বারোমাসে তেরো পার্বণের শহর নবদ্বীপে ক্রমশ জমজমাট হয়ে উঠছে সরস্বতী পুজো। পাড়ায়, স্কুলে বা গৃহশিক্ষকের বাড়িতে নিছক পাটকাঠি, সুতো, থার্মোকল আর ফুলের টব দিয়ে শখের মণ্ডপসজ্জা নয়। রীতিমত লক্ষাধিক টাকার বাজেটের বেশ কয়েকটি সরস্বতী পুজো এবার শুধুমাত্র প্রাচীন মায়াপুরেই হয়েছে। হয়েছে থিমের পুজোও।
এ ছাড়া বাকি শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরস্বতী পুজো ঘিরে মাতামাতি এবার যথেষ্ট বেশি। যদিও মধ্য বয়সীরা বলছেন, কয়েক দশক আগে নবদ্বীপের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক ধুমধাম করেই সরস্বতী পুজো হত। মাঝে সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নবদ্বীপে আবার নতুন করে ফিরে আসছে সরস্বতী পুজোর ঐতিহ্য।
রীতিমতো মন্ত্রী, পুরপ্রধানকে দিয়ে একদিন আগে ফিতে কেটে প্রতিমা উদ্বোধন এবং তারপর টানা তিন দিন ধরে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অর্কেস্ট্রা সব মিলিয়ে জমজমাট অনুষ্ঠান। যোগনাথতলা বারোয়ারির এ বার বাজেট ছিল দেড় লক্ষ টাকা। এই পূজো মণ্ডপে বাংলা ধাঁচের বিরাট প্রতিমা আনা হয়েছিল। মণ্ডপ তৈরি হয়েছে নানা ধরনের পতুল দিয়ে। এই পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফে আদিত্য সিদ্ধান্ত বলেন, “প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকেছে নানা প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান। সমাজসেবামূলক কাজও করা হয়।”
প্রাচীন মায়াপুরের ফ্রেন্ডস ইলেভেন ক্লাবের এ বার ছিল রজতজয়ন্তী। তাঁদেরও বাজেট ছিল লক্ষাধিক টাকার। থিম গ্রামবাংলা। একটা গোটা গ্রামই তুলে নিয়ে বসিয়ে দিয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। সম্পাদক সন্দীপ সাহা বলেন, “এ বার আমরা মেলারও আয়োজন করেছি। সাত দিন ধরে মেলা চলবে।” চোখে পড়ার মতো আলোকসজ্জা ছিল এখানে। কিছু দূরের জামতলা বারোয়ারি এ বার পটের দিকে নজর দিয়েছিলেন। তাদের তরফে মনোজ মজুমদার বলেন, “তিনশোর বেশি মাটির সরা দিয়ে সাজানো হয়েছে আমাদের মণ্ডপ। নদিয়ার তাহেরপুর থেকে আমরা মাটির সরা এনেছি আর শিল্পী এসেছেন ঘূর্ণি থেকে। বাজেট প্রায় লক্ষ টাকার।” সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে প্রায় দু’দিন ধরে ব্যস্ত থাকলেন নবদ্বীপের বিধায়ক মন্ত্রী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। |