কেন কেভিন পিটারসেনকে ‘বলি’ দেওয়া হল? এই মুহূর্তে ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমে এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে। এবং সেই ময়নাতদন্ত থেকে বৃহস্পতিবার আরও একটা কারণ সামনে উঠে আসছে।
তা হল, পিটারসেন নাকি অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের ‘হেডস্যারোচিত আচরণের’ প্রতিবাদ করে তাঁর রোষের মুখে পড়েন। জানা যাচ্ছে, মেলবোর্ন টেস্টে হারের পর ইংল্যান্ড প্লেয়ারদের মধ্যে একটা মিটিং হয়। যেখানে ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ ভাল করা নিয়ে। এবং ক্রিকেটারদের বক্তব্যের মূল সুর ছিল, ফ্লাওয়ার বড্ড বেশি হেডমাস্টারি ফলাচ্ছেন। যার জেরে টিমের মনোবল নষ্ট হচ্ছে। এই বৈঠকের পর ঠিক হয়, কেউ গিয়ে ফ্লাওয়ারকে টিমের বক্তব্যের কথা জানাবেন। সেই দায়িত্ব নেন পিটারসেনই। জানা যাচ্ছে, ফ্লাওয়ার ব্যাপারটা মোটেই ভাল ভাবে নেননি। তিনি দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কেপি নিয়ে যা বলার বলে গিয়েছেন। ইসিবি-র তরফে অবশ্য এ নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। |
এরই মধ্যে আবার বিতর্কে টেনে আনা হয়েছে ম্যাট প্রায়রের নাম। প্রায়রের নামে অভিযোগ, মিটিংয়ে ফ্লাওয়ারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছিলেন তিনিই। প্রায়রই নাকি ইংল্যান্ড ক্রিকেটারদের তাতান। কিন্তু নিজে ফ্লাওয়ারের সামনে আসেননি। পিটারসেনকে পিছন থেকে ছুরি মারার অভিযোগও উঠেছে প্রায়রের বিরুদ্ধে। যার পর এ দিনই প্রায়র টুইট করে বলেন, “মিটিংয়ে কী হয়েছিল, আমি জানাতে রাজি নই। তবে এটুকু বলব, যারা কিছুই খবর রাখে না, তারাই আমার বিরুদ্ধে উল্টো পাল্টা কথা রটাচ্ছে।” প্রায়রের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁরই সতীর্থ টিম ব্রেসনানও।
ইসিবি অবশ্য কোনও কিছু নিয়েই বিবৃতি দেয়নি। কিন্তু ইংল্যান্ড বোর্ড কিছু না বললে কী হবে, ক্রিকেট দুনিয়া কিন্তু কেপি-র অপসারণ এবং ইস্তফা নিয়ে শান্ত হচ্ছে না। অ্যাসেজে ইংল্যান্ডের ০-৫ বিধ্বস্ত হওয়া নিয়ে যতটা না হইচই শুরু হয়েছিল, তার চেয়েও সম্ভবত বেশি হচ্ছে পিটারসেন নাটক নিয়ে। স্বয়ং ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও পিটারসেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমি পিটারসেনের বিশাল ভক্ত। কেপি-র ব্যাটিং দেখে আমি প্রচুর সময় কাটিয়েছি, উপভোগ করেছি। ওর ব্যাটিং গড়ও অসাধারণ। তবে আমি ইংল্যান্ড টিম নির্বাচনে ঢুকতে চাই না। সে ব্যাপারটা নির্বাচকরাই দেখবেন।” |
কেপি: অবসরের পর আনুমানিক আয় |
• ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ
৭৫,০০০ থেকে ১.৫ লাখ পাউন্ড
• ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ১ লাখ পাউন্ড
• আইপিএল ১২.৫ লাখ পাউন্ড
• বিগ ব্যাশ ৭৫,০০০ থেকে ১.৫ লাখ পাউন্ড |
|
পিটারসেন নিয়ে নানা মতের মধ্যে একটা ব্যাপারে কিন্তু অনেকেই একমত হচ্ছেন। সেটা হল, ইংল্যান্ডের ক্ষতিটা শেষে গিয়ে আইপিএলের লাভ হয়ে দাঁড়াল। ললিত মোদী টুইট করে বলেছেন, “জাইলসকে (ইসিবি প্রধান) ধন্যবাদ। আমি নিশ্চিত, ফ্র্যাঞ্চাইজিরা নতুন করে স্ট্র্যাটেজি কষতে বসে গিয়েছে পিটারসেনের জন্য। ওকে পুরো মরসুম পাওয়া যাবে। এ বারের নিলামে আমার এক নম্বর ঘোড়া হল পিটারসেন।”
ইংল্যান্ডের প্রচারমাধ্যম মোটামুটি হিসাব দিয়ে দিয়েছে, ইংল্যান্ডের হয়ে না খেললেও পিটারসেনের কতটা উপার্যন হতে পারে। দেখা যাচ্ছে, ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলে প্রায় দেড় লাখ পাউন্ড, ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি থেকে এক লাখ পাউন্ড, আইপিএল থেকে লাখ বারো পাউন্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ থেকেও লাখ দেড়েক পাউন্ড পকেটে ঢুকতে পারে কেপি-র। |