কোনও ট্যাক্সি যাত্রী প্রত্যাখ্যান করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক এ বার এমনই দাবি তুললেন খোদ ট্যাক্সি ইউনিয়নের নেতা। ট্যাক্সির যাত্রী প্রত্যাখ্যান রুখতে সাদা-নীল ট্যাক্সির মতো হলুদ ট্যাক্সির গায়েও ‘নো রিফিউজাল’ লেখার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। কিন্তু আইনত কোনও ট্যাক্সি যাত্রী প্রত্যাখ্যান করতেই পারে না। তাই সমস্যার সমাধানে ট্যাক্সির গায়ে ‘নো রিফিউজাল’ লেখা নয়, বরং কড়া পুলিশি ব্যবস্থাই এর একমাত্র সুরাহা, এমনই মত ইউনিয়নের।
সরকার নীল-সাদা ‘নো রিফিউজাল’ ট্যাক্সি নামানোর পর থেকেই হলুদ ট্যাক্সির যাত্রী প্রত্যাখ্যান আরও বেড়ে গিয়েছে বলে বারংবার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে এই বিষয়টি কেন্দ্র করে এক সংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করেছিল ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’। সেখানেই সরকারের কাছে এমন দাবি রাখলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিমল গুহ। ট্যাক্সির প্রত্যাখ্যান যে আরও বেড়ে গিয়েছে, এ দিনের সভায় তা স্বীকারও করে নেন বিমলবাবু। তাঁর মতে, ‘নো রিফিউজাল’ লেখা নীল-সাদা ট্যাক্সি নামানোর সরকারি সিদ্ধান্তই এই সমস্যার কারণ। তিনি বলেন, “সরকার রাস্তায় ‘নো রিফিউজাল’ ট্যাক্সি নামানোর পর থেকেই হলুদ ট্যাক্সি আরও বেশি করে যাত্রী নিতে বারণ করে দিচ্ছে। কারণ জানতে চাইলে তাঁদের যুক্তি, যে ট্যাক্সিগুলিতে ‘নো রিফিউজাল’ লেখা রয়েছে, শুধু তারাই যাত্রী প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। হলুদ ট্যাক্সির ক্ষেত্রে এ নিয়ম চলে না।”
বিমলবাবুর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় মোটর ভেহিক্লস আইনের ২১ নম্বর প্রচ্ছদের ২৩ নম্বর সেকশন অনুযায়ী, কোনও ট্যাক্সিই যাত্রী প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে আলাদা করে শহরের রাস্তায় নীল-সাদা ‘নো রিফিউজাল’ লেখা ট্যাক্সি নামানো সরকারের উচিত হয়নি। বিমলবাবু দাবি করেন, সরকারের এই ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই হলুদ ট্যাক্সি আরও বেশি করে যাত্রী প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি জানান, কোনও ট্যাক্সি যাত্রী প্রত্যাখ্যান করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আর্জি জানাচ্ছে সংগঠন। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চালকের লাইসেন্স বাতিল অথবা তাঁকে সাসপেন্ড করা হতে পারে। ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’-এর অফিসে এ দিনের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্যাক্সি ড্রাইভার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রতিনিধিরাও। সেখানে জানানো হয়, এ দিন সাদার্ন অ্যাভিনিউ এবং এক্সাইড মোড়ে এই বিষয়ে ওই দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রচারও শুরু হয়েছে। ওই রাস্তায় যাবতীয় ট্যাক্সিচালকদের জানানো হয়, তাঁরা যেন কোনও যাত্রীদের নিতে বারণ না করেন। আর যদি কোনও ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে যাত্রী প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ ওঠে, তবে তার বিরুদ্ধে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও সুপারিশ জানিয়েছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ওই ট্যাক্সিচালকের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে অথবা তাঁকে সাসপেন্ডও করা হতে পারে। এই প্রচার-কর্মসূচি যে শুরু করা হয়েছে, এ দিনের বৈঠকে সে কথাও জানানো হয়। এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এই প্রচার চালানো হবে বলে জানিয়েছেন বিমলবাবু।
ট্যাক্সি সংগঠনের এই অভিযানকে স্বাগত জানানো হয় সরকারি তরফে। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার কথা পুলিশকে বলা হবে।”
|