প্রশ্নপত্রে বদল, বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল জেলা জুড়ে
ঞ্চায়েত কর্মী ও সহায়ক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বদলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে গলসির সারদাপীঠ বিদ্যালয়ে। রবিবার গোটা জেলার সঙ্গে এই স্কুলের ১৪ নম্বর ঘরে একসঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন পঞ্চায়েতের কর্মী ও সহায়ক পদের পরীক্ষার্থীরা। সহায়কদের হলুদ ও কর্মী পদের প্রার্থীদের সবুজ রংয়ের প্রশ্ন দেওয়ার কথা ছিল। দু’টি প্রশ্নের আলাদা কোড নম্বরও ছিল। কিন্তু জনৈক শিক্ষিকা তথা পরিদর্শকের ভুলে প্রশ্ন পাল্টাপাল্টি হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন গলসি ২-এর বিডিও ধ্রুবপদ শান্ডিল্য। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “এ দিন জেলা জুড়েই ওই পদগুলির জন্য লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এক কেন্দ্রের প্রশ্ন অন্য কেন্দ্রে চলে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীদের তরফে কিছু অভিযোগ মিলেছে। সঙ্গে সঙ্গে ভুল শুধরেও নেওয়া হয়েছে। মোটের উপর পরীক্ষা শান্তিতেই হয়েছে। তবে গলসির ওই স্কুলে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে আমাদের বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
এ দিন নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পরেই গলসিতে পঞ্চায়েতের কর্মী ও সহায়ক পদে নিয়োগের পরীক্ষা শুরু হয়। ওই ঘরে ছিলেন মোট ৪২ জন পরীক্ষার্থী। এক ঘন্টা পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরে পরীক্ষার্থীরাই খেয়াল করেন প্রশ্ন পাল্টাপাল্টি হয়ে গিয়েছে। তারপরেই গোলমাল বেধে যায়। গলসি থানা থেকে পুলিশ গিয়ে পরীক্ষাথর্ীর্দের শান্ত করার চেষ্টা করে। পরে সমস্ত পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে উত্তরপত্র জমা নিয়ে তাঁদের বাড়ি চলে যেতে বলা হয়।
কাটোয়ার রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
গলসির ইরকোনার বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের কর্মী পদের পরীক্ষার্থী গৃহবধু পায়েল সাঁই বলেন, “আমাদের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল দুপুর ১২টা নাগাদ। কিন্তু প্রায় আধ ঘণ্টা পরে আমরা উত্তরপত্র ও হলুদ রংয়ের প্রশ্ন হাতে পাই। কর্মীদের ৪৩ নম্বরের ও সহায়কদের ৮৫ নম্বরের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। দুটি পরীক্ষার সময় ছিল এক ঘন্টা ও এক ঘন্টা চল্লিশ মিনিট। এক ঘন্টা পরার পরে আচমকা ওই ঘরের গার্ড দিদিমনি বলেন, যাঁরা সবুজ রংয়ের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের এখুনি খাতা জমা দিয়ে দিতে হবে। তখন দেখি, আমাদের হলুদ রংয়ের প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। তাতে ৮৬ নম্বরের জন্য উত্তর দিতে হচ্ছে। তখনই জানাজানি হয় প্রশ্ন পাল্টে গিয়েছে। আমরা নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানালে আমাদের হলের ভেতর আটকে রাখা হয়। পরে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আমরা একটি আবেদন বিডিওর হাতে দিয়ে চলে আসি।”
বিডিও বলেন, “পরীক্ষা কী ভাবে নিতে হবে তার বিস্তারিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল পরিদর্শকদের। তবুও ওই স্কুলে ভুল হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সমস্ত উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জমা নেওয়া হয়েছে। তবে ওই ঘরের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নতুন করে নেওয়া হবে কী না, তা ঠিক করবেন অতিরিক্ত জেলাশাসক।”
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “আমি শুনেছিলাম, যে’কটি জায়গায় গোলমাল হয়েছে সেখানে ভুলত্রুটি সামলে নেওয়া গিয়েছে। পরে শুনি ওই ঘরে কর্মী ও সহায়কদের পরীক্ষার প্রশ্ন পাল্টাপাল্টি হয়ে গিয়েছে। যদিও প্রশ্নগুলি প্রায় একই ধরনের, তবু পরীক্ষা নতুন করে নেওয়া হতে পারে। তবে আমরা ওই বিষয়ে একটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব।”
তবে ওই ঘরের পরিদর্শক তথা ওই স্কুলের শিক্ষিকা শুভ্রা সরকার এই বিষয়ে কেনও মন্তব্য করতে চাননি।
কাটোয়াতেও নির্দিষ্ট সময়ে প্রশ্নপত্র না পেয়ে বিক্ষোভ দেখালেন পঞ্চায়েতের অ্যাকাউন্টস ক্লার্ক পদের পরীক্ষার্থীরা। রবিবার কাটোয়ার রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে পঞ্চায়েত সহায়ক ও কর্মী পদের পরীক্ষা চলছিল। হাজির ছিলেন প্রায় সাড়ে চারশো পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুপুর ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সহায়ক পদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এলেও অ্যাকাউন্টস ক্লার্ক পদের কোনও প্রশ্ন আসেনি। ফলে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে কেন্দ্রে মধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অ্যাকাউন্টস ক্লার্ক পদের ২৩৩ জন পরীক্ষার্থী। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীদের একাংশ ঘরে ঢুকে সহায়ক পদের পরীক্ষার্থীদের খাতা ও প্রশ্নপত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের বাধা দিতে গেলে প্রশাসনের সঙ্গে বচসা, পরে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। নবদ্বীপের এক পরীক্ষার্থীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। যদিও প্রশাসন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে প্রশ্নপত্রের প্রতিলিপি নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) ঋষিকেশ মুদি বলেন, “কাটোয়া ও খণ্ডঘোষে প্রশ্নপত্র পাঠানো নিয়ে সমস্যা হয়। গোলমালও হয়। তবে পরে সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.