ঝোপঝাড়, জঙ্গলময় এলাকায় এখন ঝাঁ চকচকে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক। তার পাশেই ভেড়ি এলাকা। জলাভূমিই বেশি সেখানে। তবুও খাবার এখানে হরেক রকম। ঘাস, গাছগাছালি যেমন আছে, তেমনই আছে হাজারো মানুষের ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট। আর সে সবের লোভেই রোজ ঢুকে পড়ছে গরুর পাল। ব্যস, ওতেই দফারফা রাস্তার ধারের সাজানো বাগান।
সমস্যাটি বিধাননগরের পাঁচ নম্বর সেক্টর এলাকার। এক দিকে বাগানগুলি নষ্ট হচ্ছে, অন্য দিকে বেড়ে যাচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যাচ্ছিল পাঁচ নম্বর সেক্টরের প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের। সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কী হবে!
তাই বাগান-সহ সব সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মালিদের সঙ্গে আরও কিছু কর্মীর জোগান বাড়ানো হল। তাঁরাই রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি গরু তাড়ানোর কাজ শুরু করেছেন। এর পাশাপাশি, অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুক পরিষ্কার রাখার কাজও শুরু করেছে নবদিগন্ত। সরকার আসার পরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ নম্বর সেক্টর-সহ তথ্য প্রযুক্তি তালুকের মানোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। যদিও এই এলাকার সৌন্দর্যায়নের কাজ বাম আমল থেকেই শুরু হয়েছিল বলে আইটি-কর্মীদের একাংশের দাবি। নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষের নতুন বোর্ডও এলাকা ঢেলে সাজতে পরিকল্পনা নেন। সে অনুযায়ী কাজও হয়েছে। |
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস কিংবা রাজারহাটের দিক থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টরে ঢুকলে বিভিন্ন রাস্তার মাঝে অথবা ধারে সৌন্দর্যায়নের কাজ দেখতে পাওয়া যায়। কোথাও বিভিন্ন রকমের স্থাপত্যের কাজ, কোথাও আবার বাহারি গাছের পসরা।
সমস্যা হল, পার্শ্বস্থ এলাকাগুলি থেকে অসংখ্য গরু রোজ ঢুকে পড়ে এই এলাকায়। খাবারের সন্ধানে গরুর দল রাস্তার মাঝে বুলেভার্টে কিংবা রাস্তার ধারে সাজানো বাগানে ঢুকে পড়ছে। নবদিগন্তের এক কর্তা জানান, নিয়মিত জল দেওয়া এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একাধিক কর্মী রয়েছেন। কর্মী সংখ্যা আরও কিছু বাড়ানো হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে গরু তাড়ানোর কাজও এ বার থেকে তাঁরাই করবেন।
তবে স্রেফ গরু তাড়ানোই নয়, এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বিশেষ বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ। রাজারহাট বক্সব্রিজ থেকে চিংড়িহাটা মোড় পর্যন্ত রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে পরিষ্কার রাখতে ১২ জনের একটি বিশেষ সাফাইকারী দল রয়েছে। এর পাশাপাশি পাঁচ নম্বর সেক্টরের ভিতরের রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখতেও কর্মীসংখ্যা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। একই সঙ্গে দিনে এক বারের বদলে দু’বার আবর্জনা সংগ্রহ করে দ্রুত তা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে এলাকা সাফ রাখার কাজও শুরু করেছেন বলে জানান নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ।
|