পৌষ, মাঘে বেলায় গৃহস্থের বাড়ির ভিতর থেকে ভেসে আসত ঢেঁকির শব্দ। সকাল থেকে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল এমনকি সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত ধান থেকে চাল তৈরির এই কাজ। মাঠ থেকে তোলা নতুন ধান ঢেঁকিতে ভেনে চাল তৈরির এমনটাই রেওয়াজ ছিল। সময়ের তালে সব কিছুর সঙ্গে এই রেওয়াজও বাতিল হয়ে গিয়েছে।
আজকের দিনে হারিয়ে যাওয়া এমন কিছু বিষয় নিয়ে স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তীতে সম্প্রতি তিন দিনের একটি প্রদর্শনী হয়ে গেল পুরুলিয়ার নপাড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। শুধু ঢেঁকির কেরামতিই নয়, রোদ বা বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে কচি বাঁশের কঞ্চি থেকে বানানো সেই বৃহৎ আকারের ছাতাও ছিল এখানে। এখন আর পুরুলিয়ার হাটে-বাজারে ওই ছাতা দেখা যায় না। অথচ এক সময় ওই ছাতারই ব্যবহার ছিল গ্রামে-গঞ্জে। ছিল গাছের পাতা থেকে তৈরি করা বিশাল আকারের ঘঙ। একসময় গোয়ালারা পোয়া, সের, পুইলার মতো পাত্র দিয়ে দুধ মেপে বিক্রি করতেন। চুনাপাথর পুড়িয়ে ঘুষিকের চুন তৈরি, সেই চুনই বিভিন্ন পানের দোকানে পৌঁছত। অথবা ধান থেকে কুটে কুটে দেশি চিঁড়ে তৈরির মতো বহু অজানা তথ্য ও জিনিস এখানে দেখা দেল।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাম্যবিপ্লব মাহাতোর কথায়, “গ্রামবাংলার মানুষের জীবনে ওই সব সামগ্রী এক সময়ে অতিপ্রয়োজনীয় ছিল। আজ ওই সব জিনিস প্রায় অবলুপ্ত। হারিয়ে যাওয়া এমন কিছু জিনিসের মূল্য কতখানি ছিল, তা এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জানা দরকার। তাই এই আয়োজন।” |