জোট-রাস্তা খুলে রাখলেন, কটাক্ষ বাম-কংগ্রেসের
লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূলের সমর্থন পাওয়ার রাস্তা নরেন্দ্র মোদী খুলে রাখলেন বলে বাম ও কংগ্রেস কটাক্ষ করল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল সম্পর্কে ওরা (বিজেপি) নরম। ভোটের পরে যাতে তৃণমূলের সমর্থন পেতে অসুবিধা না হয়।” প্রায় একই সুর বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু গলাতেও। তাঁর কথায়, “ভোটের পরে মোদী তৃণমূলের জন্য রাস্তা খোলা রাখতে চাইছেন। তাই তিনি তৃণমূলের কোনও সমালোচনা করেননি।” রাজ্যে ২৬% সংখ্যালঘু ভোট। গত বিধানসভা ভোটেও যার সিংহভাগ পেয়েছিল তৃণমূল। স্বাভাবিক ভাবেই সিপিএম ও কংগ্রেসের বক্তব্য তৃণমূল শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। যদিও মোদী বা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহের কথাকে প্রকাশ্যে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূল নেতা মুকুল রায় কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম বলেন, “মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী বলা নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। যে দল সংখ্যাগিষ্ঠতা থেকে অনেক দূরে রয়েছে, তাদের আবার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী কী?” বিজেপির ব্রিগেড সমাবেশকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ববি। তিনি বলেন, “যাদের গাঁধী মূর্তির পাদদেশে সভা করে লোক আনার ক্ষমতা নেই তারা আবার ব্রিগেডে সভা করছে!” ভোটের পরে বিজেপি-তৃণমূল জোটের সম্ভাবনা নিয়ে বাম-কংগ্রেসের সমালোচনায় জল ঢালতে তৃণমূল নেতৃত্ব মোদীর সভার সমালোচনা করেছেন বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন।
ববি যাই বলুন, এ দিনের ব্রিগেড সমাবেশের ভিড় তৃণমূলের একাংশকে চিন্তায় ফেলেছে। দলের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, “আমরা ভাবতাম বিজেপির রানি রাসমণি অ্যাভেনিউতে সভা করার মতো সাংগঠনিক শক্তি নেই। কিন্তু ব্রিগেডে সভা করে বিজেপি বুঝিয়েছে, তাদের শক্তি আছে।” এই নেতা আরও বলেন, “ভোটে বিজেপির প্রার্থীরা জিতবে কিনা জানিনা, তবে কয়েকটি আসনে আমাদের ভোট কেটে সমস্যায় ফেলতে পারে।” হাওড়া লোকসভার উপ-নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের সব আসনে তাঁরা প্রার্থী দেবেন বলে এ দিন মোদী থেকে আরম্ভ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ সকলেই জানিয়েছেন। বিজেপির ভোট বাড়লে যে তৃণমূলেরই বিপদ দলের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই তা মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির ব্রিগেড সমাবেশকে খাটো করে দেখানো এবং মোদী-রাজনাথের কথাকে বিশেষ গুরুত্ব না দেওয়াই আপাতত তৃণমূলের কৌশল।
মোদী যেমন মমতা-সরকারের সমালোচনা না করে, বিজেপিকে ভোট দিলে তিন গুণ লাভের (রাজ্যে তৃণমূল সরকারের জন্য উন্নয়ন, কেন্দ্রে মোদীর জন্য উন্নয়ন এবং প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি) কথা শুনিয়েছেন, তেমনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মত কেন্দ্রের ঋণ মকুব ও তিন বছরের জন্য সুদ-স্থগিতকে সমর্থন করছেন রাজনাথ। এতেই কংগ্রেস ও সিপিএম সরাসরি বলার সুযোগ পেয়ে গিয়েছে, আগামী দিনে তৃণমূলের জন্য দরজা খোলা রাখছে বিজেপি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ববি সন্ধ্যায় বলেন, “আমাদের কারও সার্টিফিকেট দেওয়ার দরকার নেই। বাংলা নিজের দাবিতে লড়াই করবে। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার আত্মসম্মান ফিরিয়ে আনা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই দিল্লি চলোর ডাক দিয়েছেন।” ববি এ কথা বললেও কংগ্রেস কিন্তু কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। প্রদীপবাবু বলেন, “মমতাকে সন্তুষ্ট করতেই রাজনাথ এ ভাবে ঋণ মকুব সমর্থন করেছেন।” আর বিমানবাবুর মন্তব্য, “বিজেপি-তৃণমূলের গাঁটছড়া বাঁধা হয়ে গিয়েছে। সে কারণেই রাজ্যের নারী নির্যাতন নিয়ে মোদী একটা কথাও বলেননি।”
মোদী অবশ্য রাজ্যের ‘পরিবর্তন’ নিয়ে কটাক্ষ করে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, মেয়েদের স্কুলে শৌচাগার ইত্যাদি প্রসঙ্গে সমালোচনা করেছেন। জবাবে ববি বলেন, “একজন মুখ্যমন্ত্রী যখন অন্য রাজ্যে সফরে যান তখন সেই রাজ্য সম্পর্কে হোমওয়ার্ক করে আসেন। মোদী জানেন না, পশ্চিমবঙ্গের বাড়ি থেকে স্কুল-কলেজ, শিল্প-কারখানা কোথাও বিদ্যুতের অভাব নেই।” আড়াই বছরে অধিকাংশ স্কুলেই শৌচাগার রয়েছে বলেও ববির দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.