আইসিসি-তে তিন প্রধানের ক্ষমতালাভের লড়াইয়ে নতুন বাধা হাজির করল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড। ভারত-অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের তরফে যে সব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তার আইনি বৈধতা নিয়েই এ বার প্রশ্ন তুলে দিল শ্রীলঙ্কা।
দুবাইয়ে আইসিসি এগজিকিউটিভ বোর্ডের বৈঠকের আগে ছবিটা যে রকম ছিল, এ বার ৮ তারিখ সিঙ্গাপুরের বৈঠকের আগেও অনেকটা সে রকমই আছে। এক দিকে সেই ভারত-অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড। উল্টো দিকে অন্য ত্রিশক্তি পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ড আগেই তাদের আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছিল। এ বার শ্রীলঙ্কা লিখিত আপত্তি তুলে লড়াইকে নতুন মাত্রা দিল।
আইসিসি-র আইনি শাখার প্রধানের কাছে একটি চিঠি মারফত আইনি জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্রীলঙ্কা বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জয়ন্ত ধমর্দাস। তাঁর প্রধান বক্তব্য, আইসিসি-র গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী হয়ে পড়েছে এ সব প্রস্তাব। ধর্মদাসের চিঠিতে লেখা হয়েছে, “শ্রীলঙ্কা বোর্ডের আইনি বিভাগ আমাদের জানিয়েছে, যে প্রস্তাবগুলোর কথা বলা হয়েছে, তা সব আইনত বৈধ নয়। আমাদের আগে বলা হয়েছিল, আইনি জটিলতা দেখা দিলে আইসিসি-র আইনি শাখায় সঙ্গে যোগাযোগ করতে। আমরা এখন সেটাই করছি।” চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, “সদস্যদের সামনে যে সব প্রস্তাব পেশ করা হবে, সেটা যেন আইসিসি-র গঠনতন্ত্র মেনে হয়, এটা নিশ্চিত করা আপনাদের কাজ। তাই আমরা খুব তাড়াতাড়ি আমাদের তোলা প্রশ্নগুলোর জবাব চাইছি।”
শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় আপত্তি দেখা গিয়েছে, মুনাফা বণ্টনের প্রস্তাবে। নতুন খসড়া প্রস্তাবে দেখা যাচ্ছে, সদস্যদের মধ্যে মুনাফা বণ্টন হবে ‘কন্ট্রিবিউশন কস্ট’ নিয়ম মেনে। অর্থাৎ কে কী ভাবে ক্রিকেটের প্রতি অবদান রাখল, তার ভিত্তিতে ঠিক হবে মুনাফা বণ্টনের ফর্মুলা। এই অবদান রাখার ব্যাপারটাও ঠিক হবে অনেকগুলো শর্ত মেনে। যেমন খেলার ফলাফল কী হচ্ছে, ক্রিকেটের প্রতি সে দেশের ঐতিহাসিক অবদান, মাঠের বাইরে অর্থ তোলার ক্ষমতা, ইত্যাদি। আর ঠিক এখানেই আপত্তি শ্রীলঙ্কার। তাদের বক্তব্য, এই প্রস্তাব মেনে নিলে আইসিসি-র গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করা হবে। কারণ সেখানে পরিষ্কার বলা আছে, মুনাফা বন্টন হবে সম পরিমাণে।
আরও যে ব্যাপারটা নিয়ে শ্রীলঙ্কা উদ্বিগ্ন, তা হল, ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামস (এফটিপি)। নতুন খসড়া মেনে নিলে, এফটিপি বাতিল হয়ে যাবে এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী এ বার থেকে দু’দেশের সফর হবে। শ্রীলঙ্কা বোর্ড প্রেসিডেন্টের প্রশ্ন, “নতুন নীতি মেনে নিলে এফটিপি-তে বিশাল রদবদল হবে। সে ক্ষেত্রে যে সব সফর এখন চূড়ান্ত হয়ে আছে, তার কী হবে?” চিঠিতে লেখা হয়েছে, “আপনারা জানেন, বর্তমান আইসিসি এগজিকিউটিভ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনেক সফর ঠিক হয়ে আছে। সে জন্য বিভিন্ন বোর্ড নিজেদের মধ্যে স্পনসরশিপ চুক্তি করেছে, টিভি চুক্তি করেছে। এমনকী কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্পনসরদের কাছ থেকে অর্থও নেওয়া হয়েছে। এখন সব বাতিল হয়ে গেলে তার আইনি প্রভাব কতটা হবে?” |