স্পোর্টস কমপ্লেক্সের জমিতে বহুমুখী যুব আবাস তৈরির সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে মালদহে। জেলার ক্রীড়াবিদ থেকে শুরু করে বাসিন্দাদের একাংশ খেলার মাঠের জায়গায় নির্মাণের বিরোধিতা করলেও, জেলা যুব কল্যাণ দফতর থেকে নির্মাণের জন্য মাঠে সমস্যা হবে না বলে পাল্টা দাবি করা হয়েছে।
স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীও মাঠে যুব আবাস নির্মাণের বিরোধিতা করেছেন। তাঁর কথায়, “এমনিতেই মালদহ শহরের খেলার মাঠ নেই। প্রস্তাবিত কমপ্লেক্সের জমিতে যুব আবাস তৈরি মেনে নেওয়া যায় না। জেলাশাসককে সরজমিনে খতিয়ে দেখে রিপোর্টি দিতে বলেছি।” জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বলেন, “বিষয়টি নজরে এসেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলার ক্রীড়ামোদীদের লাগাতার আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্যের ক্রীড়া দফতর মালদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠের পাশে আধুনিক স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ৪০০ মিটারের ট্র্যাকসহ আধুনিক কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা হয়। গত ২০১১ সালে ৬ জানুয়ারি রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর ৮ একর জমি রাজ্যের ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ দফতরকে কমপ্লেক্স গড়ার জন্য হন্তান্তর করে। প্রথম দফায় প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়। প্রথম বরাদ্দে সীমানা প্রাচীর তৈরির কাজ করা হয়। |
মালদহে বহুমুখী যুব আবাস তৈরির কাজ চলছে। —নিজস্ব চিত্র। |
সম্প্রতি কমপ্লেক্সের জমিতে প্রায় ৮ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা খরচ করে পাঁচ তলা বহুমুখী যুব আবাস নির্মাণের কাজ শুরু হতেই শুরু হয়েছে বির্তক। জেলার ক্রীড়াবিদ উদয় মণ্ডল, শুভ্রংশু ঘোষ, শৈবাল কুণ্ডুরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “যে ভাবে স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠের মাঝে যুব আবাস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে তাতে ওখানে ৪০০ মিটারের ট্র্যাক তৈরি করা সম্ভব নয়।” যদিও জেলা যুব কল্যাণ আধিকারিক মৃণাল হালদার বলেন, “যুব আবাসের জন্য স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরিতে কোনও সমস্যা হবে না। আমরা সকলের সঙ্গেই আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কোনও জমি নেওয়া হয়নি।” যুব কল্যাণ দফতরের আধিকারিকের যুক্তি মানতে নারাজ জেলার ক্রীড়াবিদরা। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শুভেন্দু চৌধুরী বলেন, “খেলার মাঠে যুব আবাস ও সরকারি কর্তাদের আবাসন তৈরির কাজ হচ্ছে। মাঠের পাশে ওই নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সে কথা শোনা হয়নি।” রাজ্য ক্রীড়া পর্ষদের জেলার সদস্য শান্তনু সাহা বলেন, “জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, স্থানীয় ক্রাড়াবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।” তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রিয় সাহা স্পষ্ট বলেন, “কমপ্লেক্সের জমিতে যুব আবাস তৈরি করতে দেওয়া যাবে না।” |