উদ্যোগী মমতা, স্টেম সেলের সরকারি ব্যাঙ্ক তৈরি ছ’মাসেই
রিকল্পনাটা তাঁর মাথায় এসেছিল মাস আটেক আগে। সেই মতো কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল তার দু’মাসের মধ্যেই। আর ছ’মাস পেরোতে না পেরোতেই সেই প্রকল্প এ বার আলোর মুখ দেখতে চলেছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এ ভাবেই রেকর্ড সময়ে চালু হতে চলেছে সরকারি পরিকাঠামোয় পূর্বাঞ্চলের প্রথম স্টেম সেল ব্যাঙ্ক। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে এই ব্যাঙ্কটির উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, চলতি বছরের গোড়াতেই যাতে ব্যাঙ্কটির কাজ শুরু হতে পারে, সে ব্যাপারে স্বাস্থ্যকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজে যাতে কোনও গাফিলতি না হয়, সে জন্য প্রতি দু’মাস অন্তর ট্রপিক্যালের অধিকর্তাকে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তার কাছে কাজের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। এই তৎপরতার জেরেই এত দ্রুত স্টেম সেল ব্যাঙ্কটি চালু হতে চলেছে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান।
রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন নয়, চলতি মাস থেকেই যাতে ব্যাঙ্কটি পুরোদমে কাজ শুরু করতে পারে, সেটাও নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া এবং রক্তের বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসায় একেবারে চূড়ান্ত ধাপ স্টেম সেল প্রতিস্থাপন। প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে দাতা এবং গ্রহীতার রক্তের হিউম্যান লিউকোসাইট অ্যান্টিজেন (এইচএলএ) ম্যাচিং খুব জরুরি। শিশুর জন্মের পরে যে নাড়ি (আম্বিলিকাল কর্ড) বিচ্ছিন্ন করা হয়, সেটি স্টেম সেলের অন্যতম উৎস। গোটা বিশ্ব জুড়েই এখন স্টেম সেলের ব্যবহার চলছে। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও স্টেম সেল নিয়ে গবেষণা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যে স্টেম সেল গবেষণাকে কী ভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেখানেই সরকারি পরিকাঠামোয় স্টেম সেল ব্যাঙ্কের প্রসঙ্গটি ওঠে। ট্রপিক্যালের কর্তারা জানান, তাঁদের ভবনে যা জায়গা রয়েছে, তাতে একটি পৃথক ব্যাঙ্ক চালু করতে সমস্যা নেই। কিন্তু সে জন্য প্রচুর সরঞ্জাম প্রয়োজন। তড়িঘড়ি অর্থ দফতরের ছাড়পত্র নিয়ে ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, এখনও আরও কিছু কর্মী নিয়োগের কাজ বাকি রয়েছে। ব্যাঙ্ক চালু হওয়ার পরে ধাপে ধাপে নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ হবে।
এই মুহূর্তে বিশ্ব জুড়েই থ্যালাসেমিয়া এবং লিউকেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্টেম সেল ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার, হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, অ্যালজাইমার্স-সহ বিভিন্ন দুরারোগ্য অসুখের চিকিৎসা, এমনকী দুর্ঘটনায় কোনও অঙ্গ বাদ গেলে স্টেম সেলের সাহায্যে তা-ও তৈরি করা যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের আশা। যার স্টেম সেল, তার নিজের এবং ভাই-বোনের ক্ষেত্রে সেটি তো কাজে লাগেই, এমনকী পরিবারের কারও চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ভাল ফল দিতে পারে। এই কারণেই এখন সন্তানের জন্মের সময়ে বহু দম্পতি মোটা টাকার বিনিময়ে বেসরকারি ব্যাঙ্কে সন্তানের কর্ড ব্লাড গচ্ছিত রাখা শুরু করেছেন। কিন্তু যাঁদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাঁরা এখনও এই চিকিৎসার সাহায্য নিতে পারছেন না। সরকারি কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্ক চালু হলে এই চিকিৎসা গরিব মানুষেরও নাগালে আসবে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.