প্রায় প্রতিটি গ্রামে রয়েছে মাতৃযানের ব্যবস্থা। প্রসূতিদের দেখভালের জন্য গ্রামে গ্রামে রয়েছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এত কিছুর পরেও প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব একশো শতাংশ সফল হয়নি। তার প্রমাণ, বাড়িতে প্রসবের জন্য অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শুক্রবার সকালে সাগরদিঘির অনুপপুর গ্রামের বছর সাতাশের নুরজাহান বিবির মৃত্যু হল।
বৃহস্পতিবার রাতে নুরজাহান বিবির প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। বাড়িতেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা। প্রসবের পর থেকেই তাঁর মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। বাড়ির লোকজন বিষয়টি নজর দেননি। শেষমেশ শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে নুরজাহান বিবিকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মারা যান নুরজাহান বিবি। হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সমর সরকার বলেন, ‘‘প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ঘটেছে ওই মহিলার। তার ফলে মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে প্রসব হলে এই সমস্যা হত না।’’
সরকারি-বেসরকারি স্তরে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের গুরুত্ব নিয়ে এত কথা হলেও কেন ওই মহিলার বাড়িতে প্রসব হল? সাগরদিঘির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিশ্বজিৎ দে’র বক্তব্য, ‘‘বাড়িতে প্রসব অনেকটাই কমানো গেলেও তা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। স্বাস্থ্য দফতর প্রসূতিদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিনা পয়সায় গাড়ির ব্যবস্থা করেছে। তা সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বন্যেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমুলের সাহিনা খাতুন বলেন, ‘‘প্রসূতিদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার নানাভাবে উদ্যোগী। তবুও কেন এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে অবশ্য এলাকার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব। এ ব্যাপারে বাড়ির লোকজনকে সচেতন হতে হবে।’’ মৃতার স্বামী আতিকুল শেখ এখন আফশোসের সুরে বলছেন ‘‘আগেভাগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্ত্রী’র প্রাণ যেত না।’’ |