সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে হাতিয়ার হল ভলিবল। বুধবার ভারত-বাংলাদেশ দু’পক্ষের সেনা জওয়ানদের ওই খেলাকে ঘিরে শীতের সকালেই মেতে উঠল সীমান্ত এলাকা। শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম সেমেট্রি সীমান্ত চৌকিতে ওই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ১৮ নম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দলকে। খেলা শুরুর কিছু আগে দলের সদস্যদের নিয়ে পৌঁছন তাদের সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্তারা। তাঁরা পৌঁছতেই বাজনা বাজিয়ে, ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান ভারতের এই সীমান্ত চৌকির আধিকারিক, জওয়ানেরা। উপস্থিত ছিলেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৬৬ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কম্যান্ডেন্ট কে গণেশ। এ পারের সীমান্তবর্তী গ্রাম বরবিল্লা, হাপতিয়াগছ, কালুগছের মতো বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দারাও ভিড় করেন ম্যাচ দেখতে। পর পর দু’টি ম্যাচ জিতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ৬৬ নম্বর ব্যাটেলিয়ানকে হারায় বাংলাদেশ দল। খেলার শেষে উভয়পক্ষের জওয়ানেরা করমর্দন, কোলাকুলি, কুশল বিনিময়ে মেতে ওঠেন সিরাজুল ইসলাম, আসরাফুল আলম, হরকেশ কুমার, সুশান্ত ওঁরাওদের মতো উভয় দলের খেলোয়াররা। চলে পুরস্কার প্রদান এবং উপহার বিলির পর্ব। |
চলছে খেলা। —নিজস্ব চিত্র। |
সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৬৬ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কম্যান্ডেন্ট কে গণেশ বলেন, “ভাল খেলেছে বাংলাদেশ দল। সকলেই এ দিনের খেলা উপভোগ করলেন। উভয়পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে এ ধরণের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও গ্রহণ করা হবে।” ম্যাচ জিততে পেরে খুশি ১৮ নম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল হক। তিনি বলেন, “খুব ভাল লাগছে। আমরা জিতেছি ঠিক। সেটাই বড় ব্যাপার নয়। এটা বিএসএফ দলও জিততে পারত। তারাও ভাল খেলেছেন। তাই খেলাটি উপভোগ্য হয়েছে। আমরা এখানে এসে খেলে গেলাম। আমাদের সীমান্ত চৌকিতে-ও এ ধরনের ম্যাচের আয়োজন করা হবে। এখানকার জওয়ানরা গিয়ে খেলবেন। এর মধ্য দিয়ে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে।”
খেলার ফলাফল যাই হোক এ ধরনের প্রীতি ম্যাচের আয়োজন দু’পক্ষের জওয়ানদের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তুলতে, সীমান্ত সমস্যা মেটাতে পারস্পরিক সহযোগিতা লাভের ক্ষেত্রে সাহায্য করবে বলে মনে করছে দু-পক্ষই। বিশেষ করে এলাকায় গরু পাচার, চোরাচালানের মতো বিভিন্ন সীমান্ত সমস্যা সমাধানে ভারত, বাংলাদেশ দু’দিকের সেনা জওয়ানদের মধ্য সমন্বয় গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছে উভয় সীমান্ত বাহিনী। বিএসএফ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমান্তের বেশ কিছু এলাকায় এখনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। খেলা দেখতে আসা গ্রামবাসীদের মধ্যে নজির আলম, রফিক আলম, কেরামত আলিরা জানান, কাঁটাতারের বেড়া না থাকার সেই সব এলাকা দিয়ে গরু পাচার, চোরাচালানের মতো ঘটনা ঘটছে। দিনকয়েক আগেও হপতিয়াগছ এলাকা থেকে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া বেশ কিছু গরু উদ্ধার করেছেন সীমান্ত বাহিনীর জওয়ানরা। এলাকায় পাচারকারী এবং দুষ্কৃতীদের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে গ্রামবাসীদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপর জোর দিতে চান সীমান্তরক্ষী বাহিনী। |