|
|
|
|
দুর্ঘটনায় জখমের চিকিৎসায় অবহেলা, অভিযুক্ত পিজি
দীক্ষা ভুঁইয়া • কলকাতা |
অটো দুর্ঘটনায় বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল কাটা গিয়েছিল। ডাক্তারেরা জানিয়েছিলেন, সেই আঙুল আর জোড়া লাগানো সম্ভব নয়। তবে উরুর হাড় এবং ডান পায়ের গোড়ালিতে চিড় ধরেছে, অস্ত্রোপচার করে সেটা ঠিক করা সম্ভব। তার জন্য পায়ে দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু গত ১০ দিনে অস্ত্রোপচার তো দূর অস্ত্, একটা ইঞ্জেকশন এবং মাত্র চার বার ড্রেসিং ছাড়া আর কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ অটো দুর্ঘটনায় জখম কিশোর শেখ ইমরানের পরিবারের। গত ২৬ জানুয়ারি রাতে এন্টালির বিবিবাগানের বাসিন্দা সতেরো বছরের ওই কিশোর এক অটো দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়। সেই থেকে সে এসএসকেএমের কার্জন ওয়ার্ডে ভর্তি। কিন্তু হাসপাতালে কার্যত বিনা চিকিৎসাতেই তাকে ফেলে রাখা হয়েছে বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ।
ইমরানের বাবা শেখ জামির বলেন, “সেই রাতেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, ওর উরুর হাড় এবং ডান পায়ের গোড়ালিতে চিড় ধরেছে। অস্ত্রোপচার না করালে চিরকালের মতো পঙ্গু হয়ে যাবে ছেলেটা। কিন্তু গত ১০ দিন ওকে হাসপাতালে স্রেফ ফেলে রাখা হয়েছে।”
সেই দিনের দুর্ঘটনায় ইমরানের বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল কাটা পড়ে। পাড়ার ছেলেরাই রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ প্রথমে তাকে নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে ইমরানকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। এলাকার বাসিন্দারাই ইমরানের কাটা আঙুল রাস্তা থেকে কুড়িয়ে ওই হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে তাতে পচন ধরেছিল। সে রাতেই চিকিৎসকেরা ইমরানের পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তার আঙুল জোড়া লাগানো যাবে না।
কিন্তু অস্ত্রোপচার করে পঙ্গুত্বের হাত থেকে ওই কিশোরকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে না কেন? অর্থোপেডিক বিভাগের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁরা নিরুপায়। ওই বিভাগে সব সময়েই রোগীর উপচে পড়া ভিড়। অস্ত্রোপচারের জন্য লম্বা লাইন। তাই দেরি হয়েই যায়।
যেখানে পরিস্থিতি এমন গুরুতর, সেখানে কেন অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না? এসএসেকেএমের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “আমার সঙ্গে পরিবারের লোকেরা যদি দেখা করেন, তা হলে গোটা বিষয়টি জেনে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।”
সে দিনের সেই দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত অটোচালকও জামিন পেয়ে গিয়েছেন। সে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইমরানের বাবা। তাঁর কথায়, “যার জন্য আমার ছেলেটার এমন অবস্থা হল, সে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। চিকিৎসার জন্য কোনও সাহায্যও করেনি। অথচ আমার ছেলেটা ক্রমশ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।” |
|
|
|
|
|