কলকাতায় রাজ্য প্রতিবন্ধী ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে ফেরা দার্জিলিং জেলার প্রতিবন্ধী কিশোর-কিশোরীদের হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগ উঠল। শুক্রবার দার্জিলিং মেলে ওঠার সময় শিয়ালদহ স্টেশনে ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ ট্রেনের কর্তব্যরত গার্ড বরুণ মজুমদারের বিরুদ্ধে। শনিবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে ঘটনার প্রতিবাদে স্টেশন ম্যানেজারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান ওই প্রতিযোগিরা। তাঁর কাছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেন প্রতিবন্ধীরা। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার অজিতেশ দাস বলেন, “ঘটনাটি শিয়ালদহ স্টেশনে ঘটেছে। তা পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অভিযুক্ত গার্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে সেখান থেকে জানানো হয়েছে।” যদিও সন্ধ্যায় শিয়ালদহর স্টেশন সুপারিন্টেন্ডেন্ট আনন্দ বর্ধন দাবি করেন, “আমার কাছে এখনও কেউ অভিযোগ করেননি।” |
রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর দার্জিলিং জেলা শাখার সভাপতি মণি থাপা জানান, শুক্রবার রাতে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে তাঁদের সদস্যদের আসন সংরক্ষণ করা ছিল। সেই মতো শিয়ালদহে দার্জিলিং মেলে প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় উঠতে গেলে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করলে কয়েক জনকে মারধরও করা হয়। সেই সময়ে বরুণবাবুর ধাক্কায় এক জন পড়ে যান বলেও দাবি অভিযোগকারীদের। ওই প্রতিবন্ধী কিশোরীর নাম জসমিনা বারলা। সে ভাল করে হাঁটতে পারে না। পরে অবশ্য শিয়ালদহ স্টেশনের কর্তব্যরত রেলকর্মীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। উপরন্তু, ওই দলটি কলকাতায় যাওয়ার সময় নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনেও রেল নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা তাঁদের হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। সংগঠনের দার্জিলিং জেলা যুগ্ম সম্পাদক লিটন ভট্টাচার্য বলেন, “যাওয়ার সময়েও আরপিএফের কর্মীরা প্রতিবন্ধীদের সংরক্ষিত জায়গা সাধারণ যাত্রীদের বিক্রি করে দিয়েছিল। আমাদের বাধার মুখে পড়ে তাঁরা শেষ পর্যন্ত পিছু হঠে। কিন্তু বারবার এ রকম ঘটনা কেন ঘটছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার।” যদিও এই ঘটনাটি জানেন না বলে জানিয়েছেন রেল সুরক্ষা বাহিনীর নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের ইন্সপেক্টর এস খান। স্টেশন ম্যানেজার অজিতেশবাবু অবশ্য বলেন, “এক জনের পরিচয়পত্রে একাধিক লোক উঠে যাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। পরে তা মিটে যায়। ঝামেলা হয়নি।”
গত ৭ জানুয়ারি কলকাতার সল্টলেকে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার মাঠে রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। সেখানে রাজ্যের সব জেলা থেকে প্রতিবন্ধীরা যোগ দেন। দার্জিলিংয়ের প্রতিনিধিরাও তাতে যোগ দিয়ে মোট পাঁচটি পুরস্কার পায়। ফেরার সময় শিয়ালদহ স্টেশনে এই ঘটনা ঘটেছে। এ দিন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নেমে ক্ষোভে ফুঁসছিলেন মাটিগাড়ার সত্যজিত দাস, লিউসিপাখরির গোপাল বর্মন-সহ তাদের অভিভাবকেরাও। সকলেরই দাবি, প্রতিবন্ধীদের হেনস্থা করা বন্ধ করা হোক। |