রামপুরহাট কলেজ
মামলার জেরে স্থগিত প্রশাসক অপসারণ, জট
তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শেষমেশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন রামপুরহাট কলেজের অপসারিত প্রশাসক আব্দুল মকিদ। শুক্রবার বিচারপতি অশোককুমার দাসঅধিকারীর এজলাসে মামলাটি উঠলে বিচারপতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন বলে তাঁর আইনজীবীর দাবি। আর তারই জেরে ওই কলেজের নতুন পরিচালন সমিতি গঠন নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা তৈরি হল। শনিবার পরিচালন কমিটির ১১টির মধ্যে পাঁচটি আসনে ভোট হওয়ার কথা ছিল।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়দেব পান বলেন, “আব্দুল মকিদের অপসারণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশে পরিচালন কমিটির প্রাথমিক ধাপে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রতিনিধি নির্বাচন আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এক জন আইনজীবীর চিঠি ছাড়া এখনও অবধি আদালতের কোনও লিখিত নির্দেশ হাতে পাইনি।” যার জেরে কলেজের বর্তমান প্রশাসক কে, তা নিয়ে একটি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আব্দুল মকিদের আইনজীবী অমলবরণ চট্টোপাধ্যায়ের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত হাইকোর্ট বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তত দিন আব্দুল মকিদই কলেজের প্রশাসকের পদে বহাল থাকবেন। জয়দেববাবু অবশ্য বলছেন, “হাইকোর্ট থেকে কোনও লিখিত নির্দেশ আসেনি। ফলে বুঝতে পারছি না কলেজের বর্তমানে প্রশাসক মহকুমাশাসক নাকি আব্দুল মকিদই! এর জন্য অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ নেব।” আইনজীবীর চিঠি পেয়ে একই প্রতিক্রিয়া পরে ওই কলেজের প্রশাসকের দায়িত্ব পাওয়া মহকমাশাসক রত্নেশ্বর রায়ও।
গত ২৬ জানুয়ারি রামপুরহাট কলেজের তৎকালীন প্রশাসক আব্দুল মকিদ কলেজ তহবিলে লক্ষাধিক টাকা দুর্নীতির অভিযোগে কলেজেরই প্রাক্তন দুই অধ্যক্ষ, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন। দু’ দিনের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে অভিযোগ দায়ের করার কারণ দেখিয়ে তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বীরভূম জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে মহকুমাশাসক (রামপুরহাট) রত্নেশ্বর রায়কে পরবর্তী প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেন। এরপরেই ওই কলেজে দ্রুত পরিচালন সমিতি গঠন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ তারই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শনিবারই তার জন্য ভোটের দিন ধার্য হয়েছিল। ওই দিন পরিচালন সমিতির ১১টির মধ্যে তিন জন শিক্ষক প্রতিনিধি এবং শিক্ষাকর্মীদের দু’ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগের দিনই জয়দেববাবু ও রত্নেশ্বরবাবুর হাতে কলেজের আইনজীবীর ওই চিঠি ধরিয়ে দেন কলেজের অপসারিত প্রশাসক।
এই পরিস্থিতিতে রামপুরহাট কলেজে পরিচালন সমিতি গঠন হওয়া ফের আটকে গেল। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় বছর আগে ওই কলেজের পরিচালন সমিতির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। পরে সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুল মকিদকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ছ’ মাসের মধ্যে কলেজের নতুন পরিচালন সমিতি গঠন করে ফেলার নির্দেশও তাঁকে দেওয়া হয়। একাংশের অভিযোগ, পরিচালন সমিতি গঠনের জন্য কলেজে এই মুহূর্তে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই, এই ‘অজুহাতে’ আব্দুল মকিদ পরপর দু’বার নিজের প্রশাসক পদের মেয়াদ বাড়িয়ে নেন। তাঁর অবশ্য দাবি, কলেজে ভাল কাজ করার সুবাদেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশাসক পদের মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। তিনি নিজে কোনও দিনই লিখিত ভাবে ওই পদে থাকার জন্য মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করেননি।
অপসারণের পরে আব্দুল মকিদ হাইকোর্টে উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার, কলেজ পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজা, মহকুমাশাসক (রামপুরহাট) এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ দিন উপাচার্য বলেন, “বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক দেখছেন। এ বিষয়ে যা বলার তিনিই বলবেন। তবুও একটা জিনিস বলা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে প্রশাসকের পদে নিয়োগ পেয়ে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত (থানায় অভিযোগ) নেওয়ার আগে তা কর্তৃপক্ষকে একবার জানানো উচিত ছিল।” অন্য দিকে, দেবকুমারবাবু বলেন, “মামলার নোটিস সময়মতো পাইনি। তাই শুনানির দিন কাগজপত্র নিয়ে আমাদের আইনজীবী উপস্থিত থাকতে পারেননি। আমরা ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইন মোতাবেক সব রকমেরই ব্যবস্থা নিচ্ছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.