দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষকদের
তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ স্কুলে
স্কুলের ঘর তৈরির টাকা নিয়ে দুর্নীতি, সময়মত স্কুলে না আসায় পঠনপাঠন ব্যাহত-সহ একাধিক অভিযোগে প্রধানশিক্ষককে মারধর করে ঘরে তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাল অভিভাবক-সহ গ্রামবাসীর একাংশ। শুধু প্রধানশিক্ষকই নন, স্কুলের অন্য দুই শিক্ষককেও তালাবন্ধ করে রাখা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট থানার কচুয়া পঞ্চায়েতের মির্জানগর গ্রামের সজনেতলা প্রাথমিক স্কুলে। প্রায় তিন ঘণ্টা তালাবন্ধ থাকার পরে স্কুল পরিদর্শকের তরফে অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক শেখ সওকত আলি বলেন, “সরকারি ভাবে বলা হয়েছে স্কুলের কাজের বিষয়ে লক্ষ রাখবেন প্রধান শিক্ষক ও সহশিক্ষক। তাই এ ব্যাপারে যা বলার আমি স্কুল পরিদশর্কের কাছেই বলব। এ নিয়ে গ্রাম শিক্ষা কমিটির কোনও কিছু বলার বা করার এক্তিয়ার নেই।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, বক্তব্য, স্কুলের কাজের ব্যাপারে তাঁদের উপরে দায়িত্ব থাকলেও গ্রাম শিক্ষা কমিটির কয়েক জন চাইছে স্কুলের বাড়ি তৈরি জন্য আসা ২ লক্ষ টাকা তাদের মাধ্যমে খরচ হোক। তাতে রাজি না হওয়াতেই তাঁদের উপরে এই আক্রমণ।

বিক্ষোভকারীদের হাতে তালাবন্দি দুই শিক্ষক।—নিজস্ব চিত্র।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সজনেতলা প্রাথমিক স্কুলে দীর্ঘদিন ধরেই একজন মাত্র শিক্ষক থাকায় স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। তাই পাশ্ববর্তী একটি স্কুল থেকে শিক্ষক হিসাবে এই স্কুলে আসেন সমীরণ বর্মন। একদিন আগে স্কুলে মৌমিতা কুণ্ডু নামে নতুন একজন শিক্ষিকা যোগ দেন। ফলে স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় তিন। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৫৪ জন। স্কুলে পড়ুয়াদের বসার ব্যবস্থা বলতে মেঝে। সেখানেও সকলের জন্য শতরঞ্চির ব্যবস্থা নেই। যদিও শিক্ষকদের জন্য বাসর চেয়ার-টেবিল রয়েছে। গ্রাম শিক্ষা কমিটির সদস্য শ্যামসুন্দর মণ্ডল, সুকুমার মণ্ডল বলেন, “সপ্তাহে একদিন-দু’দিনের বেশি স্কুলে আসেন না প্রধান শিক্ষক। ফলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। তা ছাড়া কয়েক বছর আগে ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে স্কুলে দু’টি ঘর তৈরি হয়। তার হিসাব দেওয়া হয়নি। পরে আরও ২ লক্ষ টাকা খরচ করে স্কুলের পাঁচিল ও ঘর তৈরির যে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেখানে শুধু কয়েকটি গর্ত তৈরি করা ছাড়া আর কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রধান শিক্ষক কিছুই বলতে চান না।” তাঁদের আরও অভিযোগ, মাটিতে বসে পড়াশোনা করতে পড়ুয়াদের অসুবিধা হলেও তাদের জন্য কোনও বেঞ্চির ব্যবস্থা করা হয়নি। এমনকী গ্রামবাসীদের তরফে টাকা দেওয়া হলেও নিদেনপক্ষে শতরঞ্চিও কেনা হয়নি। যদিও সর্বশিক্ষা দফতর থেকে আসা স্কুলের উন্নয়নের জন্য যাবতীয় টাকার হিসাব দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানশিক্ষকের দাবি।
এ সবের প্রতিবাদেই এ দিন বেলা ১০টা নাগাদ শিক্ষকেরা স্কুলে এলে তাঁদের ঘেরাও করে একদন জনতা বিক্ষোভ শুরু করে। অভিভাবকদের পক্ষে প্রবাদ মণ্ডল, বিশ্বজিৎ দত্ত, গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, “স্কুলের উন্নতি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কোনও মাথাব্যাথা নেই। তিনি নিয়মিত স্কুলেও আসেন না। ফলে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে।” এ ব্যাপারে স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.