এক মূক ও বধির তরুণীকে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল বান্দোয়ানে। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয় পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে। পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার এ দিন বান্দোয়ানের ওই গ্রামে গিয়ে তরুণীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, “গত সোমবার রাতে বাড়িতে এক অনুষ্ঠান চলার সময় মিলন হাঁসদা, কাহা হাঁসদা ও ধীরেন মাণ্ডি নামের তিন যুবক ওই তরুণীকে মাঠে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তরুণীর বাবা অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরেই পুলিশ ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।” পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ডাক্তারি পরীক্ষায় ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করার প্রমাণ মিলেছে। যদিও ধৃতদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে বলে তাঁদের পরিবারের দাবি।
বছর পঁচিশের ওই তরুণী বাবা ও মায়ের সঙ্গে বান্দোয়ানেরই অন্য একটি গ্রামে মামার বাড়িতে থাকতেন। ঠাকুমার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে তিনি মা ও বাবার সঙ্গে তাঁদের পৈতৃকবাড়িতে সম্প্রতি এসেছিলেন। পরিবারের দাবি, সোমবার রাতে বাড়িতে যখন খাওয়া দাওয়ার আয়োজনে সবাই ব্যস্ত থাকায় তরুণী অন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। তরুণী পরে পরিবারের লোকেদের কাছে আকারে-ইঙ্গিতে দাবি করেছিলেন, ওই বাড়িও প্রায় ফাঁকা ছিল। সেই সুযোগে রাত ১০টা নাগাদ এলাকার তিন যুবক তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর তাঁকে গণধর্ষণ করে মাঠেই ফেলে রেখে যায়।
তরুণীর বাবার অভিযোগ, “আমরা ভোজের আয়োজন ব্যস্ত থাকায় মেয়ের কী হয়েছে তখন জানতে পারিনি। পরে পড়শিদের কাছে খবর পাই তার উপর অত্যাচার করা হয়েছে। অত্যাচারের বর্ণনা সে আকারে-ইঙ্গিতে বোঝাতে পারলেও কারা ওই কাজ করেছে তা জানাতে পারছিল না। পরের দিন নিমন্ত্রতদের একজনকে সে চিনিয়ে দেয়। তাকে চাপ দিতেই বাকি দু’জনের নাম জানা যায়।” অভিযোগ জানাতে দেরি হল কেন? পরিবারের দাবি, প্রথমজন সহজে ঘটনার কথা স্বীকার করেনি। তার কাছ থেকে কথা আদায় করতেই অনেকটা সময় লেগে যায়।
শুক্রবার ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে জটলা। পড়শিদের অনেকেই ওই যুবকদের কড়া শাস্তির দাবি জানান। তবে ধৃত মিলনের বাবা বিনোদ হাঁসদা, কাহার বাবা নেবুদাস হাঁসদার দাবি করেন, “আমাদের ছেলেরা দিনমজুরি করে। এলাকার কোনও গণ্ডগোলেও ওরা থাকে না। মিথ্যা অভিযোগে আমাদের ছেলেদের ফাঁসানো হয়েছে।” |