ধাপার কাছে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে এক তরুণীর শ্লীলতাহানি, তাঁকে মারধর এবং তাঁর সঙ্গীকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার, সরস্বতী পুজোর সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটলেও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে তার তিন দিন পরে, শুক্রবার সন্ধ্যায়।
অভিযোগকারী ওই তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, লোক জানাজানির হওয়ার ভয়ে প্রথমে তাঁর বাড়ির লোকজন থানায় যেতে রাজি ছিলেন না। তবে ওই ঘটনার পরে তাঁর সঙ্গী যুবকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই ঘটনার পরের দিন, বুধবার ওই যুবকের বাবা সায়েন্স সিটির কাছে প্রগতি ময়দান থানায় একটি নিখোঁজ-ডায়েরি দায়ের করেন। তার পরেই ওই তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তরুণীর বক্তব্যে কিছু অসঙ্গতি আছে বলে মনে করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর বাড়ি ধাপার কাছে পোড়া বস্তিতে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গী ওই যুবকের সঙ্গে প্রতিমা দেখতে বেরোন তিনি। তাঁর সঙ্গী যুবকের বাড়ি বেলেঘাটা এলাকায়। তরুণীর অভিযোগ, রাত সওয়া ৯টা নাগাদ তিন মত্ত যুবক প্রথমে তাঁদের পথ আটকায়। তরুণীর কথায়, “ওই তিন যুবককে সরে যেতে বললে ওরা নানা রকম অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। তার প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করে।”
ওই তরুণী বলেন, “আমার বন্ধুকেও ওরা রাস্তায় ফেলে পেটায়। সেই সময়ে পালাতে গিয়ে আমি রাস্তার ধারের খালে পড়ে যাই।” ওই তরুণী বলেন, “ওরাও খালে নেমে আমার চুলের মুঠি ধরে টেনে তোলে। আমার মুখ চেপে রাস্তায় টানতে থাকে। কোনও রকমে ওদের খপ্পর থেকে পালিয়ে আমি একটি বস্তিতে আশ্রয় নিই।” ওই যুবকেরা তাঁর শাড়ি ও হাত ধরেও টানাটানি করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন ওই তরুণী। অভিযুক্ত তিন যুবক তাঁর পরিচিত নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনার পরে নিখোঁজ হয়ে যান তরুণীর সঙ্গী ওই যুবক। তবে তিনি এখন গয়ায় রয়েছেন বলে শনিবার জানতে পারে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের একটি দল যাচ্ছে সেখানে।
এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার দেবব্রত দাস জানান, ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তবে ডিসি বলেন, “তরুণীর বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে প্রাথমকি ভাবে আমাদের মনে হয়েছে। তা সত্ত্বেও তাঁর অভিযোগ মতোই আমরা তদন্ত করেছি।”
তা ছাড়া, ওই তরুণীর সঙ্গী যুবক ই এম বাইপাস লাগোয়া ওই এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পরে গয়ায় পৌঁছলেন কী করে এবং কী কারণে, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। |