বাঁ হাতটা এমনিতে অপবিত্র, বাঁ হাতে দিতে নেই, নিতে নেই, কিন্তু ভাইফোঁটার দিনে কী করে যেন পবিত্র হয়ে যায়। বাঁ হাতের কড়ে আঙুলেই ফোঁটা দেয়া হয়। আর, বাঁ হাতটা লাগে ফাঁড়া কাটানোয়। ছোটবেলায় দেখতাম, অনেকেই গঙ্গায় নেমে বাঁ হাতের কড়ে আঙুলটা দিয়ে জলে দাগ কাটছেন। ফাঁড়া কাটানোর মন্ত্রও মনে পড়ে একটু একটু। ‘গঙ্গা গঙ্গা হরিহর আমার খোকার ফাঁড়া হর যমং নিমংকর পাপং ধারংকর...’ এ ভাবে শুরু হত। শেষ কালে ছিল যা আমার খোকার ফাঁড়া গঙ্গাজলে ভেসে যা।
আমাদের ফাঁড়ামাসির খুব নাম ছিল ফাঁড়া কাটানোর ব্যাপারে। গঙ্গার জলে নেমে উনি অনেক ক্ষণ ধরে অনেকের ফাঁড়া কাটাতেন। দেখতাম বাঁ হাতের কড়ে আঙুলটা দিয়ে জলের ওপর কেবল দাগ কেটে চলেছেন, এবং ঠোঁট নড়ছে। মন্ত্র পড়ছেন। ফাঁড়ামাসির ছিল ডবল কড়ে আঙুল। মানে কড়ে আঙুলটার পাশ দিয়ে আর একটা আঙুল গজিয়েছিল। ওই কারণেই নাকি ওঁর ফাঁড়া কাটানোয় এক্সট্রা পাওয়ার ছিল। এক বার চোলাই মদ খেয়ে বেশ কয়েক জন আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে জেলেপাড়ারও ছ’সাত জন ছিল। ফাঁড়ামাসি ওদের সবার ফাঁড়া কাটিয়ে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন, যারা ফাঁড়া কাটায়নি, তারা নাকি বেঁচে ফেরেনি। এর পর থেকেই ফাঁড়ামাসির নাম ফাটে। উনি ফ্রি সার্ভিস দিতেন। কিছু দিতে চাইলেও নিতেন না। বলতে শুনেছি পয়সা দিয়ে জেবন কিনবি কি রে বোকা, জেবন কি লে লে বাবু ছ’আনা? মদ্যপান জনিত বিপদ সংক্রান্ত ফাঁড়া কাটানোতেই তিনি স্পেশালিস্ট হয়ে উঠেছিলেন। এক বার জ্যাবজ্যাবে সিঁদুর-কপালে তরুণী বধূকে দেখেছিলাম, বলছে অ মাসি, আমার স্বামী মদ খেয়ে লরি চালায়, দু’বার অ্যাকসিডেন করেছে, আমার স্বামীর ফাঁড়া কেটে দাও। মাসি জিজ্ঞাসা করলেন কী নাম, কী গোত্তর? বধূটি স্বামীর নাম ধরবে না, মাথা চুলকে বলে, ওই যে গো, তিন অক্ষরের নাম। ওর নামের মধ্যেই মদ রয়েছে, শেষ অক্ষর দন্তন্ন। মাসি বলে বুঝেচি। মদন। গোত্তর? গোত্তরটাও বড় খারাপ। মদগেল্লো গোত্তর (এখন বুঝি, ‘মৌদ্গল্য’ গোত্র)। ফাঁড়ামাসি বলেছিলেন বড় খারাপ কেস মা গো, নামে গোত্তরে মদ মিশে আছে। আমাকে রোজ রোজ ওর ফাঁড়া কাটাতে হবে।
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য
