|
|
|
|
নেতা-মন্ত্রী থেকে মহিলা কমিশন, আমতায় নেই কেউ
নিজস্ব প্রতিবেদন |
কোনও বড় নেতা নয়, সরকারের কোনও প্রতিনিধি নয়। এমনকী, মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিও নয়।
ঘটনার দু’দিন পরেও কেউ পা রাখলেন না আমতায়। বিশিষ্ট জনেদেরও কাউকে দেখা যায়নি।
ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে। পাড়া অন্ধকার করে বাড়িতে চড়াও হয়ে দুই মহিলাকে দুষ্কৃতীরা গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। ৪৮ ঘণ্টা পরেও মহিলা কমিশনের কেউ ঘটনাস্থলে গেলেন না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতাদের গ্রামের মানুষ। রাজ্য মহিলা কমিশনের সভানেত্রী সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, “আমাদের তরফে কিছু স্থবিরতা রয়েছে, অস্বীকার করার উপায় নেই। আসলে কমিশনের অনেক সদস্যই এই মুহূর্তে কলকাতার বাইরে।”
রাজ্যের প্রধান দলগুলির কোনও বড় মাপের নেতাও নির্যাতিতাদের খোঁজ নিতে না যাওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে এলাকার মানুষের। তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিধায়ক নির্মল মাজি এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিধায়ক অসিত মিত্র এ দিন এলাকায় যান। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিমান বসুর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের আজ, শুক্রবার উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নির্যাতিতাদের দেখতে যাওয়ার কথা।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় আমতার ঘটনার প্রেক্ষিতে বলেন, “আমতায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা সামাজিক ব্যাধি। অন্যায়। আমাদের দাবি, পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করুক এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “আমাদের বিধায়ক অসিত মিত্র যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা থেকে বোঝা গিয়েছে তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই ঘটনায় জড়িত। পুলিশের একাংশের ভূমিকাও ভাল নয়।” এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ, শুক্রবার কংগ্রেস ওই এলাকায় গণ অবস্থান করবে, মিছিল করবে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিও আছে বলে প্রদীপবাবু জানিয়েছেন।
সিপিএমের বড় কোনও নেতা এলাকায় না গেলেও গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি কিন্তু এ দিন রাস্তায় নেমেছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বৃহস্পতিবার উলুবেড়িয়ার গরুহাটা মোড় প্রায় আধ ঘণ্টা অবরোধ করে তারা। শুক্রবার বিমানবাবু এলাকা ঘুরে যাওয়ার পরে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়বে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
আর মহিলা কমিশন কী ভাবছে? সুনন্দাদেবী নিজেই বলেন, “মহিলা কমিশন নিজস্ব তদন্ত করলেও তার গুরুত্ব কতটুকু? আমাদের তো কোনও ক্ষমতাই নেই।” সাম্প্রতিক কালে গণধর্ষণ, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা কিংবা অতি সক্রিয়তার অভিযোগ উঠলে মানবাধিকার কমিশন সক্রিয় হয়েছে। মধ্যমগ্রাম-কাণ্ডের পর থেকে সেই মানবাধিকার কমিশনও স্বতঃপ্রণোদিত কোনও তদন্তের নির্দেশ দেয়নি।
রাজ্যে এখন মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশন কিংবা তফসিলি জাতি-উপজাতি কমিশনের কোনও ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন না মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র। তিনি বলেন, “রাজ্য যে ভাবে মানবাধিকার কমিশনকে হেয় করতে শুরু করেছে তাতে ভয় কেটে গিয়েছে।” রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে এখন রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়ই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের ঘটনায় এ দিন আরও এক বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণ। তিনি বলেন, “সবাইকে এক সঙ্গে এর মোকাবিলা করতে হবে।” |
|
|
|
|
|