|
|
|
|
পুলিশ মাইক ফেরাতেই ফের শুরু শব্দ-তাণ্ডব
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সরস্বতী পুজোর দিনভর চলেছে শব্দ-তাণ্ডব। মেদিনীপুর শহরের কলেজ স্কোয়ারের পুজো দেখতে আসা সকলেই অতিষ্ট হয়েছেন। সব জেনেও প্রথমের দিকে নীরব ছিল পুলিশ-প্রশাসনও। তবে সন্ধের পর হানা দেয় পুলিশ। তুলে নিয়ে যায় মাইক। তবে বেশিক্ষণ মাইক আটকে রাখা হয়নি। পুজোর উদ্যোক্তারা থানায় যাওয়ার পর পুলিশের সতর্কবাণী ছিল যে, নিয়ম মেনে মাইক বাজাতে হবে। উদ্যোক্তারাও পুলিশকে সেই আশ্বাস দিয়েই মাইক ফেরত নিয়ে আসেন। পুলিশের সতর্কবাণীতে যে কাজ হয়নি তার প্রমাণ মিলল বুধবার সকালে। এ দিন সকাল থেকেই ফের শুরু হয় শব্দ-দানবের অত্যাচার। ফের তল্লাশি হবে জানিয়েই দায় সেরেছে পুলিশ। কিন্তু গোটা ঘটনায় শহরবাসী বিরক্ত। তাঁদের অভিমত, এই প্রবণতা ঠেকাতে কড়া নজরদারি চালাতে হবে, আটকে রাখতে হবে মাইক।
কলেজ স্কোয়ারের সরস্বতী পুজো মেদিনীপুরবাসীর কাছে বরাবরই উৎসব। পুজো একদিনে শেষ হলেও প্রতিমা ও মডেল থাকে টানা তিনদিন। তা দেখতে ভিড় জমান প্রচুর মানুষ। তিনদিন ধরেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় হয়। শুধু মেদিনীপুর শহর নয়, শহরতলি, এমনকী খড়্গপুর থেকেও ভিড় জমান। এখানে পুজোর মডেলে উঠে আসে সাম্প্রতিক নানা প্রসঙ্গ। বিশেষ করে রাজনৈতিক বিষয়ের নানা কার্টুন মডেলে তুলে ধরা হয়। এর প্রধান কারণ, প্রতিটি পুজোর নেপথ্যে রয়েছে কোনও না কোনও ছাত্র সংগঠন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, ছাত্র পরিষদ থেকে এসএফআই, এবিভিপি, কেউই বাদ নেই। |
নিয়মের তোয়াক্কা না করে কলেজ রোডে ফের বাজছে মাইক। —নিজস্ব চিত্র। |
বিগত কয়েক বছর ধরে কলেজ স্কোয়ারের পুজোর অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে তারস্বরে মাইক বাজানোর ট্র্যাডিশন। দম ফাটা শব্দে এলাকাবাসীর প্রাণান্তকর দশা হয়। ছেড়ে দে মা পালিয়ে বাঁচি, অবস্থা দাঁড়ায় দর্শনার্থীদেরও। এর জেরেই কলেজ স্কোয়ারের বাণিবন্দনা ঘিরে শহরবাসীর উৎসাহে কিছুটা ভাটা পড়েছে। এসেছে বিরক্তি। শহরের বাসিন্দা কমল নন্দীর কথায়, “বুঝতে পারি না, এত পরিশ্রম করে, টাকা খরচ করে ওরা পুজো করে। তা মানুষকে দেখানোর জন্য, নাকি কেউ গেলে তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। না হলে এত জোরে মাইক বাজাবে কেন। ওখানে ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলেও বুকে ব্যথা হয়!”
সমালোচনার জেরে কিছু ক্লাব অবশ্য মাইক বাজানো বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু ক্লাব মাইক বাজালেও নিয়ম মানছে। আবার কেউ কেউ সানাই বাজিয়েছে। কিন্তু কয়েকটি ক্লাব এখনও শব্দ দানবকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। আর তার জেরেই ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে এলাকার বাসিন্দা থেকে শুরু করে দর্শনার্থীদের মধ্যেও। এ বার তা বন্ধে তৎপর হয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার সারাদিন মাইক বাজলেও সন্ধের পর মাইক তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আটক করা মাইক ফের দিয়ে দেওয়ার আগে সতর্ক করে দেওয়া হয় যেন নিয়ম মেনে মাইক বাজানো হয়। মঙ্গলবার রাতে শব্দসীমা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। এমনকী রাত দশটার পরে মাইক বাজানো বন্ধও হয়ে যায়। কিন্তু বুধবার সকাল থেকেই ফের প্রবল বিক্রমে শুরু হয় শব্দ-তাণ্ডব। |
|
|
|
|
|