জেলার প্রথম মহিলা থানা
মেয়েদের অভিযোগ জানানোর নতুন ঠিকানা এখন পাইকপাড়া
থানায় যে কোনও অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁদের অস্বস্তিতে পড়তে হয়। পুরুষ পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে কথা বলতে পারেন না। তাই মহিলাদের দাবি ছিল, তাঁদের জন্য পৃথক থানা করা হোক। সেই দাবি মেনে রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো সিউড়িতেও একটি মহিলা থানা চালু হয়েছে।
এ বার থেকে সিউড়ি সদর এলাকার মহিলাদের যে কোনও অভিযোগ জানানোর নতুন ঠিকানা হল পাইকপাড়ায় চালু হওয়া মহিলা থানা। সিউড়ি এক বধূ সাথী রায় বলেন, “মহিলা থানা হওয়াই আমরা খুশি। সব এলাকাতেই এরকম একটি করে থানা হলে ভাল হয়। আশা করি, এখানে যখন শুরু হয়েছে তখন সবত্রই হবে।” আর এক মহিলার কথায়, “মেয়েদের কাছে যতটা খোলামেলা ভাবে সব কিছু বলতে পারা যায়, তা কোনও পুরুষের সামনে বলা সম্ভব না। যে হারে মেয়েদের উপরে নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে, তাতে প্রশাসনের তরফে এলাকা ভিত্তিক কাউন্সেলিং করলে ভাল হয়। সেই সঙ্গে মেয়েদেরকেও আরও সচেতন হতে হবে।”

যার দিকে তাকিয়ে। সিউড়ি মহিলা থানা।—নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ জানায়, সিউড়ি সদর এলাকার মহিলারা এই সুযোগ পেলেও জেলার অন্যত্র এতদিন যা ছিল তাই থাকবে। কারণ একটা থানার পক্ষে গোটা জেলার চাপ নেওয়া সম্ভব নয়। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “সিউড়ি এলাকার মহিলারা তাঁদের সমস্ত অভিযোগ এখানে জানাতে পারবেন। সিউড়ি সদর মহকুমা থানা এলাকার মহিলারাও এই থানায় তাঁদের অভিযোগ জানাতেও পারবেন। তবে তাঁরা তাদের অভিযোগ নিজ নিজ থানাতেও জানাতে পারেন। তাঁরা যেখানে সুবিধা মনে করবেন, সেখানেই অভিযোগ জানাতে পারবেন।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্য মহকুমায় যদি বড় কোনও ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে পুলিশ সুপার ওই মামলাটি সিউড়ির মহিলা থানায় স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিতে পারেন।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার কলকাতায় পুলিশের একটি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বীরভূম-সহ রাজ্যের ১০টি জেলায় মহিলা থানার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিউড়ির পাইকপাড়ায় থাকা পুলিশ ফাঁড়িকে মহিলা থানায় রূপান্তরিত করা হয়েছে। দু’টি লকআপ রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই থানায় এক ইনস্পেক্টর ৫ জন করে এসআই ও এএসআই, ১৫ জন কনস্টেবল থাকার কথা। কিন্তু এখন কর্মী বলতে এক ইনস্পেক্টর, ২ জন এএসআই, ৬ জন কনেস্টবল, ২ জন করে এনভিএফ ও হোমগার্ড রয়েছে। কোনও এসআই নেই। ডিইবি(২) পদে কর্মরত আশালতা গোস্বামীকে ওই থানার আইসি করা হয়েছে। তিনি এক সঙ্গে দু’টি দায়িত্ব সামলাবেন। শুধু তাই নয়, লাভপুর-কাণ্ডে আট জনের যে তদন্তকারী দল গঠিত হয়েছে তাতে একমাত্র মহিলা অফিসার তিনিই।
জেলায় মহিলা থানা চালু হওয়া প্রসঙ্গে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সভানেত্রী তথা প্রাত্তন জেলা সভাধিপতি অন্নপূর্ণা মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, “সিউড়িতে অনেকদিন থেকেই মহিলা সেল ছিল। এই সরকার ক্ষমতাই আশার পরেই সিউড়ির ওই মহিলা সেল তুলে দেয়।” তিনি বলেন, “পরে গুরুত্ব বুঝতে পেরেছে সে জন্য ধন্যবাদ। তবে নিরপেক্ষ হয়, তা দেখতে হবে।” এসইউসি’র মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেত্রী সাথী পাল অবশ্য বলেন, “শুধু থানা করে অপরাধের সংখ্যা কমানো যাবে না। কারণ, যারা অপরাধ করছে তারা কোনও না কোনও দলের কর্মী বা সমর্থক।” নলহাটির বাসিন্দা তৃণমূলের মনুস্মৃতি দেবনাথ বলেন, “খুব প্রয়োজন ছিল মহিলা থানার। সর্বত্রই মহিলা থানার প্রয়োজন আছে। সিউড়ি দিয়ে শুরু হল। ধীরে ধীরে রামপুরহাট, বোলপুর এলাকাতেও হবে।” তাঁর দাবি, “এর আগে এই জেলা বা রাজ্যে তেমন কিছু হয়নি। এই সরকার সবে এসেছে এবং ইতিমধ্যে অনেক দৃষ্টান্তমূলক কাজ করেছে। এটাও তার মধ্যে একটা।”
পুলিশ সুপার বলেন, “এই মুহূর্তে জেলায় আর কোনও থানার প্রস্তাব নাই। যে অফিসার ও কর্মী কম আছে, তা শীঘ্রই পূরণ হয়ে যাবে। একটু সময় লাগবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.