ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস আইএনটিইউসি অনুমোদিত ডুয়ার্স প্লান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের বেশির ভাগ সদস্য যোগ দিল তৃণমূল টি প্লান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে। শিলিগুড়িতে বৃহস্পতিবার একটি সভায় সংগঠনের সভাপতি জোয়াকিম বাক্সলার উপস্থিতিতে তরাই ডুয়ার্স প্লান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন সভাপতি অলক চক্রবর্তী সহ দার্জিলিং পাহাড়, ডুয়ার্স ও উত্তর দিনাজপুরের একাধিক চা বাগান ও বটলিফ কারখানার শ্রমিকরা এই শিবির বদল করলেন।
জোয়াকিম বাক্সলা এ দিন বলেন, “অলকবাবুরা যোগ দেওয়ার ফলে আমাদের সংগঠন সমৃদ্ধ হল। অলকবাবু নিজে দীর্ঘদিন ধরে ট্রেড ইউনিয়ন করেছেন। ওঁর অভিজ্ঞতা আন্দোলনকে জোরদার করবে। তাঁকে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা পরবর্তী সংগঠনের পদক্ষেপ ঠিক করব।” নতুন সংগঠনে যোগ দিয়ে অলকবাবু দাবি করেন আগের সংগঠনের বেশির ভাগ সদস্যই নতুন সংগঠনে চলে আসায় কার্যত একই সংগঠন থাকল, যাঁরা শ্রমিকদের স্বার্থে কাজ করবে। তিনি বলেন, “এখন থেকে চা শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষাকারী একটাই সংগঠন থাকছে। মুখ্যমন্ত্রী চান চা শিল্পে একটাই ইউনিয়ন থাকুক। তাঁর ইচ্ছেকে মর্যাদা দিয়েই এই দলত্যাগ।” আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত তৃণমূল টি প্লান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে এখন থেকে পরবর্তী কাজকর্ম হবে বলে জানান তিনি। এর আগে অলকবাবু নিজে কলকাতায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন কয়েক মাস আগে। সেই সঙ্গে আইএনটিইউসির অন্য দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি নেন। তবে ডুয়ার্স প্লান্টেশন সংগঠনটি তিনি ছাড়েননি। তিনি তৃণমূলি ট্রেড ইউনিয়ন ব্যানারে থাকা চা শ্রমিকদের সংগঠনটির সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্য রাজি হলেও সবাই রাজি না হওয়ায় তা করা যায়নি। আগের সংগঠন ছেড়ে তাঁরা তৃণমূল টি প্লান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নে যোগ দেন। এ বিষয়ে জোয়াকিমবাবু বলেন, “৩১ ডিসেম্বর কলকাতায় তপসিয়াতে আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভানেত্রী দোলা সেনের সঙ্গে বৈঠক হয়। তার পরেই স্থির হয় আমরা সকলে এক ছাতার তলায় কাজ করব।” তৃণমূলে থেকে আলাদা সংগঠনের হয়ে কাজ করতে নীতিগত অসুবিধা রয়েছে বলে মনে করছেন অলকবাবুও। তাতে কাজেরও অসুবিধা বলে তিনি মন্তব্য করেন। সংগঠনের সম্পাদক অনিরুদ্ধ গোস্বামী বলেন, “দার্জিলিং ও তরাই ডুয়ার্সের ৪২টি চা বাগান, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুর মিলিয়ে ৩০০০ চা বাগান এবং দার্জিলিঙের ১৯টি বটলিফ ফ্যাক্টরির কয়েক হাজার শ্রমিক যোগ দিয়েছেন।” নতুন করে সংগঠন সাজানোর পরেই একাধিক দাবি নিয়ে বিভিন্ন চা বাগান মালিকদের সংগঠন কনসালটেশন কমিটি অব প্লান্টার্স অ্যসোসিয়েশন বা (সিসিপিএ)-এর কাছে একাধিক দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। চা শ্রমিকদের স্বার্থে পাহাড়ে ও সমতলে একই নীতিতে বেতন প্রদান, চা বাগানগুলির স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির হাল ফেরানো, চা বাগানে রেশনের ক্ষেত্রে একশো শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া, সমস্ত চা শ্রমিকদের বিপিএল তালিকভুক্ত করা, শ্রমিকদের অবসরের বয়স ৫৮ থেকে ৬০ করা-সহ একাধিক দাবিকে শ্রম দফতরের দ্বারস্থ হবে তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনটি। |