চোপরার গ্রামে এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে ধরা হয়েছিল মহম্মদ সাগির নামে এক যুবককে। কিন্তু থানা পর্যন্ত পৌঁছনোই সার। পুলিশের হাত থেকে তাকে কার্যত ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকেরা।
মহম্মদ সাগিরের পরিচয়: চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমানের গাড়ির চালকের ভাই তিনি। তবে ওই ঘটনার পরে হামিদুর অবশ্য যুবকের পাশে দাঁড়াননি। পুলিশকে ‘অভয়’ দেওয়ায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই থানায় চড়াও হওয়া অভিযুক্তদের খোঁজে নেমে পড়ে পুলিশ। শুরু হয় তল্লাশি। সাগিরকেও পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন তাকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তার ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই কিশোরীর বাড়ির অভিযোগ পেয়ে বুধবার রাতেই সাগিরকে থানায় তুলে নিয়ে এসেছিল পুলিশ। জেরা চলছিল তার। সেই সময়ে আচমকাই থানায় চড়াও হয়েছিল জনা চল্লিশ তৃণমূল সমর্থক। ডিইটি অফিসারের সামনে থেকেই অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। পুলিশ প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও পরে বিষয়টি শাসক দলের জেলা নেতাদের জানানো হয়। খবর যায় বিধায়ক হামিদুলের কাছেও। তিনিই এর পরে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। রাতেই থানায় হানা দেওয়া ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “মহম্মদ সাগিরকে ধরা হয়েছে। তাঁকে থানা থেকে ছিনিয়ে নেওয়ায় অভিযুক্ত যারা, তাদের মধ্যেও ২ জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদেরও ছাড় মিলবে না।”
সাগির চোপরা এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই ছাত্রীদের কাছে রীতিমতো ত্রাস। পুলিশ জানায় তার বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করছিলেন ওই যুবক। ঘটনার দিন রাতে ছাত্রীটির বাড়িতে ঢুকে উত্যক্ত করেন বলেও অভিযোগ। তখনই এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হয়ে তাকে ধরে ফেলেন। তারপরে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ধৃতকে জেরা করার জন্য থানার ডিউটি অফিসারের ঘরে রাখা হয়। সেখানে জমা হতে শুরু করে শাসক দলের সমর্থকেরা। তাদের দাবি সাগিরকে ছাড়তে হবে। থানার বেশির ভাগ অফিসার এবং কর্মীই সে সময় বাইরে ছিলেন। যুবকদের দল ডিউটি অফিসারের ঘরে ঢুকে চেচামেচি শুরু করে বলে অভিযোগ। কিছুক্ষণ ধরে ঘরে চেঁচামেচি করার পরে ধৃত মহম্মদ সাগিরকে কয়েকজন মিলে ঘিরে থানা থেকে বের করে নিয়ে যায় যুবকরা সকলেই এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। বিধায়ক হামিদুল রহমান ঘটনা জানতে পেরে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় তৃণমূলের কেউ জড়িত নয় বলেই মনে হয়। তবে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” |