সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কোর্ট চত্বরেই খুন ধর্ষিতা

৭ ফেব্রুয়ারি
র্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাক্ষ্য দিতে আদালতে পৌঁছনোর আগে আদালত চত্বরেই অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল মেয়েটির শরীর। ঘটনাটি ঘটেছে গত কাল, উত্তরপ্রদেশের মথুরায়। দুষ্কৃতীদের গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মেয়েটির মা-ও।
আর এই ঘটনার পরেই ফের উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠে গেল। এ দিনের ঘটনার পরে রাজ্য প্রশাসনের ঢিলেঢালা দশা নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি তামাশায় পরিণত হয়েছে। অপরাধীদের ধরা বা সাজা দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের উদাসীন আচরণই অপরাধীদের বেপরোয়া করে তুলেছে। যে কারণে আদালত চত্বরেই দু’জন মহিলার উপরে এ ভাবে নির্বিচারে গুলি চালাতে পেরেছে দুষ্কৃতীরা।
সূত্রের খবর, বছর তিনেক আগে স্থানীয় এক ধর্মগুরুর হাতে ধষর্র্ণের শিকার হন বছর পঁচিশের ওই তরুণী। মেয়েটির পরিবার সূত্রে অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে থানা-পুলিশ করেও সুবিচার মেলেনি। তাঁদের অভিযোগের আঙুল ছিল, স্থানীয় গোবিন্দাচার্য সেবা মঙ্গলম সংস্থান আশ্রমের প্রাক্তন প্রধান ধর্মগুরু গোবিন্দানন্দ তিরথ ওরফে বৈরাগী বাবা-র দিকে। তরুণীর বাবা ছিলেন ওই ধর্মগুরুর গাড়ির চালক। অভিযোগ, ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরেও গোবিন্দানন্দ তিরথকে গ্রেফতার তো করাই হয়নি, উল্টে পুলিশ নাম-কা-ওয়াস্তে তদন্ত করে তাঁকে অভিযোগ থেকে রেহাই দেয় বলেও জানতে পারে তরুণীর পরিবার।
পুলিশ ওই ধর্মগুরুকে ছাড় দিয়েছে জানতে পেরেই রুখে দাঁড়ান তরুণী। তাঁর পরিবারও বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হয়। গত বছর পুলিশের চূড়ান্ত রিপোর্টের কথা জানতে পেরে আদালতে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে লড়াই শুরু করেন ওই তরুণী। গত কাল মায়ের সঙ্গে তিনি কোর্টে আসছিলেন ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার জন্য। তখনই ঘটনাটি ঘটে।
মথুরার এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি তরুণীর মা পুলিশকে জানিয়েছেন, আদালত চত্বরেই হঠাৎ তাঁদের দিকে পর পর গুলি ছুটে আসে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তরুণী। গুলিবিদ্ধ হন তাঁর মা-ও। তরুণীর মায়ের কথায়, “পুলিশ অভিযুক্তদের ছাড় দিয়েছিল। আমরা তার বিরুদ্ধে আদালতে বিচার চেয়েছিলাম।” পুলিশকে তরুণীর মা জানিয়েছেন, তাঁদের উপর গুলিবৃষ্টি শুরু হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগেই তিনি বৈরাগী বাবাকে দেখেছেন গাড়িতে করে তাঁদের টপকে যেতে। যদিও পুলিশের বক্তব্য, ওই ধর্মগুরুর লোকজনই তরুণী ও তাঁর মায়ের উপরে হামলা চালিয়েছে কি না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। এই ঘটনার পিছনে ভাগীরথী বাবা নামে আর এক ধর্মগুরুর হাত রয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের একাংশের। তরুণীর পরিবার অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।
কিন্তু আজকের এই হামলার পরে উঠছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পরে এফআইআর করলেও তিন বছর ধরে পুলিশ কেন গোবিন্দানন্দ তিরথকে গ্রেফতার করেনি? তা ছাড়া এক জন ধর্ষিতা আদালতে বয়ান দিতে যাচ্ছেন, অথচ তাঁকে কেন নিরাপত্তা দেওয়া হল না, সে প্রশ্নও উঠেছে।
গত বছর উত্তরপ্রদেশে গোষ্ঠী সংঘর্ষের সময় ধর্ষিতা হন অনেকে। তখন পুলিশ এক জন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করেনি। উল্টে তাদের বক্তব্য ছিল, প্রত্যেককে নিরাপত্তা দেওয়া অসম্ভব! মথুরার ঘটনার পরে অনেকেই বলছেন, এই পুলিশ এক জনকেও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.