নিউ টাউন ও সল্টলেকে পরিবহণের সমস্যা মেটাতে ফের নতুন কিছু ভলভো বাস দ্রুত চালু করার আশ্বাস দিলেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র।
নিউ টাউনের চিনার পার্কে শুক্রবার দুপুরে পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের এক অনুষ্ঠানে পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “নিউ টাউন-সল্টলেকে পরিবহণের সমস্যা রয়েছে। গত কয়েক বছরে বাস বাড়লেও তা যথেষ্ট নয়। ভোটের পরেই সল্টলেক ও নিউ টাউনে ১০০টি ভলভো এসি বাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।”
মদনবাবু জানান, মার্চের যে কোনও দিন লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যাবে। তার পরে আর কোনও প্রকল্প ঘোষণা করা যাবে না। তাই এর মধ্যেই বাস চালুর পুরো পরিকাঠামো তৈরি করে ফেলা হবে। যাতে লোকসভা ভোটের পরেই রাস্তায় নেমে যেতে পারে ওই সব বাস। নিউ টাউন-সল্টলেকে ১০০টি ভলভো বাস চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি জানান, সল্টলেক অঞ্চলে বিভিন্ন রুটে যে সব সরকারি বাস চলত, সেগুলির কয়েকটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেই রুটগুলি আবার ফিরিয়ে আনা হবে।
তবে স্থানীয়রা জানান, মাস ছ’য়েক আগে নিউ টাউন বলাকা আবাসনের কাছে দু’টো রুটের উদ্বোধন হয়। একটি রুট ছিল নিউ টাউন-বারাসত, আরেকটি নিউ টাউন-বাগবাজার। উদ্বোধনের দিন বেশ কয়েকটি ভলভো বাসও চালু হয়। কিন্তু অভিযোগ, তার কয়েক দিন পর থেকেই উধাও হয়ে গিয়েছে বাসগুলি। বলাকা আবাসনের কাছ থেকে বাসগুলির ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই রুটের ভলভো বাস কার্যত দেখতেই পাওয়া যায় না। বাসস্ট্যান্ডটিও খালি পড়ে থাকে।
ছ’মাস আগের সেই দিনেও পরিবহণমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, পুরনো যে সরকারি রুটগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেগুলি দ্রুত ফিরিয়ে আনা হবে। এমনকী, নিউ টাউন, সল্টলেক, রাজারহাটের মধ্যে ইন্টারসিটি সরকারি বাস চালানো হবে। এই ইন্টারসিটি বাস চালানোর পরিকল্পনার দ্রুত রূপায়নের জন্য তিনি পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের সে দিনই নির্দেশ দেন। যদিও নিউ টাউনের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এখনও সেই ইন্টারসিটি বাসের দেখা নেই। নিউ টাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক আবাসনের বাসিন্দা রাহুল দত্তরায় বলেন, “ভলভো বাস খুব কমই পাওয়া যায়। নিউ টাউন থেকে ভিআইপি রোড হয়ে এয়ারপোটর্র্ বা উল্টোডাঙা যাওয়ার বাস বাড়লেও অনেক সময়েই পুলকারের উপরে ভরসা করতে হয়। সরকারি বাস খুব কম দেখা যায়।” এই অভিযোগের বিষয়ে মদনবাবু বলেন, “সরকারি বাসচালকের খুব অভাব। বাসের চালক না থাকায় প্রচুর বাস পড়ে রয়েছে। চালকের সমস্যা মিটলেই বেশ কিছু রুট চালু হয়ে যাবে। দ্রুত এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।”
এ দিন পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহের অনুষ্ঠানে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধাননগর কমিশনারেটের পদস্থ কর্তারা। বিধাননগর কমিশনারেট একটি বেসরকারি আবাসন নির্মাণকারী সংস্থার সহযোগিতায় এক সপ্তাহব্যাপী এই পথ-নিরাপত্তা সপ্তাহ করছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালও। মদনবাবু বলেন, “১৯৮০ সালে কলকাতা শহরে প্রতিদিন ৭২ হাজার গাড়ি চলত। এখন দিনে ১৮ লক্ষ গাড়ি চলে। অথচ শহরে রাস্তা তেমন বাড়েনি। তাই গাড়িচালকদের সঙ্গে পথচারীদেরও সচেতন হতে হবে।”
|