সরকারি সাহায্য ছাড়াই সিসিটিভি বাসন্তীর স্কুলে
ছাত্রছাত্রীদের শৃঙ্খলারক্ষা, পঠনপাঠন ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপস্থিতির নজর রাখার জন্য আধুনিক প্রযুক্তি চালু হল প্রত্যন্ত সুন্দরবনের এক স্কুলে। সবটাই হয়েছে কোনও রকম সরকারি আর্থিক সাহায্য ছাড়া। স্রেফ প্রধান শিক্ষক-সহ স্কুলের ৪৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পরিচালন সমিতির অর্থানুকূল্যে।
শুক্রবার থেকে সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকে নারায়ণতলা রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরে চালু হল সিসিটিভি, ভিডিও রেকর্ডিং সিস্টেম এবং শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি। এ দিন এই নয়া প্রযুক্তির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাংসদ তরুণ মণ্ডল ও মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য। ছিলেন বিডিও কওসার আলি, এআই কৃষ্ণা মজুমদার।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান শিক্ষকের ঘরে তৈরি করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা কী করছে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা নির্ধারিত সময়ে শ্রেণিকক্ষে যাচ্ছেন কি না, সুষ্ঠু ভাবে পঠনপাঠন হচ্ছে কিনা, মিড-ডে মিল ঠিক মতো পরিবেশিত হচ্ছে কিনা সমস্তটাই ধরা পড়ছে স্কুলে সদ্য বসানো সিসিটিভি ক্যামেরায়। শিক্ষকদের ঠিকঠাক হাজিরা রাখতে চালু হয়েছে বায়োমেট্রিক হাজিরার পদ্ধতিও।

বায়োমেট্রিক যন্ত্রে হাজিরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ২০১৩ সালে শিক্ষারত্ন সম্মান পেয়েছেন। সেই সুবাদে পাওয়া ২৫ হাজার টাকার সবটাই তিনি দান করেছেন স্কুলের এই প্রকল্পে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুলে ২৮০০ জন ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অনেকটাই কম। তাই ক্লাসে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং শিক্ষকদেরও সঠিক সময়ে উপস্থিতি বজায় রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, আপাতত স্কুলের নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণিকক্ষে ১৬টি সিসিটিভি বসানো হয়েছে। পরবর্তী কালে অন্যান্য সমস্ত ক্লাসঘরগুলিতেও বসানো হবে।
স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি লোকমান মোল্লা বলেন, “১৬টি সিসিটিভি বসাতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর পরে আমাদের ইচ্ছা রয়েছে, স্কুলে ডিজিট্যাল এনেবেল্ড হেল্প স্টাডি চালু করা। আমাদের স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই তফসিলি জাতি, জনজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে। তাদের অনেক উপকার হবে।” তাঁর আশা, বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে নিয়মানুবর্তিতা বাড়বে। সিসিটিভি বসানো হলে ক্লাসে বসে পড়ুয়াদের নানা আচরণ উপর নজরদারি থাকবে। স্কুলের সহকারী শিক্ষক দেবাশিস পাল বলেন, “এই ধরনের প্রযুক্তি চালু হলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক (মাধ্যমিক) কবিরুল ইসলাম বলেন, “বাসন্তীর এই স্কুলটি যে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, তা অভিনব। জেলার অন্য কয়েকটি স্কুল এই রকম পরিকল্পনা করেও রূপায়ণ করতে পারেনি। ওঁদের সরকারি কোনও সাহায্য দেওয়া যায় কি না, দফতরে আলোচনা হবে।”
স্কুলের এই উদ্যোগে খুশি অভিভাবকেরাও। আলি আকবর সর্দার নামে এক অভিভাবক বলেন, “প্রয়োজন হলে স্কুলে ক্লাসের ভিডিও রেকর্ডিং আমিও দেখে নিতে পারব। নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।” এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সাংসদ তরুণ মণ্ডলের আশা, “এই উদ্যোগ অন্যান্য স্কুলকেও পথ দেখাবে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.