একটি উড়ালপুল, তিনটে আন্ডারপাস। এতেই পাল্টে যাবে ভিআইপি রোডের যান চলাচলের ছবি। এই রাস্তার কেষ্টপুর থেকে বাগুইআটির জোড়ামন্দির পর্যন্ত অংশে আর যানজট হবে না। রাস্তা পেরোতেও দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। এমনই দাবি রাজ্য পূর্ত দফতরের। তাদের দাবি, খুব দ্রুত কাজ হচ্ছে। উড়ালপুলের কাজ শেষ হতে এ বছর লেগে গেলেও আন্ডারপাসের কাজ শেষ হয়ে যাবে সামনের মার্চেই।
কেষ্টপুর থেকে বাগুইআটির জোড়া মন্দির। ভিআইপি রোডের এই অংশে যানজটের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। দু’টি মোড় দিয়ে দীর্ঘ ক্ষণ রাস্তা পারাপার চলে। সিগন্যালে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দাঁড়িয়ে যায়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাস্তার এই অংশটুকু পেরোতে কখনও কখনও আধ ঘণ্টা লেগে যায়। এই সব এলাকায় লোকসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ফলে সমস্যাও ক্রমেই বাড়ছে। নিত্যযাত্রীরা জানান, এই অংশ মনে হয় ভিআইপি রোড নয়, পাড়ার ভিতরে কোনও জনবহুল রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেই উড়ালপুল ও আন্ডারপাসের পরিকল্পনা করা হয়। |
পুরোদমে চলছে আন্ডারপাসের কাজ। ছবি: শৌভিক দে। |
তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই উড়ালপুল ও আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু হয়। এলাকার বিধায়ক তথা শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, ‘‘ভিআইপি রোডের এই সমস্যা বহু বছরের। আমরা ক্ষমতায় আসার পরেই এই সমস্যা সমাধানের জন্য উড়ালপুল ও আন্ডারপাস তৈরির কাজে হাত দিয়েছি। কাজ খুব দ্রুত গতিতে চলছে।’’
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেষ্টপুর থেকে জোড়ামন্দির পর্যন্ত তিনটি আন্ডারপাস তৈরি হচ্ছে। একটি হচ্ছে কেষ্টপুর মোড়ে, একটি বাগুইআটি মোড়ে ও অন্যটি জোড়ামন্দিরে। প্রতিটি আন্ডারপাসের দু’দিকেই দু’টি করে মুখ থাকবে। আন্ডারপাসের ভেতর দিয়ে মানুষ যাতে সহজে চলাচল করতে পারে তাই সাড়ে ছ’ মিটার চওড়া করা হচ্ছে। কংক্রিটের মেঝে ও টাইলস বসানো থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত আলো সব ব্যবস্থাই করা হবে বলে জানিয়েছে পূর্ত দফতর। পূর্ত দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, বয়স্ক মানুষের কথা ভেবে সিঁড়ি খুব বেশি খাড়া হবে না। কেষ্টপুর মোড় ও বাগুইআটি মোড়ের আন্ডারপাসের কাজ প্রায় শেষের পথে। মার্চের শেষে এই পথচারীরা ওই আন্ডারপাস ব্যবহার করতে পারবেন বলে ওই আধিকারিক জানান। জোড়ামন্দিরের আন্ডারপাস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এই কাজও এপ্রিলের মধ্যে শেষ হবে বলে পূর্ত দফতরের দাবি। পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন,‘‘আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পথচারীরা যাতে দু’টি আন্ডারপাস ব্যবহার করতে পারেন সেই জন্য দিন-রাত কাজ চলছে। আন্ডারপাসের সৌন্দর্যায়নের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।’’ বিধাননগর কমিশনারেটের এসিপি ট্রাফিক অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই এলাকায় খুবই ট্রাফিক সমস্যা হয়। কেষ্টপুর বাগুইআটি মোড়ে খুব কম সময়ের মধ্যেই রাস্তার দুই ধারে অনেক পথচারী দাঁড়িয়ে যান। বাধ্য হয়ে গাড়ি বন্ধ রেখে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য বেশ সময় দিতে হয়। ফলে যানজট হয়ে যায়। আন্ডারপাস হলে এই সমস্যা থাকবে না। গাড়ি দ্রুত এই মোড় দু’টি পার হতে পারবে। রাস্তা পেরোতেও সুবিধা হবে। আন্ডারপাস হয়ে গেলে
রাস্তা পারপার পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, উড়ালপুলে কাজও চলছে দ্রুত গতিতে। উড়ালপুলের বেশ কিছুটা অংশে পিলার বসানোর পরে ডেক বসানোর কাজও শেষ। তবে কেষ্টপুর এলাকার খালপাড়ের অংশে কাজ এখনও অনেকটা বাকি। ওই এলাকায় উড়ালপুলের কাজ শুরু করতে গেলে ভিআইপি রোডের দুই ধারে খাল পেরোনোর জন্য অস্থায়ী রাস্তা বানিয়ে কাজ করতে হবে। না হলে গাড়ি চলাচলের সমস্যা হবে। অস্থায়ী রাস্তা তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
|