|
|
|
|
বীরভূমে কয়লা তুলতে যৌথ সংস্থা ছয় রাজ্যের
পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
বীরভূমের মহম্মদ বাজার ব্লকের ডেউচা-পাঁচামি খনি থেকে কয়লা তোলার কাজে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছ’টি রাজ্য ওই খনির কয়লার ভাগ পাবে। কয়লা তোলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে বৃহস্পতিবার অংশীদার রাজ্যগুলির (কর্নাটক গরহাজির ছিল) সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার প্রতিনিধিরা সল্টলেকে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের অফিসে আলোচনায় বসেন। সেখানে ঠিক হয়েছে, আগামী দেড় মাসের মধ্যে কর্নাটক-সহ ছয় অংশীদার রাজ্য মিলে একটি যৌথ সংস্থা তৈরি করে কয়লা তোলার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার খোঁজে নামবে। তার জন্য ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ বা বিশ্ব জুড়ে দরপত্র আহ্বান করা হবে। আর সেই কাজে সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ খনিজ উন্নয়ন নিগম।
ডেউচা-পাঁচামির খনি থেকে কয়লা তোলার যাবতীয় সিদ্ধান্ত রূপায়ণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে পশ্চিমবঙ্গ। তাই এ দিনের বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের তরফে কয়লা তোলার খসড়া পরিকল্পনা ও প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয় অন্যান্য অংশীদার রাজ্যের প্রতিনিধিদের হাতে। রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের এক মুখপাত্র জানান, পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাব পর্যালোচনা করে অন্য রাজ্যগুলি দ্রুত তাদের মতামত জানাবে।
তার পরে, মাসখানেক বাদে ফের বৈঠক করে কয়লা তোলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। ওই মুখপাত্র জানান, আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সঙ্গে খনিজ উন্নয়ন নিগমকেও এই কাজে যুক্ত করতে চায় সরকার।
মহম্মদ বাজারের ওই খনি থেকে কয়লা তোলার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়ার সময় কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, সেখান থেকে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক সরকারও তাদের বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা পাবে। খনিটি পশ্চিমবঙ্গে। তাই যত কয়লা তোলা হবে, তার ২৮ শতাংশ পাবে বাংলা। বিহারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২৩ শতাংশ। বাকি রাজ্যগুলি তাদের প্রাপ্য অনুযায়ী কয়লা পাবে।
মাসখানেক আগে রাজ্যের শিল্প ও পরিকাঠামো বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কয়লা তোলার ব্যাপারে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডেউচা ব্লকে প্রায় ২১০ কোটি ২০ লক্ষ টন কয়লা মজুত আছে। সেখানে কয়লা তোলার কাজ শুরু হয়ে গেলে রাজ্যের চালু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি তো বটেই, সেই সঙ্গে কাটোয়ায় এনটিপিসি-র প্রস্তাবিত ১৩২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পেও কয়লার অভাব হবে না বলে মনে করছেন বিদ্যুৎকর্তারা।
কেন্দ্রের সমীক্ষা জানাচ্ছে, ডেউচা ব্লকে কয়লা মজুত রয়েছে ভূগর্ভের ১০০-১৫০ মিটার নীচে। ভূপৃষ্ঠ থেকে কয়লার স্তরের আগে পর্যন্ত রয়েছে কালো পাথর। সেই পাথর ভেঙেই কয়লার কাছে পৌঁছতে হবে। এই কাজ করার মতো অভিজ্ঞতা এ দেশের কোনও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নেই। তাই আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কাজে লাগানো হবে। এ দিনের বৈঠকে এই সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এই প্রকল্পে কয়েক হাজার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে বলে মনে করছেন বিদ্যুৎকর্তারা। তা ছাড়া খনি থেকে যে-কয়লা ও পাথর উঠবে, তা থেকে সেস, রয়্যালটি ও ভ্যাট বাবদ বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পেতে পারে রাজ্য সরকার। |
|
|
|
|
|