ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার পর রাস্তায় সাধারণ মানুষের ছিনতাইয়ের ঘটনা এতদিন আকছার শোনা গিয়েছে। এ বার খোদ এক পুলিশ কর্তার কয়েক লক্ষ টাকা বোঝাই ব্যাগ ছিনতাই করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। বুধবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ি শহরের পোস্ট অফিস মোড় সংলগ্ন এলাকায়। ওই পুলিশ কর্তা, বাঁকুড়ার ডিএসপি (সদর) অম্লান ঘোষ শহরের নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা। খবর পেয়ে পুলিশ শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের হদিস মেলেনি। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আশা করছি, দুষ্কৃতীরা খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন তাঁর শ্বশুরমশাই শহরের ৪ নম্বর ঘুমটি এলাকার বাসিন্দা নীরেন্দ্রনাথ ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানা সংলগ্ন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা তোলেন অম্লানবাবু। একটি কাপড়ের ব্যাগে টাকা রাখেন ওই পুলিশ কর্তা। ব্যাগে আগে থেকে আরও ৪ লক্ষ টাকা ছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মোট সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বার হয়ে তাঁরা দু’জন রিকশায় ওঠেন। সেখান থেকে জলপাইগুড়ি হেডপোস্ট অফিসের দিকে রওনা দেন।
নীরেন্দ্রনাথবাবু জানান, টাকার ব্যাগ অম্লানবাবুর হাতে ছিল। নীরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কিছুদূর এগোতে দুই মোটরবাইক আরোহী আচমকা পাশে দাঁড়িয়ে ওই ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটে। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগে কালো বাইক হাওয়ার মত ছুটিয়ে দু’জন পালিয়ে যায়।” বিকেলে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অম্লানবাবু। তবে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এক বছর আগে ঠিক ওই এলাকায় একই ভাবে কেপমারির ঘটনা ঘটে। ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে বাইরে বার হতেই ময়নাগুড়ি শহরে পরপর টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে। তবে এক পুলিশ কর্তার টাকার ব্যাগ দুষ্কৃতীরা ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেওয়ার পরে পুলিশি নজরদারি নিয়ে শহরের বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন।
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে ওই ঘটনার পরে মানুষ পুলিশের উপরে আর ভরসা রাখতে পারছে না। নজরদারি বলে কোথাও কিছু নেই।” জেলা পুলিশ সুপার অগ্রবাল বলেন, “শহরে নজরদারি নেই এটা ঠিক নয়। তবে ওই ধরণের ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” |