বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল জেলার নানা এলাকায়। কোথাও হুমকি, কোথাও বাসে হামলা চালিয়ে তৃণমূলের লোকজন তাদের কর্মী-সমর্থকদের যেতে দেয়নি বলে অভিযোগ সিপিএমের। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
রবিবার সকালে ব্রিগেড যাওয়ার পথে মন্তেশ্বরে সিপিএমের চারটি বাস আটকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের অভিযোগ, কুসুমগ্রাম, উজনা, সিজনা-সহ নানা গ্রাম থেকে তাদের তিনশোরও বেশি সমর্থক চারটি বেসরকারি বাসে ওঠেন। কুসুমগ্রামের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ে মেমারি-মালডাঙা রোডে বাস আটকে জোর করে যাত্রীদের নামিয়ে দেন তৃণমূলের লোকজন। স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক চৌধুরী মহম্মদ হেদায়তুল্লা বলেন, “তৃণমূলের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। অন্য পথে ব্রিগেডে পৌঁছেছেন ওই বাসের যাত্রীরা।” |
তাঁরা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে পুলিশে কোনও অভিযোগ করেননি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের মন্তেশ্বর ব্লক সভাপতি সজল পাঁজার দাবি, “বাসের কর্মীরা আসলে আইএনটিটিইউসি-র সমর্থক। তাঁরা বাসে সিপিএমের পতাকা বাঁধতে দেখে বাস চালাতে চাননি। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে।”
এ দিন মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা গ্রামেও ব্রিগেডে যাওয়ার বাস ধরতে বেশ কিছু সিপিএম কর্মী রাস্তার উপর দাঁড়িয়েছিলেন। গুসকরা থেকে ট্রেনে হাওড়া যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। তখন এক তৃণমূল কর্মী তাঁদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তবে সিপিএমের লোকজন তাড়া করায় তিনি পালান। পরে সিপিএম মিছিল করে কাশেমনগরে এসে রাস্তার উপরে থাকা তৃণমূল সমর্থকদের দোকানপাট ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। ততক্ষণে জড়ো হয়ে যায় তৃণমূলের লোকেরাও। দু’পক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। তিন-চার জন জখম হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ায় ওই সিপিএম কর্মীদের অবশ্য আর ব্রিগেড যাওয়া হয়নি। |
ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার গোগলা এলাকায় এ দিন ভোর ৫টা নাগাদ দু’টি বাসে চড়ে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকেরা ব্রিডেগে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন। সিপিএমের অভিযোগ, সেই সময়ে একটি বাসে ভাঙচুর চালানো হয়। দলের গোগলা লোকাল সম্পাদক শিশির ঘোষের কথায়, “ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। লাঠি দিয়ে বাসের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। বিপদ বুঝে দলীয় কর্মী-সমর্থকরা নেমে পড়েন।” বাসের চালক ও খালাসিকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ শিশিরবাবুর। তিনি জানান, ফোন করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশ পৌঁছনোর আগেই ভাঙচুরে জড়িতেরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় কারা জড়িত, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। শিশিরবাবুর দাবি, “আমাদের সমর্থকদের ব্রিগেড যাওয়া আটকাতে পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূল এই ঘটনা ঘটিয়েছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কাঞ্চন দাসের পাল্টা দাবি, বাসটি একটি সাইকেল আরোহীকে ধাক্কা মারায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। |