|
|
|
|
নিরাপত্তা শিকেয়, শূন্য পদ পূরণের দাবি আরপিএফে |
দেবমাল্য বাগচি • খড়্গপুর |
দূরপাল্লা হোক বা লোকাল ট্রেন—২৪ ঘণ্টা যাত্রীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ)। সেই আরপিএফ-এর শূন্যপদগুলি পূরণ না হওয়ায় যাত্রী নিরাপত্তা শিকেয় উঠছে ক্রমশ। তাই অবিলম্বে ওই সব শূন্য পদ পূরণের দাবি উঠল ‘অল ইন্ডিয়া আরপিএফ অ্যাসোসিয়েশনে’র বৈঠকে।
খড়্গপুরের বোগদায় সংগঠনের দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জোনাল এগ্জিকিউটিভ কমিটির দু’দিন ব্যাপী বৈঠক শেষ হল বৃহস্পতিবার। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে খড়্গপুর, আদ্রা, চক্রধরপুর, রাঁচি নিয়ে মোট চারটি ডিভিশন রয়েছে। রেলের নিরাপত্তা জোরদার করতে বোকারো ও সাঁতরাগাছিতে আরপিএফের দু’টি অতিরিক্ত ডিভিশন গড়া হয়েছে। এই ৬টি ডিভিশনের আরপিএফের প্রতিনিধিরা বৈঠকে যোগ দেন। সংগঠনের বক্তব্য, ছ’টি ডিভিশনের একাংশে রয়েছে জঙ্গলমহল এলাকা। খড়্গপুর থেকে রাঁচি বা আদ্রা ডিভিশনে যেতে গেলে যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিকে জঙ্গল এলাকার মধ্য দিয়েই যেতে হয়। এ ছাড়াও অন্য ডিভিশন মিলিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেল শাখায় দিনে প্রায় হাজার খানেক ট্রেন চলাচল করে। যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে ইতিমধ্যে ‘ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম’ চালু হয়েছে। কিন্তু শূন্যপদে লোক নিয়োগ না হওয়ায় অধিকাংশ ট্রেন অরক্ষিত থেকে যায়। ফলে প্রশ্নচিহ্নের মুখে যাত্রী নিরাপত্তা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে দক্ষিণ-পূর্ব রেল শাখায় আরপিএফ ইন্সপেক্টরের ১২৮টি পদ থাকলেও রয়েছেন ১০৪ জন। সাব-ইন্সপেক্টরের পদে ২১৫ জনের জায়গায় রয়েছেন ১৫৬ জন, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর থাকার কথা ৩৭৪ জন, রয়েছেন ১৮৬ জন। হেড কনস্টেবল ১৫৪৭ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন ১১৪৮ জন। কনস্টেবলের ২৪৭৫টি পদ থাকলেও রয়েছেন ১৫০১ জন। সব মিলিয়ে মোট পদের প্রায় ৩৫ শতাংশই শূন্য রয়েছে। সংগঠনের দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাধারণ সম্পাদক প্রমোদ কুমার বলেন, “একাধিক মন্ত্রী এসে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করে আরপিএফের আরও পদ বাড়ানোর কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং অবসরের হার অনুযায়ী আগের শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ হয়নি। তাই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রায় এক হাজার ট্রেনের মধ্যে ৪০ জোড়া ট্রেন ছাড়া বাকি ট্রেনগুলিতে বাহিনীই নেই। আমরা চাই অবিলম্বে শূন্যপদে লোক নিয়োগ হোক।”
রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, “শুধু রেলের দক্ষিণ-পূর্ব শাখা নয়, সমগ্র ভাবে প্রায় ১৩ হাজারের বেশি আরপিএফ পদ ফাঁকা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তৈরি হওয়া শূন্যপদগুলি পূরণের চেষ্টা করছি। তবে একদিনে সেটা সম্ভব নয়। শূন্যপদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।”
পাঁচ বছরেও পদোন্নতি না হওয়া, পিএনএম বৈঠক না হওয়া, মাওবাদী হানায় নিহত আরপিএফের পরিবারের ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার মতো অভিযোগও উঠেছে বৈঠকে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রমোদ কুমারের দাবি, “এই সব সমস্যার কথা সংগঠনের পক্ষ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার, আইজি, চারটি ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজারকে জানানো হয়েছে।” এ দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার রাধেশ্যাম বলেন, “ছ’মাস ধরে জেনারেল ম্যানেজারের পদ খালি থাকার পর আমি দায়িত্ব নিয়েছি। পিএনএম বৈঠক যাতে করানো যায় সেই বিষয়ে চেষ্টা করছি। তবে নিয়োগের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ভাবে দেখা হচ্ছে।” এ দিন ওই আরপিএফ সংগঠনের সভাপতি পদে শান্তনু শর্মার অবসরের পরে শ্রীকান্ত প্রসাদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ ছাড়াও এস কে সিংহ কার্যকরী সভাপতি হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। |
|
|
|
|
|