জমির বিক্রির দাম নিতে ডেকে এক জমি ব্যবসায়ীকে আটক করে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের ছক কষে ধরা পড়লেন মামা ও ভাগ্নে। বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ অসম পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে বরপেটা জেলার ভেলনা এলাকা থেকে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় রাজগঞ্জ ব্লকের দশদরগার ঘোষপাড়ার বাসিন্দা জমি ব্যবসায়ী ফয়জর আলিকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম হারুল আলি এবং ইকবাল মোস্তাফা। তারা সম্পর্কে মামা ভাগ্নে।শুক্রবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালতে তোলার পর ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ ৫ দিন নিজেদের হেফাজতে নেয়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অভিজিৎ দাস বলেন, “আরও কয়েক জন জড়িত রয়েছে। অসমের যে মহিলা ব্যবসায়ীর জমি কিনতে আসেন তার হদিস মেলেনি।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফয়জল দশদরগা, ফুলবাড়ি এলাকায় জমির দালালি করে রোজগার করেন। তাঁর নিজের দুই ছেলে এক মেয়ে থাকলেও দেড় বছর আগে গোলাপ হোসেন নামে এক যুবককে নিজের ‘ধর্ম ছেলে’র মর্যাদা দিয়ে বাড়িতে রাখেন। ওই যুবক বাড়ির কাজ ছাড়া তাঁকে কেনাবেচার কাজে সাহায্য করত। সম্প্রতি গোলাপের সূত্র ধরে রিনিমা বেগম নামে অসমের বরপেটার ভেলনা এলাকার এক মহিলা বেলাকোবায় ফয়জলের নিজস্ব ১৫ কাঠা জমি দেখে পছন্দ করেন। দাম ঠিক হয় ২০ লক্ষ টাকা। ওই জমি ব্যবসায়ী জানান, মহিলা ফিরে যাওয়ার পরে গত ১৮ ডিসেম্বর ফোনে যোগাযোগ করেন। তার বরপেটার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। গোলাপকে নিয়ে বরপেটায় যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে গোলাপ উধাও হয়ে যায়। ফয়জর এ দিন বলেন, “ওরা মারধর করে আমাকে আটকে রাখে। বাড়িতে ফোন করে বলতে বলে ১৫ লক্ষ টাকা না পাঠালে খুন করা হবে। টাকা পাঠানোর জন্য তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দেয়।” ফয়জরের স্ত্রী তনজিনা বেগম জানান, প্রতিদিন ফোন করে ওরা স্বামীকে খুনের হুমকি দিত। নিরুপায় হয়ে তিন দফায় ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। পরে ৩০ ডিসেম্বর কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার তদন্তে নেমে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং মোবাইল ফোনে আড়ি পেতে দুষ্কৃৃতীদের হদিস পায়। এর পরে অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে বরপেটার ভেলনা এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ফয়জরকে উদ্ধার করে সেখান থেকে হারুল আলি এবং ইকবাল মোস্তাফা নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পালিয়ে যান রিনিমা বেগম এবং গোলাপ হোসেন। পুলিশ জানায়, গোলাপ হোসেনের আসল নাম ইকবাল আলি।
|