মাথায় গুলি করে এক ব্যবসায়ীকে খুন করল দুষ্কৃতীরা। হুগলির আদিসপ্তগ্রামে রেলপুলের নীচ থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
রেলপুলিশ জানায়, নিহতের নাম স্বপন মজুমদার (৪৮)। বাড়ি স্থানীয় ছোট খেজুরিয়ায়। বুধবার রাতে তাঁকে গুলি করা হয়। কিন্তু কেন এই খুন করল, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। কেউ ধরাও
স্বপন।
|
পড়েনি। হাওড়া রেলপুলিশ সুপার মিলনকান্তি দাস বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা সব দিক থেকেই খোঁজখবর নিচ্ছি।” রেলপুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপনবাবু চালের ব্যবসা করেন। সাহাগঞ্জে ডানলপ কারখানার গেটের কাছে জিটি রোডের ধারে তাঁর দোকান। প্রতি দিনই রাত ১০টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে তিনি সাইকেলে চেপে বাড়ি ফেরেন। এলাকার লোকজনের থেকে তদন্তকারীরা জেনেছেন, বুধবার তাগাদা সেরে দোকান বন্ধ করতে কিছুটা দেরি হয়েছিল তাঁর। এর পরে সাইকেলে চেপে বাড়ির পথে রওনা হন। |
বাড়ির কিছুটা আগেই রেলপুলের নীচে তাঁর উপরে হামলা হয়। খুব কাছ থেকে পরপর দু’টি গুলি তাঁর মাথা ফুঁড়ে দেয়। তিনি সেখানেই লুটিয়ে পড়েন স্বপনবাবু। খানিক বাদে ট্রেন থেকে নেমে বাড়ি যাওয়ার পথে স্থানীয় লোকজন দেখেন, স্বপনবাবু নিথর হয়ে পড়ে। আশপাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পাশেই পড়ে রক্তমাখা সাইকেল। ইতিমধ্যেই তাঁর বাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। স্বপনবাবুকে তুলে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, স্বপনবাবুর সঙ্গে একটি টাকার ব্যাগ ছিল। সেটি দুষ্কৃতীরা নিয়ে গিয়েছে। তাঁর পকেট থেকে হাজার পাঁচেক টাকা পাওয়া গিয়েছে। ব্যাগে কত টাকা ছিল, রেলপুলিশ তা জানার চেষ্টা করছে।
এলাকায় শান্ত স্বভাবের মানুষ বলেই পরিচিত ছিলেন স্বপনবাবু। বাড়ির লোকজনের দাবি, কারও সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল বলে তাঁরা জানেন না। পারতপক্ষে কারও সঙ্গে তাঁর বচসাও হত না। নিহতের দাদা অরুণ মজুমদার বলেন, “ভাই ঝুটঝামেলা এড়িয়ে চলত। কারও সঙ্গে ওর ঝগড়া হচ্ছে, এমনটা পর্যন্ত কোনও দিন দেখিনি। কী কারণে ভাইকে ওকে খুন হতে হল, বুঝতে পারছি না।” স্ত্রী পিঙ্কিদেবীর বক্তব্য, “কারও সঙ্গে স্বামীর রেষারেষি ছিল বলে আমার জানা নেই।”
তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান, ব্যবসায়িক কারণেই খুন হয়ে থাকতে পারে। নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে, তা খুঁজে দেখতে রেলপুলিশের তরফে জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। |