|
|
|
|
মুশকিল আসানে অনলাইনে ফর্ম জমা এসএসসির
নিজস্ব প্রতিবেদন |
সর্বত্র ডাকঘরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট)-র ফর্ম পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ডাকঘরের মাধ্যমে আবেদনপত্র বিলির সঙ্গেই চলবে এই অনলাইন প্রক্রিয়া।
রাজ্যের ৮৪৭টি ডাকঘর থেকে আবেদনপত্র বিলির ব্যবস্থা করেছেন কমিশন-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সব ডাকঘরে পর্যাপ্ত আবেদনপত্র মিলছে না বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন প্রার্থীরা। বিভিন্ন ডাকঘরের সামনে দীর্ঘ লাইন পড়ছে। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলার সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। বৃহস্পতিবারেও গোলমাল হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়।
গত বছর টেটে পরীক্ষার্থী ছিলেন পাঁচ লক্ষের কিছু বেশি। এ বার ইতিমধ্যেই ছ’লক্ষেরও বেশি ফর্ম বিক্রি হয়ে গিয়েছে বলে জানান এসএসসি-র চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “মূলত এই বিপুল চাহিদার জন্যই কিছু অঞ্চলে আবেদনপত্রের আকাল দেখা দিয়েছে। কোথায় কত ফর্ম লাগবে, সেটা তো আগাম বোঝা সম্ভব নয়।” তিনি জানান, পরিস্থিতির সামাল দিতে বৃহস্পতিবার অনলাইনে ফর্ম জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ডাকঘরে ভিড় না-করে পরীক্ষার্থীদের একাংশ অনলাইনে আবেদন করবেন।
এ দিন সকালে আবেদনপত্র বিলি নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে বসিরহাটের বাদুড়িয়া ও কাটিয়াহাট ডাকঘরে তালা ঝুলিয়ে কর্মীদের আটকে বিক্ষোভ দেখান এক দল প্রার্থী। পুলিশ গিয়ে তালা খুলে কর্মীদের উদ্ধার করে। ওই ঘটনার জেরে বাদুড়িয়া, কাটিয়াহাট এবং ন্যাজাতে উত্তেজনা ছড়ায়। আবেদনকারীদের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও ফর্ম মিলছে না। ডাকঘরের কর্মীদের বক্তব্য, চাহিদার তুলনায় অনেক কম ফর্ম পাঠানো হয়েছে তাঁদের কাছে। তাই সমস্যা হচ্ছে। এতে তাঁদের কোনও হাত নেই। অথচ আবেদনকারীদের ক্ষোভের শিকার হতে হচ্ছে তাঁদেরই।
ফর্মের অভাবে নাকাল হওয়ার অভিজ্ঞতা হচ্ছে অনেকেরই। যেমন, নলহাটি থানার লোহাপুরের যুবক তারিকউদ্দিন শেখ জানান, বুধবার তিনি নলহাটিতে আবেদনপত্র না-পেয়ে এ দিন সকালে তারাপীঠে যান। তারাপীঠেও ফর্ম না-পেয়ে ওই যুবক ছোটেন রামপুরহাট ডাকঘরে। সেখানে দীর্ঘ লাইন দিয়ে অবশেষে আবেদনপত্র তুলতে পেরেছেন। ডাকঘরের বীরভূম জেলা সুপার জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, “কলকাতা থেকে যেমন যেমন ফর্ম পাঠানো হচ্ছে, সেই অনুযায়ী তা বিভিন্ন ডাকঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমাদের তো কিছু করার নেই!” কলকাতাতেও অবশ্য হয়রানি কম নয়। যাদবপুরের বাসিন্দা অপরূপা ঘোষ আবেদনপত্র তোলার জন্য প্রথমে যান বাঘা যতীনে। সেখান থেকে রিজেন্ট এস্টেট, রিজেন্ট পার্ক, চারু মার্কেট ঘুরে হতাশ হয়ে অবশেষে বড়বাজারে গিয়ে আবেদনপত্র পান।
রাজ্য জুড়ে আবেদনপত্রের আকাল, তা পূরণের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি ইত্যাদি অভিযোগে সোমবার থেকেই সল্টলেকে এসএসসি-র মূল দফতরের সামনে জড়ো হচ্ছিলেন প্রার্থীরা। পরিস্থিতির মোকাবিলায় বুধবারেই আবেদনপত্র তোলার মেয়াদ তিন দিন বাড়িয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করেছে কমিশন। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইন আবেদনপত্র জমার ব্যবস্থা চালু করলেন কর্তৃপক্ষ। কমিশনের ওয়েবসাইট www.westbengalssc.com-এ ওই আবেদনপত্র পূরণ করে জমা দেওয়া যাবে বলে জানান সুবীরেশবাবু।
তবে গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র আবেদনকারীরা অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ না-ও পেতে পারেন। সেটা মাথায় রেখে ডাকঘরের মাধ্যমেও আরও বেশি আবেদনপত্র বিলি করার জন্য চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল (সিপিএমজি, বেঙ্গল সার্কেল) যশোবন্ত পণ্ডার সঙ্গে কথা বলেন কমিশনের চেয়ারম্যান।
২০১২-র এসএসসি পরীক্ষায় চূড়ান্ত মেধা-তালিকায় স্থান পাওয়া সত্ত্বেও চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত প্রার্থীদের অনেকে বৃহস্পতিবার থেকে কমিশনের দফতরের সামনে অনশনে বসেছেন। তাঁদের তরফে আজিজুল ইসলাম বলেন, “অন্তত ২৫০ জন অনশনে সামিল হয়েছেন। আমরা কেন বঞ্চিত, কমিশনকে তা জানাতে হবে।” সুবীরেশবাবু জানান, ওই পরীক্ষা নিয়ে মামলা চলছে। তাই এ বিষয়ে তিনি কিছু বলবেন না। |
|
|
|
|
|