির।” |
|
|
|
|
|