ক্রমশই ফাঁড়া কাটানোর লিস্টি লম্বা হচ্ছিল, আর ফাঁড়ামাসির কাজ বেড়ে যাচ্ছিল। এক দিনে তো ফাঁড়া কাটে না। অনেক দিন ধরে এই দুরূহ সুকর্ম করতে হয়। আর আশ্চর্য, উনি সবার নাম-গোত্র মনেও রাখতে পারতেন। আমাদের পাড়ার এক জন অভিভাবক ছিলেন। জটাগুন্ডা নামেই উনি বিখ্যাত ছিলেন। এখনকার দিন হলে ওকে গুন্ডা বলা হত না, সমাজসেবী বলা হত। ‘পাড়ায় ঢুকলে ঠ্যাং খোঁড়া করে দেব’ বলার এক্তিয়ার অর্জন করেছিলেন জটাদা। প্রকৃতই মদগেল্লো গোত্রের। চুর হয়ে থাকতেন। খাদ্যনালিতে কঠিন কিছু গন্ডগোলের কারণে জটিল অপারেশনে যেতে হয়েছিল। ফাঁড়ামাসি ওঁর ফাঁড়া কাটিয়ে দিলেন। বেঁচে ফিরলেন, তবে পেটে ফুটো। পেটে ফানেল বসিয়ে তরল খাদ্য দিতে হত। এর পর থেকে উনি ‘পেটকাটা জটা’ নামে বিখ্যাত হলেন। ফানেলের মধ্যে হাফ বোতল কাঁচা বাংলা ঢেলে দিয়ে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিতেন। বলতে শুনেছি, ভগ্নী নিবেদিতা আর ফাঁড়ামাসি বাগবাজারের গৌরব। বলতে শুনেছি ফাঁড়ামাসির মর্মর মূর্তি খাড়া করে দেব আমি।
প্রয়াত প্রফুল্লকান্তি ঘোষ ছিলেন যুগান্তর পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত কংগ্রেস নেতা। উনি ‘শত ঘোষ’ নামেই পরিচিত ছিলেন। সত্তরের দশকে ওঁর দলেরই কিছু বিক্ষুব্ধ কর্মী শতদাকে রাস্তায় ফেলে প্রহার করে। ফাঁড়ামাসি তখন কংগ্রেস অফিসে ঢুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ওগো, তোমরা কেউ শতবাবুর গোত্তর জানো? ফাঁড়া কাটাব। ওঁর গোত্র জানতে পেরেছিলেন কি না জানি না, কিন্তু শতবাবু বেঁচে ফিরেছিলেন। ওঁর বেঁচে ফেরার পিছনে ফাঁড়ামাসির অবদান ইতিহাসে লেখা নেই গঙ্গাজলে ধুয়ে গেছে। এক বার ফাঁড়ামাসিকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, খামোকা শতদার ফাঁড়া কাটাতে গেলে কেন? ফাঁড়ামাসি বলেছিলেন, ওঁর জন্যই তো দুটো ভাত পাই। আমার লালুকে তো উনিই কাজ পাইয়ে দিলেন।
লালু ছিল ওঁর বোনপো। নিজের সন্তান ছিল না। লালুই ওঁকে দেখত। লালু খুন হয়ে গেল। খতমের কাল তখনও শেষ হয়নি। পোস্টারও পড়েছিল ‘পুলিশের খোচর লালুকে খতম করার জন্য বিপ্লবী অভিনন্দন’। লালুর হত্যাকারী সন্দেহে তিন-চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর মধ্যে এক জন ছিল জটাগুন্ডার ভাইপো বাবলা। তার মা’কে নিয়ে জটাদা ফাঁড়ামাসির কাছে গেল। বলল, বাবলাটার ফাঁড়া কাটিয়ে দাও মাসি। বাবলু তোমার লালুকে খুন করেনি, এমনি এমনি ধরেছে। পুলিশ অনেক সময় কোর্টে তোলে না, এমনিই মেরে দেয়...।
ফাঁড়ামাসি বলেছে কী করি? ধম্মসংকট। হতে পারে, ওই মুখপোড়াটাই আমার লালুকে মেরেছে। কিন্তু ওর মা যদি বলে ছেলের ফাঁড়া কাটিয়ে দাও বুন, আমি কী করি বল দি’নি? এর পর ফাঁড়ামাসি গঙ্গায় কোমরজলে দাঁড়িয়ে ছ’আঙুল-সম্পৃক্ত বাঁ হাতে জলস্রোতে দাগ কেটে বলেছে, গঙ্গা গঙ্গা হরিহর বাবলার ফাঁড়া হর...। বলেছে, জেবন লেয়া জলভাত, জেবন দেয়াটা?

