আয়ের সুযোগ বাড়াতে চালু কমিউনিটি কলেজ
প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি পড়ুয়াদের রোজগারের সুযোগের সম্ভাবনা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আসানসোলে চালু হল ‘কমিউনিটি কলেজ’। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ও রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের যৌথ উদ্যোগে শনিবার আসানসোল বিবি কলেজে এই কলেজের উদ্বোধন হয়। শহরে এরকম একটি কলেজ চালু হওয়ায় খুশি এলাকার বণিক মহল ও উদ্যোগপতিরা।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্পাঞ্চলের বেকার যুবক-যুবতীদের এখানে বৃত্তিমূলক ও পেশা সহায়ক পাঠ্যক্রম পড়ানো হবে। তিন বছরের পাঠ্যক্রম শেষে পড়ুয়ারা স্নাতক ডিগ্রি পাবেন। তা সরকারি ও বেসরকারি শিল্প সংস্থায় চাকরি পেতে তাদের সাহায্য করবে। স্বরোজগার প্রকল্প শুরুর ক্ষেত্রেও বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে।
বিবি কলেজের অধ্যক্ষ অমলেশ চট্টোপাধ্যায় জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরনের কলেজ আগেই হয়েছে। এ রাজ্যে এই উদ্যোগ এখানেই প্রথম হল। উচ্চ শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ রাজ্যে ছ’টি ডিগ্রি কলেজ ও সাতটি পলিটেকনিক কলেজে প্রাথমিক ভাবে এই পাঠ্যক্রম পড়ানো হবে। কী রকম সাড়া মিলছে, তা দেখে আগামী দিনে আরও কিছু কলেজে শুরু হবে। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছেতেই এখন কলেজগুলিতে এই ধরনের উদ্যোগ হচ্ছে।
অমলেশবাবু বলেন, “বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩৫টি কলেজের মধ্যে একমাত্র আমরাই এই পাঠ্যক্রম পড়ানোর সুযোগ পেয়েছি।” তিনি জানান, এই পাঠ্যক্রমের নাম ‘ব্যাচেলর অব ভোকেশনাল’ (বি ভোক)। প্রথমে দু’টি বিষয় পড়ানো হবে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি এবং অর্গানিক ফার্মিং অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং।
‘বি ভোক’-এর সুবিধা
রাজ্যে ৬টি ডিগ্রি ও ৭টি পলিটেকনিক
কলেজে চালু হবে এই ধরনের পাঠ্যক্রম।
আসানসোলের কলেজে আপাতত দু’টি বিষয় পড়ানো হবে।
তিন বছরের পাঠ্যক্রম।
দৈনিক বেতন ৫০ টাকা।
ইউজিসি ইতিমধ্যে মঞ্জুর করেছে প্রায় তিন কোটি টাকা।
পড়া শেষে তিন মাস নানা শিল্প সংস্থায় প্রশিক্ষণের
সুযোগ। মিলবে মাসিক হাজার টাকা ভাতা।
এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ইতিমধ্যে প্রায় তিন কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। দু’টি পাঠ্যক্রমে মোট ৬০টি আসন আছে। মাসিক ৫০ টাকা বেতন দিয়ে পড়তে হবে।
অধ্যক্ষ অমলেশবাবু আরও জানান, যে সব ছাত্রছাত্রী স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার সময়ে নানা কারণে পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁরাও এই পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। পড়াশোনার শেষে প্রত্যেকেই তিন মাসের জন্য বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। সেই সময়ে পড়ুয়ারা মাসিক এক হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। অমলেশবাবু জানান, এই শিল্পাঞ্চলে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীর দরকার হয়। তাই এই পড়ুয়াদের পেলে শিল্প সংস্থাগুলিরও নিয়োগ করা সম্ভব হবে। অমলেশবাবু দাবি করেন, এই পাঠ্যক্রম পাশ করা পড়ুয়াদের চাকরির বিষয়টি পাকা করতে কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ সইও করেছেন তাঁরা।
এই কলেজের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন আসানসোল মহকুমার একাধিক বণিক সংগঠনের কর্তারা। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, “হাতের কাছে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কর্মী থাকলে দু’পক্ষেরই সুবিধা। অপেক্ষাকৃত কম খরচে কর্মী মিলবে। আবার বেকার যুবকেরা ঘরের কাছেই রোজগারের সুযোগ পাবেন।” আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সুব্রত দত্তের কথায়, “এখান থেকে পাশ করা পড়ুয়ারা বিভিন্ন শিল্প সংস্থা থেকে ছোটখাট কাজের বরাত নিয়ে স্বরোজগার প্রকল্পে নামতে পারবেন। এই শিল্পাঞ্চলের পড়ুয়াদের জন্য যে ধরনের পেশা সহায়ক পাঠ্যক্রম থাকা উচিত, তা এত দিনে চালু হয়েছে বলেই মনে করছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.