টম, নীলাম্বরই কি আটক, নিশ্চিত হতে চায় পুলিশ
দুই ফেরার কেএলও (কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন) জঙ্গি টম অধিকারী এবং নীলাম্বর রাজবংশী নেপালে আটক হয়েছেন বলে খবর পেলেও সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চাইছে এ রাজ্যের পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সন্দেহজনক গতিবিধির জন্য নেপালের ঝাপা ও ইলমের মাঝামাঝি এলাকা থেকে দুই যুবককে আটক করে নেপাল
টম অধিকারী
পুলিশ। ধৃতদের সঙ্গে টম ওরফে জয়দেব রায় এবং নীলাম্বর ওরফে মঞ্চলাল সিংহের প্রচুর সাদৃশ্য রয়েছে বলে খবর পৌঁছয় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে। কিন্তু নেপাল পুলিশ জানায়, ওই দু’জন নিজেদের নেপালের বাসিন্দা বলে দাবি করেছেন। তাই নানা সূত্রে দুই জঙ্গি নেতা আটক হওয়ার খবর পেলেও নিশ্চিত হওয়ার আগে মন্তব্য করতে নারাজ রাজ্য পুলিশের কর্তারা।
রাজ্য পুলিশের আইজি জাভেদ শামিমের কথায়, “এটা নিয়ে এখনই বলার মতো কিছু নেই। তেমন পরিস্থিতি হলে নিশ্চয়ই বলা হবে।” তবে রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, আটক হওয়া দু’জন টম এবং নীলাম্বর হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই বলে নিজস্ব সূত্রে তাঁরা জেনেছেন। তিনি জানান, নিশ্চিত হতে টম ও মঞ্চলালের সচিত্র পরিচয়পত্র ও যাবতীয় মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেখতে চেয়েছে নেপাল পুলিশ। রাজ্য গোয়েন্দা দফতর সূত্রের খবর, ওই দু’জনকে ভাল করে চেনেন এমন কয়েক জনকে নেপালে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
কেএলও-এর দুই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি টম এবং নীলাম্বরের নেপালে লুকিয়ে থাকার খবর রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কাছে আগেই পৌঁছেছিল। রাজ্যের গোয়েন্দাদের একটি দল সম্প্রতি নেপালে গিয়ে সেখানকার পুলিশকে ওই দু’জনের ব্যাপারে বিশদ তথ্যও দিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, ২০১৩-র এপ্রিলে নেপালে কেএলও-র যে কেন্দ্রীয় কমিটি গড়া হয়েছে, তাতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে টমকে। নীলাম্বর অর্থ সচিব। ২৬ ডিসেম্বর বজরাপাড়া বিস্ফোরণ ও গত ২৯ অগস্ট আলিপুরদুয়ারের চৌপথিতে বোমা রাখার ঘটনায় টম-ই মূল অভিযুক্ত। আর নীলাম্বর জলপাইগুড়ির বিস্ফোরণ কাণ্ডের পুরো পরিকল্পনা ছকেছিলেন বলে সন্দেহ পুলিশের।
বজরাপাড়া বিস্ফোরণের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দেন, দোষীদের ছাড়া হবে না। রাজ্য সরকার ‘স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ’ (এসওজি) তৈরি করে কেএলও জঙ্গিদের গ্রেফতার করতে আসরে নামে। এক সময় কুমারগ্রামে কেএলও-দমনে গুরুত্বপূর্ণ পালন করেছিলেন যিনি, সেই এসআই তথা বর্তমানে বাগডোগরার ওসি বি ডি সরকার, শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের ইনস্পেক্টর রাজেন ছেত্রী-সহ বাছাই অফিসারেরা কেএলও জঙ্গিদের ধরতে তল্লাশি শুরু করেন।
এর পরেই জলপাইগুড়ি বিস্ফোরণে কেএলও-র ডেপুটি কমান্ডার-ইন-চিফ নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা, কেএলও-এর সহ সাধারণ সম্পাদক প্রদীয় রায় ওরফে ইকবাল সিদ্দিকি ওরফে প্রাণনারায়ণ কোচ গ্রেফতার হয়। নেপাল সীমান্ত থেকেই ওই দু’জন-সহ ভক্তিনগরের টাকিমারি চরের বাসিন্দা লিঙ্কম্যান রামশঙ্কর বসাকও ধরা পড়ে। এসওজি জানতে পারে, নেপালের ভদ্রপুর লাগোয়া এক গ্রামে টম ও নীলাম্বর-সহ একাধিক কেএলও সদস্য ঘাঁটি গেড়ে থাকতে পারে। খবর যায় নেপাল পুলিশে। তার পরেই ওই দু’জনের আটক হওয়াকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
২০০৩-এ ভুটানে সেনা অভিযানের সময় টম, নীলাম্বর-সহ ৪৬ জন কেএলও সদস্য ধরা পড়েন। দেশদ্রোহিতার মূল মামলায় ২০০৯-এ তাঁরা সবাই জামিন পান। তবে আরও কিছু মামলায় অভিযুক্ত টম, নীলাম্বররা তখন মুক্তি পাননি। রাজ্যে পালাবদলের পরে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী টম-রা ছাড়া পান। ২০১২-র মাঝামাঝি টম, নীলাম্বর-সহ একাধিক কেএলও নেতা ফের নিখোঁজ হন।
গত বছরের মাঝামাঝি পুলিশ খবর পায়, টম একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রে লুকিয়ে আছেন। সেখান থেকেই বিস্ফোরক এনে জলপাইগুড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে পুলিশের দাবি। ইতিমধ্যে নীলাম্বর অসমে গিয়ে তোলাবাজি শুরু করেছেন বলেও খবর ছিল। তাই নেপাল পুলিশের হাতে আটক হওয়া দু’জন আসলে টম ও নীলাম্বর কি না, সে ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত হতে চাইছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.