চা জিনিসটার সঙ্গে বাঙালির সম্বন্ধ করে বিয়ের তুলনা করা যায়— ছোটবেলায় নিষিদ্ধ, কিন্তু পরবর্তী কালে মা হাতে করে তুলে দেন। ‘জাগো বাঙালি’ বললে বাঙালি উত্তর দেয়, ‘জেগেছি, চা দে!’ মজার কথা, উনবিংশ শতাব্দীতেও বাঙালির সঙ্গে চায়ের পরিচয় ছিল না। ‘চা’ আর তার ইংরাজি প্রতিশব্দ ‘টি’ দুটোই আদপে চিনে শব্দ। ‘চা’ শব্দটা পর্তুগিজদের হাত ধরে ভারতে এসেছিল। আর পর্তুগিজরা এই শব্দের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল ম্যান্ডারিন চিনে যেখানে বাণিজ্য করতে গিয়েছিল তারা। ‘টি’ শব্দটা আবার ওলন্দাজদের কাছ থেকে ইউরোপ পেয়েছিল, আর ওলন্দাজরা শব্দটা শিখেছিল অ্যাময় চিন থেকে। আজ সারা পৃথিবীতে ভারতীয় চায়ের এত কদর, কিন্তু ভারতে চায়ের চাষ শুরু হয় মাত্র ১৫০ বছর আগে। চায়ের আসল বাড়ি চিন। ঠিক কবে থেকে ওখানে চায়ের চল বলা খুব শক্ত তা বেশ কয়েক হাজার বছর হবেই। জনশ্রুতি, বর্তমান চায়ের জনক হলেন চিনের প্রবাদপ্রতিম সম্রাট শেন্নং যিনি চিনে ভেষজবিদ্যারও জনক ছিলেন। আর এক গল্প অনুযায়ী, চাং বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বোধিধর্ম এক বার ধ্যানে বসে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সেই ঘুম ন’বছর পর ভাঙে। নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে বোধিধর্ম নিজের চোখের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন, আর সেই চোখের পাতা থেকেই চা-পাতার জন্ম।
চা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার অনেক আগে থেকেই চায়ের সঙ্গে ইউরোপের, বিশেষ করে ইংল্যান্ডের সম্পর্ক। চিনের সঙ্গে ইংল্যান্ডের বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি হয় গত সহস্রাব্দের মাঝামাঝি। সেই বণিকদের হাত ধরেই চা চিন থেকে ইংল্যান্ড পাড়ি দেয়। সেই জমানায় অভিজাত পরিবারের নারীকুল বিকেলে আড়মোড়া ভাঙতেন ফরাসি মিঠে মদ খেয়ে সেটা আবার বিস্কুট ডুবিয়ে! এই খোয়ারিটা ছিল ব্রিটিশ পুরুষকুলের এক্কেবারে না-পসন্দ সেটার কারণ ঠিক মদ্যপানের প্রতি অনীহা নয়। তাদের আপত্তি ছিল চিরশত্রু ফরাসিদের তৈরি মদ্যপানে। কিন্তু কিছু করারও ছিল না। চায়ের সঙ্গে পরিচয় হতে সাহেবরা আর দেরি করলেন না, তাকে ঢুকিয়ে দিলেন বাড়ির অন্তঃপুরে। আর অভিজাত পরিবারকুলের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সুদৃশ্য চিনামাটির পেয়ালা-পিরিচেরও আমদানি করা হল। নিট ফল চা খুব কম দিনেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ছিল চিন দেশের সঙ্গে একচেটিয়া কারবার ১৮১১ থেকে ১৮১৮-র মাঝে তাদের সে দেশ থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল ৭২,১৬৮,৫৪১ পাউন্ড, আর