বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি সৌমেন দত্তর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতভর নদিয়ার ধানতলা, রানাঘাট, গোপালনগর, বাগদা প্রভৃতি এলাকায় তল্লাশি চালান বনগাঁ থানার ওসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাতেই মেলে সাফল্য। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বুবাই ওরফে প্রশান্ত কর্মকার, সুখরঞ্জন দাস এবং অরুণ ওরফে কৃষ্ণ বিশ্বাস। বুবাই ও সুখরঞ্জনের বাড়ি নদিয়ার বড়বেড়িয়া ও রানাঘাটে। কৃষ্ণর বাড়ি স্থানীয় পলতা এলাকায়। তাদের কাছ থেকে প্রায় এক লক্ষ টাকা ও কয়েক ভরি সোনার গয়না উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতদের জেরা করে পুলিশের দাবি, কৃষ্ণ-সহ ডাকাতদের দলে রয়েছে ৫ জন। দলের দুই পাণ্ডার একজন কৃষ্ণ। অন্যজনের বাড়ি বাগদায়। ডাকাতি করা সোনার গয়না দুষ্কৃতীরা প্রথমে বুবাইকে দেয়। বুবাই তা গলিয়ে সুখরঞ্জনকে দিলে সে তা বিক্রি করে দেয় বিভিন্ন যায়গায়। |
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় চালকি এলাকায় সৌমেনবাবুর বাড়িতে ৫ জনের এক ডাকাত দল লুঠপাট চালিয়ে প্রায় ৭০ ভরি সোনার গয়না ও নগদ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। মারধর করা হয় সৌমেনবাবুর দাদা প্রদীপবাবুকে। লুঠপাট চালিয়ে চলে যাওয়ার সময় ডাকাতেরা জানতে চেয়েছিল সোনার মূর্তিটা কোথায়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি পিতলের গণেশের মূর্তিকে সোনার মূর্তি মনে করেই ডাকাতেরা ওই দিন সৌমেনবাবুর বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল। কৃষ্ণ সম্পর্কে সৌমেনবাবুর ধর্মভাই। সেই সুবাদে বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল তার। ঠাকুরঘরে গণেশের মূর্তিটি সে ভেবেছিল সেটি সোনার। এর পরেই ডাকাতির পরিকল্পনা করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটর বাইক, মাদক পাচারের অভিযোগে এর আগে কৃষ্ণ ধরা পড়েছিল। জেলও খেটেছিল। বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত ছিল। দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকার সময়েই অন্য দুষ্কৃতীদের সঙ্গে মিলে সে ডাকাত দল তৈরি করে। পুলিশের দাবি, গত ২০ জানুয়ারি রাতে স্থানীয় সাতবেড়িয়া এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এই দলটিই যুক্ত ছিল। বাকি চারজনের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পর পর ডাকাতিতে একের পর এক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশ নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে ডিজি-র কাছে দাবি জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিন দুষ্কৃতী গ্রেফতার হওয়ায় কিছু স্বস্তি ফিরেছে বাসিন্দাদের মধ্যে। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “পুলিশের তৎপরতাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। এর ফলে দুষ্কৃতীরাও অতটা বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারবে না।” |