আদি কল্যাণেশ্বরী মেলা শুরু হয়েছে রানিগঞ্জের তিরাট গ্রামে। চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠা ও মেলার সূচনা নিয়ে নানা জনশ্রুতিও রয়েছে। মেলা কমিটির সম্পাদক নীরুপ মিশ্র জানান, প্রায় তিনশো বছর আগে মাইথনের কাছে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে বলি দেওয়ার জন্য পাঁঠা নিয়ে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে জঙ্গলেই ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। স্বপ্ন দেখেন যে, এখানে যে শিলামূর্তিটি রয়েছেন তিনিই দেবী কল্যাণেশ্বরী। কথিত আছে, দেবী তাঁকে স্বপ্নে বলেন, মাইথনে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার দরকার নেই, এখানেও আমি বিরাজ করছি। ওই দিনই পুজো শুরু করেন ওই ব্যক্তি। তারপর থেকেই আদি কল্যাণেশ্বরী হিসাবে পুজিতা হয়ে আসছেন দেবী। |
ভিড় মন্দির চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র। |
মেলা নিয়েও নানা গল্প ছড়িয়ে রয়েছে লোকমুখে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেলার আয়োজন করলে পুত্র সন্তান লাভ হবে এমন স্বপ্ন দেখেন স্থানীয় তিরাট কোলিয়ারির তৎকালীন ম্যানেজার অজয় রায়। দেবীর স্বপ্নাদেশেই মেলা শুরু করেন তিনি। মেলা এবার ৩৮ বছর পেরোল। আগে তিনদিনের মেলা হলেও গত ২৪ বছর ধরে মেলা সাত দিন ধরে চলছে। খনি এলাকা হওয়ায় মেলায় মিলেমিশে যান বহু ভাষাভাষী মানুষ। যেহেতু মন্দির দামোদরের তীরে, ফলে মেলায় ভিড় করেন সংলগ্ন বাঁকুড়া জেলার মানুষও। ধর্মের উর্দ্ধে উঠে প্রকৃত অর্থেই মিলনমেলা হয়ে উঠেছে কল্যাণেশ্বরী মেলা। উদ্যোক্তারা জানান, প্রথম দিন কীর্তন, দ্বিতীয় দিন বাউল গানের আসর, তৃতীয় দিন কলকাতার অপেরার যাত্রা, চতুর্থ দিন লোক গান ও শেষ তিন দিন স্থানীয় শিল্পীদের যাত্রা, আধুনিক গানের আসর ও কলকাতার যাত্রা দলের অনুষ্ঠান রয়েছে। মেলা কমিটির সভাপতি আশিষ গড়াই জানান, এই মেলার বিরাট ব্যয়ভার বহন করেন, গ্রামবাসী, খনি কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। মেলা শুরু হয় দেবীর আবির্ভাব দিবস হিসাবে খ্যাত মাঘ মাসে মাকুড়ি সপ্তমীর দিন। প্রথম দিন পঙক্তি ভোজে পাত পেড়ে খেলেন হাজার বিশেক মানুষ। |