তার মধ্যে চা ছিল ৭০,৪২৬,২৪৪ পাউন্ড! কিন্তু এও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বুঝে গিয়েছিল এই লাভের গুড় বেশি দিন খাওয়া যাবে না। তাই এ বার তারা চায়ের আমদানির জন্যে ভারতের দিকে নজর দিল। ভারত এমন এক দেশ যার কিছু অংশের সঙ্গে চিনের চা-চাষের রাজ্যগুলোর মিল আছে। বাকিটা ইতিহাস! নীল চাষ নিয়ে যখন প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গেছে এই বাংলায়, খানিক উত্তরে নীরবে রক্তপাত হয়ে গেছে বাংলা ও অসমের পাহাড়ের পাদদেশে। বুদ্ধিমান ইংরেজরা জানত, পাহাড়ের খবর এতটা দূরে আসবে না। নীল চাষ নিয়ে ওরা পিছু হটল এ দেশে চায়ের ব্যবসা ভাল ভাবে চালু করে, তবেই। আর সেখানেই থামেনি তারা চায়ের সবচেয়ে বড় বাজারও সযত্নে তৈরি করেছিল বাড়ি বাড়ি গিয়ে চা খাইয়ে যাতে মাছের তেলে দিব্যি আরও বড় মাছ ভাজা যায়, লাভের অংশ পৌঁছয় নিজেদের দেশে।

১২০০০
অন্তত যত বছর পুরনো
মানুষের বেড়াল
পোষার ইতিহাস
১২৭৯০৪০০০
ভারতে প্রতি বছর যত লিটার
গরুর দুধ উৎপাদিত হয়।
পশ্চিমবঙ্গে হয় ৪৬৭২০০০ লিটার
৫২
ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড-এর
হয়ে অভিষেক ম্যাচে রেকর্ড সংখ্যক
যতগুলো পাস খেললেন হুয়ান মাতা।
মোট পাসের ৮৬.৫%ই ছিল নির্ভুল

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক
সমীক্ষায় বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত
শহরের তালিকায় বেজিংকে
হটিয়ে যত নম্বরে নয়াদিল্লি
৮.৯৩
যত কিলোমিটার পথে শুরু
হল ভারতের প্রথম মোনোরেল,
মুম্বইয়ের ওয়াডালা থেকে চেম্বুর
পর্যন্ত। পরে চলবে ১৯.১৭
কিলোমিটার, বিশ্বে দ্বিতীয়
বৃহত্তম পথে
১৩২০০০
এ বছর অস্ট্রেলীয় ওপেন
জেতায় চিনের হুবেই প্রদেশ
যত মার্কিন ডলার পুরস্কার
দিল টেনিস খেলোয়াড় লি না-কে
৫৬
যতগুলো বইয়ের স্টল
ছিল ১৯৭৬ সালের
প্রথম কলকাতা বইমেলায়।
টিকিটের দাম ছিল ৫০ পয়সা
২২৫
আইআইএসসি বেঙ্গালুরুতে একটি মস্তিষ্ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়তে যত কোটি টাকা দান করলেন ইনফোসিস-এর এগজিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান ক্রিস গোপালকৃষ্ণন


সী


রা
য়
তোমার পুলিশ ট্রিগার-হ্যাপি আমার পুলিশ মিষ্টি
তোমার ছিল কটমটে চোখ আমার শুভদৃষ্টি
সিংহাসনের দেওয়ালে পিঠ যেমনি গেছে ঠেকতে...
বলছে সবাই, আমায় নাকি তোমার মতোই দেখতে
মৃত্যুতে খুব কলঙ্ক ভাই। উপায় কী তা মোছার?
খাস প্রাকৃতিক ডেঙ্গি নিয়ে হ্যাভক অপপ্রচার!
মিথ্যেবাদী মিডিয়া সব রটায় নানা ধরন
বাধ্য হয়ে বিবৃতি দেন মহান মহাকরণ
কর্নাটকে মরছে বেশি, বঙ্গে মোটে দো...চার...



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.